উন্নয়নের পতাকা উড়ছে সিলেটে

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার বাস্তবে রূপ নিচ্ছে সুরমা কুশিয়ারা মনু খোয়াই বিধৌত হযরত শাহজালাল (র) ও ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতি বিজড়িত দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির জেলা সিলেট। ছোট-বড় টিলা পাহাড় নদী আর সবুজেঘেরা এই অঞ্চলে রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডার। পাথর বালু, তেল গ্যাসসহ পর্যটনশিল্প দেশের অর্থনেতিক উন্নয়নের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। এই অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ লোক বসবাস করছেন ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। প্রতিনিয়ত তাদের প্রেরিত রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে চলেছে। তাইতো প্রবাসীদের প্রতি সরকারের রয়েছে গভীর আন্তরিকতা।

প্রবাসীদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়েও কাজ করছে সরকার। ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ সিলেট এসে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিনি সিলেটে অবস্থান করেন। সেদিন আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে জনসভাস্থলে প্রায় অর্ধশতাধিক উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। পরবর্তী সময়ে একে একে বাস্তবরূপ লাভ করছে সেই প্রকল্পগুলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখনই সিলেট সফর করেছেন তখনই সিলেটবাসী তার কাছ থেকে উন্নয়নের ঘোষণা পেয়েছে। অতীতের কোন সরকার প্রধান এভাবে উন্নয়নের অবাধ ঘোষণা দেননি। অতীতের সরকার আমলের উন্নয়নের চিত্র হাতেগুনে নেয়ার মতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট অঞ্চলকে ঢেলে সাজানোর কাজ করছেন। গ্রাম শহর সকল স্থানের উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। যা গুনে দেখতে সময় লাগবে। প্রাচীন আমলের নড়বড়ে ব্রিজ। দফায় দফায় কাজ হলেও রাস্তার অবস্থা ছিল সেই তিমিরে। বর্তমান সরকার সিলেট সুনামগঞ্জ ৬৭ কিলোমিটার সড়কে ছোট বড় প্রায় ২৬টি ব্রিজ নির্মাণসহ সড়ক সংস্কার কাজ সম্পন্ন করার ফলে ৭৫/৮০ মিনিটে সিলেট থেকে সুনামগঞ্জ পৌঁছানো যায়। যেখানে পূর্বে সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা।

শাহজালাল সার কারখানা, সিলেট জেলা কারাগার, সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ওসমানী হাসপাতালের নতুন ভবন, সিলেট মেরিন একাডেমি, শেখ রাসেল টেক্সটাইল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক, সিলেটে উন্নয়নের পতাকা হয়ে উড়ছে। সিলেট ঢাকা ৪ লেন সড়ক, সিলেট তামাবিল ৪ লেন সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে সিলেটের সঙ্গে ভারতের সাতটি অঞ্চলের যোগাযোগের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হবে। দ্রুত গতিতে চলছে বেতারের সিলেট কেন্দ্রের আধুনিকায়ন প্রকল্পের কাজ। শতাধিক বছর পর সিলেট সিটি কর্পোরেশন বর্ধিত আকারে নতুন রূপ পাচ্ছে। আগস্ট ’২১-এ বর্ধিত সিটির গেজেট প্রকাশ হয়েছে।

ওসমানী বিমানবন্দর ॥ প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি সরাসরি বিদেশ থেকে নিজের জেলায় এসে পৌঁছানো। এতে করে সময় ও ভোগান্তি কম হবে। প্রবাসীদের এই দাবি পূরণে ইতোমধ্যে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে লন্ডন, দুবাই, জেদ্দা সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পপুলার এয়ার সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী ফরিজ উদ্দিন জনকণ্ঠকে জানান, বর্তমান সরকারের আমলে বিদেশ যাতায়াতকারী প্রবাসীদের সুবিধা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

সরাসরি বিদেশ থেকে নিজের জেলায় আসতে পারায় প্রবাসীদের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে শুধু মাত্র লন্ডন-সিলেট সপ্তাহে একদিন ছাড়া অন্যান্য দেশের সঙ্গে সিলেট থেকে সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। ফরিজ উদ্দিন বলেন, ওসমানী বিমান বন্দরের বর্তমান উন্নয়ন কাজ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রবাসীদের প্রতি আন্তরিকতার উপহার। বিশ্বের সকল রুটে ফ্লাইট পরিচালনা ও বিদেশী বিমানের যাত্রা বিরতিসহ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাতে হাতে নেয়া হয়েছে বিশাল কর্ম পরিকল্পনা। বিমানবন্দর সম্প্রসারণে দুই হাজার ৩০৯ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে বিমানবন্দরের আয়তন তিনগুণ বাড়বে। বেজিং আরবান কনস্ট্রাকশন গ্রুপ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের কাজ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এই বিমানবন্দর সিলেটবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর একটা উপহার।

জানা গেছে, চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হবে ৩৪ হাজার ৯১৯ বর্গমিটারের আধুনিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন। এই টার্মিনালে আটটি বিমান একসঙ্গে যাত্রী ওঠানামা করতে পারবে। এর বাইরে ছয় হাজার ৮৯২ বর্গমিটারের কার্গো ভবন, দুই হাজার ৪১৫ বর্গমিটারের ফায়ার স্টেশন, দুই হাজার ৭৭২ বর্গমিটারের কন্ট্রোল টাওয়ার, এক হাজার ৩৯৫ বর্গমিটারের প্রশাসনিক ভবন, ৬০৬ বর্গমিটারের মেইনটেন্যান্স ভবন, দুই হাজার ৫২৪ বর্গমিটারের ইউটিলিটি ভবন এবং ৯ হাজার ২৯৯ বর্গমিটারের মধ্যে আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া বিদ্যমান সুবিধাসহ আরও সুপরিসর ছয়টি উড়োজাহাজ পার্কিং উপযোগী ৭১ হাজার ৭৪৩ বর্গমিটার এপ্রোন নির্মাণ, এপ্রোনের সংযোগকারী ট্যাক্সিওয়ে, বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রসহ ফুয়েল ডিস্ট্রিবিউশন এ্যান্ড হাইড্রেন্ট সিস্টেমসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো ও স্থাপনা নির্মিত হবে। বিমান সূত্র জানায়, বর্তমানে বিদ্যমান প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের যে আয়তন আছে তার তিনগুণেরও বেশি আয়তন নিয়ে তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ নতুন টার্মিনাল। বিদ্যমান টার্মিনালে বছরে মোট ছয় লাখ যাত্রীকে সেবা দেয়া যায়। নতুন টার্মিনালের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে (২০৪০ সাল পর্যন্ত) বছরে ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন ॥ সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়নে আলো ঝলকানি দিচ্ছে। সিলেট হতে তামাবিল পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য ৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ প্রকল্পে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) ২ হাজার ৯৭০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ঋণ দেবে। চলতি বছর কাজ শুরু হয়ে ২০২৫ সালে জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পৃথক এসএমভিটি লেনসহ চারলেনে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে ভারত, ভুটান, নেপাল, মিয়ানমার এবং চীনের ক্রস বর্ডার সংযোগ স্থাপনসহ উপআঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে।

শতাধিক বছরের পুরনো সিলেট রেলওয়ের ৫টি স্টেশন আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রেলওয়ের নিজস্ব অর্থায়নে এ সংক্রান্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ কোটি টাকা। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী জানিয়েছেন, আধুনিক স্টেশনে যে সকল সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা তার সবই এসব স্টেশনে থাকবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর বিনা টিকেটের যাত্রীও ঠেকানো যাবে। বর্তমানে প্রকল্পটি দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। চলতি অর্থবছরেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মোঃ খলিলুর রহমান জানান, সিলেট বিভাগের ৫টি রেলওয়ে স্টেশনকে আধুনিকায়ন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রেলওয়ে স্টেশনগুলোর চিত্র অনেকটা পাল্টে যাবে। যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে রেলওয়ে স্টেশনে বসতে পারবেন। প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে রেলওয়ের কর্তৃপক্ষ কাজ করছেন।

স্থলবন্দর ॥ পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হচ্ছে সিলেটের আরও দুটি শুল্ক স্টেশন। এরমধ্যে সিলেটের বিয়ানীবাজারের শেওলা শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। আর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ শুল্কস্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীতের জন্য জমি অধিগ্রহণ কাজ শুরু হয়েছে। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ শুরু হলেও শেওলা শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয় আরও প্রায় ৬ বছর আগে। ২০১৫ সালের ৩০ জুন। তবে এতদিন ঘোষণার মধ্যেই আটকে ছিল স্থলবন্দর। শুল্ক স্টেশনের অবকাঠামো, লোকবল নিয়েই চলছিল শেওলার কার্যক্রম। সেবাও ছিল শুল্ক স্টেশনের। ঘোষণার প্রায় ৬ বছর পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি শেওলাকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপ দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। শেওলা ও ভোলাগঞ্জের আগে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিলে স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু হয়। তামাবিল শুল্ক স্টেশনকে ২০০১ সালে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় ১৬ বছর পর ২০১৭ সালে তামাবিলে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়।

সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ॥ সিলেট সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটবাসীর দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাúনের ঘোষণা দেন। কাল আর ক্ষেপণ হয়নি। যে ঘোষণা সেই কাজ। দেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান এবং সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর জাতীয় সংসদে অনুমোদন হয় সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১৮। একই বছরের ২০ নবেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী। উপাচার্য নিয়োগের পর নগরীর চৌহাট্টায় স্থাপিত অস্থায়ী কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। মাত্র দুই বছরে সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যান্য মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের লক্ষ্যে সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার গোয়ালগাঁও মৌজার ৫০.২২ একর এবং হাজরাই মৌজার ৩০.০৯ একরসহ সর্বমোট ৮০.৩১ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, ইতোমধ্যে সিলেট বিভাগের সকল মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ ও নার্সিং কলেজসমূহের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিদর্শন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ২টি সরকারী মেডিক্যাল কলেজ, ৪টি বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ, ১টি সরকারী নার্সিং কলেজ, ৪টি বেসরকারী নার্সিং কলেজ এবং ১টি বেসরকারী ডেন্টাল কলেজসহ মোট ১২টি স্বাস্থ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিক অধিভুক্তি প্রদান করেছে। এসব কলেজে নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এই বছরের ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রথম পরীক্ষা।

জেলা কারাগার ॥ ব্রিটিশ আমলের সিলেট জেলা কারাগার। যেমন ছিল জরাজীর্ণ, তেমনি ছিল স্থানাভাব। অধিক কয়েদি, হাজতিকে গাদাগাদি করে থাকতে হতো কারাগারে। এই সরকারের উন্নয়নের অরেকটি অন্যতম চিত্র হচ্ছে নব নির্মিত সিলেট জেলা কারাগার। সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাট এলাকায় নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ ও স্থানান্তরের প্রকল্প একনেকে পাস হয়। ২০১০ সালে। এরপর বাদাঘাট এলাকায় চেঙ্গেরখাল নদীর তীরে ৩০ একর জমির ওপর এই কারাগার নির্মাণের ঘোষণা দেয়া হয়। জানা যায়, নতুন কারাগারের নির্মাণকাজ শুরুর পর ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় দেড় শ’ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত। পরে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। তবু কাজ শেষ না হওয়ায় ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সময় বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ে। দেড় শ’ কোটি টাকার প্রকল্প ২২৭ কোটিতে গিয়ে ঠেকে।

সিটি কর্পোরেশন ॥ সিলেট সিটি কর্পোরেশনের চেহারায় এবার নতুন রূপ পাবে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) সীমানা বর্ধিতকরণ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (এলজিআরডি)-এর স্থানীয় সরকার বিভাগের (সিটি কর্পোরেশন-১) এর উপসচিব নূমেরী জামান স্বাক্ষরিত গেজেটটি ৩১ আগস্ট প্রকাশিত হয়। এর আগে সিসিকের বর্ধিত এলাকাকে ওয়ার্ডে বিভক্তকরণ ও বিন্যাস সম্পন্ন করে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় সিলেট সফর করে যাওয়া বিশেষ টিম। মন্ত্রণালয়ের পাসের পর তা গেজেট আকারে প্রকাশের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। চলতি বছরের ২৬ জুলাই সিসিক-এর বর্ধিতকরণ প্রস্তাব প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে অনুমোদিত হওয়ার পর অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় বর্ধিতকরণের বিষয়টি। বাকি ছিল কেবল বর্ধিত এলাকার বিভক্তিকরণ ও ওয়ার্ড বিন্যাস। সিসিক সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে সেই বিষয়টি সম্পন্ন করা হয়। এ লক্ষ্যে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি টিম সিলেট সফর করে।

ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়টি জটিল হওয়ায় স্থানীয় দফতরকে সাথে নিয়ে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে তা পর্যবেক্ষণ করে যায় মন্ত্রণালয় থেকে আগত টিম। পরে তারা ওয়ার্ডে বিন্যাস করে পরে তা গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। জানা গেছে, সিসিকের বর্তমান আয়তন ২৬.৫০ বর্গ কিমি। সীমানা সম্প্রসারণের জন্য প্রস্তাবিত এলাকার আয়তন ৩৩ বর্গ কিমি। সম্প্রসারণের পর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মোট আয়তন হয়েছে ৫৯.৫০ বর্গ কিমি। এতে সিসিকের সাথে সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমার ৭টি ইউনিয়নের ২৮টি মৌজা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

সিলেট জেলা হাসপাতাল ॥ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অন্তর্ভুক্ত নগরের আবু সিনা ছাত্রাবাস স্থলে নির্ধারিত ২৫০ শয্যার জেলা আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। প্রসঙ্গত : ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি সিলেট নগরীর আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচনের ১টি ২৫০ শয্যার সিলেট জেলা হাসপাতাল। এই হাসপাতাল নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুত গতিতে।

মেরিন একাডেমি ॥ সিলেটে যাত্রা শুরু করেছে মেরিন একাডেমি। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ একাডেমির উদ্বোধন করেন। সিলেট শহরতলীর চেঙ্গেরখাল নদীর তীরবর্তী এলাকায় প্রায় ১শ’ ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত সিলেট মেরিন একাডেমি। ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার দেশের বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও পাবনায় ৪টি মেরিন একাডেমি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের প্রচেষ্টায় তার নির্বাচনী এলাকা সিলেট সদর উপজেলার হাটখলা ইউনিয়নের বাদাঘাট এলাকার চেঙ্গেরখাল নদীর পারে সিলেটের প্রথম জলপথের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সিলেট মেরিন একাডেমি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। পরে ২০১২ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠানটির জন্য ১০ একর ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। আর ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সিলেট মেরিন একাডেমির কাজের আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট মেরিন একাডেমির অবকাঠামো নির্মাণকাজ পুরোদমে শুরু হয় ২০১৭ সালে।

বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক ॥ উন্নয়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক। সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জে প্রায় ১৬৩ একর জায়গায় তৈরি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক-সিলেট। হাওড় এলাকায় প্রায় ২০ ফুট গভীর অংশ ভরাট করেই তৈরি করা হয় এই পার্ক। কর্তৃপক্ষ জানালেন, এমনভাবে ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে, বড় বড় বন্যা হলেও প্রকল্পে পানি উঠবে না। এরইমধ্যে প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ব্যয় হচ্ছে মোট ৩৩৬ কোটি টাকা। এখানেই হবে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার। এর জন্য ৭ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রশাসনিক ভবনের পূর্ব দিকে যে খোলা জায়গায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও পাঁচ তারকা হোটেল। ৮টি প্রতিষ্ঠানকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

এরমধ্যে রয়েছে প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সনি, আরএফল, ব্যাবিলন ইত্যাদি। তিনি আশাবাদী এই প্রকল্পে ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। প্রকল্প এলাকায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নির্মাণ করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি অঙ্গন। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল থাকবে। শীঘ্রই এসবের নির্মাণকাজ শেষ হবে। জানা গেল, ৩২ একর জমি বরাদ্দ নিয়েছে সনি। এখানে প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে প্রতিষ্ঠানটি। ২০ একর জায়গা নিয়েছে আরএফল। প্রতিষ্ঠানটি সেখানে তাদের ভিশন ব্র্যান্ডের ৬৬টি আইটেম তৈরি করবে। দুটি প্রতিষ্ঠানেরই লক্ষ্য হলো এখানে নির্মিত পণ্যগুলো ভারতের ৭টি রাজ্যে (সেভেন সিস্টার্স) রফতানি করা।

ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি (এনজিএফএফ) নামে ফেঞ্চুগঞ্জের ওই পুরাতন সারকারখানা স্থাপন করেছিল জাপানের কোবে স্টিল লিমিটেড। ২০ বছরের ইকোনমিক লাইফ নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও পুরাতন ওই সারকারখানা চলেছিল প্রায় অর্ধশত বছর। ১৯৬১ সালের ১৩ ডিসেম্বর এনজিএফএফ যাত্রা শুরু করে। জরাজীর্ণ হয়ে গেলেও ওই কারখানা ২০১২-১৩ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে। শাহজালাল সার কারখানার ইকোনমিক লাইফও ২০ বছর। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণে এটিকেও দীর্ঘদিন চালু রাখা সম্ভব বলে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞমহলের অভিমত।

জানা যায়, শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি প্রকল্পটি চীন বাস্তবায়ন করলেও এতে আমেরিকা ও নেদারল্যান্ডসের প্রযুক্তি থাকায় এই সার কারখানা অনেক টেকসই হবে। শাহজালাল সার কারখানার প্রধান প্ল্যান্ট ইউরিয়া ও এ্যামোনিয়ার প্রসেস লাইসেন্সর হচ্ছে এ্যামোনিয়ায় আমেরিকার বিখ্যাত কোম্পানি কিলোগ ব্রাউন এ্যান্ড রোটস (কেবিআর) ইউরিয়ায় নেদারল্যান্ডসের খ্যাতিমান কোম্পানি স্টেমিকার্বন বি. ভি।

সিলেট বেতার কেন্দ্রের আধুনিকায়ন ॥ সিলেট বেতার কেন্দ্রের আধুনিকায়নের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে তথ্য মন্ত্রণালয়। ৫৬ কোটি ২২ লাখ টাকার প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল। তবে নানা জটিলতায় প্রকল্পটি ওই সময়ের মধ্যে শেষ করতে না পারায় এ বছরের জুন পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে সংশোধনী প্রস্তাবে। একইসঙ্গে ৫৫ দশমিক ২৬ শতাংশ, তথা ৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা বাড়তি ব্যয়ের প্রস্তাবও রাখা হয়েছে সংশোধনীতে। তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬১ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা কেন্দ্রের অনুষ্ঠান রিলে করার মধ্য দিয়ে সিলেট কেন্দ্রের সম্প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ১৯৬৭ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে সিলেট কেন্দ্র থেকে নিজস্ব অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হয়। ১৯৭০ সাল থেকে পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক বেতার কেন্দ্র হিসেবে কার্যক্রম শুরু হয় সিলেটে। ১৯৭৮ সালের ২ নবেম্বর ২০ কিলোওয়াট ক্ষমতার নতুন ৯৬৩ কিলোহার্জ এএম ট্রান্সমিটার স্থাপন করে সম্প্রচার ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করে কেন্দ্রটি। পরবর্তী সময়ে ১৯৮২ সালে স্টুডিও প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর স্থায়ীভাবে মীরের ময়দানের বেতার ভবন থেকে এই কেন্দ্রের সম্প্রচার ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

২০০২ সালে ২০ কিলোওয়াট ক্ষমতার ট্রান্সমিটার সংস্থাপন করা হয় এই কেন্দ্রে। ২০০৭ সাল থেকে এক কিলোওয়াট ক্ষমতার ১০৫ দশমিক শূন্য মেগাহার্জ তরঙ্গেও এফএম ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সব কেন্দ্রের এফএম ট্রান্সমিটার স্থাপন করা হয় এবং এর মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হচ্ছে। ২০১৩ সালের জুন মাসে একটি ৫ কিলোওয়াট ক্ষমতার ৯০ মেগাহার্জ তরঙ্গেও এফএম ট্রান্সমিটার স্থাপন করা হয় এবং এর মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হয়। তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সিলেট বেতার কেন্দ্রকে আধুনিক ও ডিজিটাল করার লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে আকর্ষণীয় ও উচ্চ কারিগরি মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার নিশ্চিত করা যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৪ লেন ॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত হলে এই অঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের অনুমোদন দেন। ঢাকা-সিলেট চারলেন প্রকল্পে ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ঋণ দেবে এডিবি। মোট ব্যয় ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বাকি তিন হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা সরকারী খাত থেকে মেটানো হবে। এটি বাস্তবায়ন করা হবে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে। আলাদা সার্ভিস লেনসহ সড়ক নির্মাণে অতিরিক্ত ৯৮৬ দশমিক ৪৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। এ জন্য ব্যয় হবে চার হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণে কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ইউটিলিটিও স্থানান্তর করা হবে, নির্মাণ করা হবে ৩২১টি আরসিসি কালভার্ট। কালভার্টগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় এক হাজার ৩৮১ মিটার। ছোট-বড় ৭০টি ব্রিজসহ থাকবে পাঁচটি রেলওয়ে ওভারপাস।

ঢাকা-সিলেট মূল সড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য আলাদা সার্ভিস লেন নির্মিত হবে। বাঁক সরলীকরণসহ অধিক মাত্রার ট্রাফিক বিবেচনায় এনে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগ নিশ্চিত করা হবে। শিল্প ও বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে এশিয়া হাইওয়ে নেটওয়ার্ক, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত দেশের জোট ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল এ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) করিডর, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) করিডরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে চারলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত। চারলেনবিশিষ্ট মহাসড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্ত করাসহ প্রকল্পের আওতায় ৬৬টি সেতু, ৩০৫টি কালভার্ট, ৭টি ফ্লাইওভার/ওভারপাস, ৬টি রেলওয়ে ওভারপাস থাকবে। প্রকল্প শুরুর এলাকা কাঁচপুর থেকে সিলেটের মোট দূরত্ব ২২৩ দশমিক ১২৮ কিমি। এর মধ্যে ১১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত। এর উন্নয়ন এলওসি’র আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং ২ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ভৈরব ব্রিজ বাদ দেয়া হয়েছে। ফলে প্রস্তাবিত সড়কের মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ২০৯ দশমিক ৩২৮ কিলোমিটার।

মেয়রের বক্তব্য ॥ সিলেট নগরীর উন্নয়ন প্রসঙ্গে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেটকে একটি আধুনিক স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর করতে হলে নাগরিক সেবার মান গোটা নগরে সমানুপাতিক হারে পৌঁছাতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি। সিসিক আয়তনে দিগুণের চেয়ে বেশি বেড়েছে। বর্ধিত নগরে নিরাপদ খাবার পানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া উন্নয়নে খেলার মাঠ নির্মাণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নাগরিক সেবাসমূহ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় বর্ধিত কলেবরের সিসিকে আধ্যাত্মিক ও পর্যটন নগরের মর্যাদায় উন্নীত করতে পারব আমরা। ইতোমধ্যেই সিসিককে তারবিহীন নগর করার পাইলট প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সরকারের সহযোগিতা পেলে অচিরেই সিলেট নগর পুরোপুরি তারবিহীন নগরে পরিণত হবে। আমি প্রত্যাশা করি সরকার সিসিকের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেবে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.