বাংলাদেশি গাছে সবুজ হচ্ছে মরুর কাতার
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সমুদ্রপথে প্রথমবারের মতো গাছের চারা রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। ১১ জুন উপসাগরীয় আরব দেশ কাতারে জাহাজে চারাগাছের প্রথম চালানটি গেছে। আগামী ৩০ জুন কাতারে পৌঁছাবে চারাগুলো।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিজরা এন্টারপ্রাইজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শামসুল ইসলাম শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘মার্কস শিপিং লাইনের একটি জাহাজ গত ১১ জুন রপ্তানি করা চারাগুলো নিয়ে কাতারের উদ্দেশে দেশ ছেড়ে গেছে। আগামী ৩০ জুন এসব চারা কাতারে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।’ এর আগে ২০১৯ সালে কার্গো বিমানে করে কাতারে চারা পাঠান তিনি।
শামসুল ইসলাম জানান, কাতারের দোহায় অবস্থিত আল নাইমি ল্যান্ডস্ক্যাপিং নামের একটি নার্সারি এই চারাগুলো বাংলাদেশ থেকে আমদানি করছে। চালানটিতে রয়েছে আট প্রজাতির ৩ হাজার ৭৪৭টি চারা গাছ। এর মধ্যে মাল্টার ৭৯৫টি, জামরুলের ১৫২, লেবুর ৯৫০, নিমের ১ হাজার ২৮০, বটের ৪০, সফেদার ৩২০, কাঠবাদামের ১৭০ এবং বাবলার ৪০টি চারা রয়েছে।
চালানটির শিপমেন্টে নিয়োজিত ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) প্রতিষ্ঠান সেভারেল কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিজরা এন্টারপ্রাইজ ওই সব চারা দুটি ট্রাকে করে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে। এরপর সেগুলো পতেঙ্গার ইস্টার্ন লজিস্টিক ডিপোতে রাখা হয়। পরে একটি ৪০ ফুটের হিমায়িত কনটেইনারে চারাগুলো লোড করা হয়। কাস্টমস ক্লিয়ারিং শেষে গত ১১ জুন চারাগুলো নিয়ে জাহাজ রওনা দেয়।’
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এর আগে কার্গো বিমানে করে বিদেশে চারা রপ্তানি হয়েছে। তবে এবারই প্রথম বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে চারাগাছের একটি চালান কাতারে রপ্তানি হলো।’
এই উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের রোগতত্ত্ববিদ সৈয়দ মুনিরুল হক বলেন, ‘কাতারে রপ্তানি করা চারাগুলো দুই দফায় পরীক্ষা করা হয়েছে। চারাগুলো সুস্থ, মাটি মুক্ত অবস্থায় স্টেরিলাইজড কোকো পিটে শিকড় গজানো অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের শর্ত অনুযায়ী চারায় জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছে। ওই গাছ রপ্তানির জন্য একদম নিরাপদ।’
বিজরা এন্টারপ্রাইজের সিইও শামসুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৮ সালে জানতে পারি কাতারের আল নাইমি ল্যান্ডস্ক্যাপিং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গাছের চারা আমদানি করে। এর পরই ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ২০১৯ সালে আমি প্রথম রপ্তানি আদেশ পাই। প্রথমবারে দুই হাজার গাছ রপ্তানি করা হয়েছিল। তবে কার্গো বিমানে চারা রপ্তানি করে অতটা লাভ হয়নি। এরপরও রপ্তানি বন্ধ করিনি। পরে ওই প্রতিষ্ঠানকে সমুদ্রপথে চারা নেয়ার প্রস্তাব দিলে তারা সেটিতে রাজি হয়।’
নতুন নতুন পণ্য রপ্তানিতে যোগ হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। চিটাগং চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘রপ্তানিতে নতুন নতুন পণ্য যোগ হওয়া দেশের জন্য ইতিবাচক। আগে বাংলাদেশ থেকে শুধু তৈরি পোশাক রপ্তানি হতো। কিন্তু এখন বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। আশা করি, গাছের চারা রপ্তানি বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।’