ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় ১৫ আগস্ট – বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি
রিজাউল করিম সাতক্ষীরা: রক্তাক্ত ও অশ্রুঝরা শোকাবহ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও ইতিহাসের মহামানব, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬-তম শাহাদত বার্ষিকীতে সেদিনের সেই কালরাতে জাতির পিতার পরিবারের সদস্যবৃন্দসহ যারা ঘাতকের নির্মম বুলেটে প্রাণ হারিয়েছিলেন তাদের সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য নৌ-কমান্ডো ০০০১ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।
বিশ্ব মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণিত, বর্বর ও নৃশংসতম হত্যাকান্ডের মধ্যে একটি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা। বাঙালী জাতি শোকাতুর হৃদয়ে শ্রদ্ধাভরে জাতির জনককে স্মরণ করছে। কাঁদো বাঙালি কাঁদো এই ইতিহাস ভুলে যাবো আজ আমি কি তেমন সন্তান ? যখন আমার জনকের নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শোক হোক শক্তি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ই আগস্ট কালরাতের সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
জাতির পিতা সহ সকল শহীদকে মহান আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদৌস মন্জুর করুন। আমীন। শোকের মাস আগস্টের ১৫ তারিখে দুনিয়ার নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষ ও বাঙালী জাতির শ্রেষ্ঠবন্ধু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আমরা হারিয়েছি-যার জন্ম না হলে এই দেশ স্বাধীন হতো না। আমরা পরাধীন থাকতাম। বছর ঘুরে ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় শোক দিবস আবারও আমাদের জাতীয় জীবনে ফিরে এসেছে।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু সন্তান শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এই ঘৃণ্যতম হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে যুবনেতা ও সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি, তার সহধর্মিণী আরজু মনি ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া।
সেদিন ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকে ’৯৬-এর আগে পর্যন্ত স্বৈরশাসকেরা দেশে সর্বব্যাপী ভয়ের সংস্কৃতি বলবৎ করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করেছিল। সেসব অন্যায় ইতিহাস সত্যের স্রোতে ভেসে গেছে। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে ‘আওয়ামী লীগ’, ‘বঙ্গবন্ধু’ ও ‘বাংলাদেশ’ যে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত ও সমার্থক, আজ তা সকলের কাছে সুস্পষ্ট। পরবর্তীকালে শেখ হাসিনার উপর বারবার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট এই শোকের মাসেই গ্রেনেড হামলায় হত্যার চেষ্টা করা হয় জাতির জনকের কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী
শেখ হাসিনাকে।
অলৌকিকভাবে সেদিন তিনি বেঁচে গেলেও এ ঘটনায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী, আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক
সম্পাদিকা আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। বঙ্গবন্ধু রচিত দু’টি গ্রন্থ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ’কারাগারের রোজনামচা’ জাতীয় ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দলিল। অমূল্য এই গ্রন্থদ্বয় প্রকাশ করায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আমরা কৃতজ্ঞ। ইতিহাসের অনেক অজানা কথা এই বই দু’টো থেকে আমরা জানতে পেরেছি।
শোকাবহ এই মাসটি জাতীয় শোক দিবস রূপে দেশ-বিদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় ভাবগম্ভীর পরিবেশে প্রতিবছর পালিত হতো। কিন্তু এবার ‘করোনাভাইরাস’ মহামারি আকারে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশও আক্রান্ত। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় নিরাপদ স্বাস্থ্য বিধি মেনে শোকের মাস উপলক্ষে গৃহীত রাষ্ট্রীয় ও দলীয় অনুষ্ঠানাদি সীমিতকরণ করা হয়েছে। আশা করি মহান আল্লাহর রহমতে সফলভাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশাবলী অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন এবং দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠতে সম্ভব হবে ইনশাল্লাহ।