পিকেসিএসবিডি ক্রিকেট ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ রাজশাহী বিভাগীয় বাছাইয়ে উত্তীর্ণ চাটমোহরের ৫ তরুণ
পাবনা প্রতিনিধি : সারাদেশব্যাপী চলমান পিকেসিএসবিডি ক্রিকেট ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ বাছাই কার্যক্রমে রাজশাহী বিভাগীয় লেভেলের বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে পাবনার চাটমোহরের পাঁচ তরুণ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে একজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও বাকি চারজন ডান হাতি পেস বোলার হিসেবে উত্তীর্ণ হয়। জেলা ও বিভাগীয় ট্রায়াল শেষে এখন অপেক্ষা জাতীয় পর্যায়ের বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার।
বিভাগীয় লেভেলের বাছাইয়ের উত্তীর্ণরা হলেন, চাটমোহর পৌর সদরের চৌধুরীপাড়া মহল্লার লিমন হাসান, উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের সেনগ্রামের সজীব সিংহ, ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের সাব্বির হোসেন, হোগলবাড়িয়া গ্রামের সাদ্দাম হোসেন এবং মুলগ্রাম ইউনিনের নেউতিগাছা গ্রামের তাওহিদুর রহমান তন্ময়। এদের মধ্যে লিমন ডান হাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে এবং বাকিরা ডান হাতি পেসার হিসেবে উত্তীর্ণ হয়। পাঁচজনের চারজনই চাটমোহর ক্রিকেট একাডেমীর উদীয়মান ক্রিকেটার।
আলাপকালে তারা জানান, প্রথমে পিকেসিএসবিডি ওয়েসবাইটে আবেদন করে ফোন নাম্বার, ঠিকানা, বয়স, খেলার ধরন বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়েছিল। পরে সেখান থেকে গ্রæপ নির্ধারণ এবং ডান কিংবা বাম হাত উল্লেখ করে জেলা, বিভাগ নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এরপর গত ১ ডিসেম্বর পাবনা শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনুদ্দিন স্টেডিয়ামে জেলা বাছাইয়ে ট্রায়াল এবং গত ২১ ডিসেম্বর রাজশাহী মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে বিভাগীয় লেভেলের বাছাইয়ে ট্রায়াল দিয়ে উত্তীর্ণ হন তারা। শেষে ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে সবার মোবাইলে উত্তীর্ণ হওয়ার অভিনন্দন মেসেজ আসে।
চৌধুরীপাড়া মহল্লার লিমন হাসান চাটমোহর এনায়েতুল্লাহ সিনিয়র ফাযিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র। বাবা রমজান আলী ব্যবসায়ী। মা সালমা খাতুন গৃহিণী। দুই ভাইয়ের মধ্যে লিমন ছোট। ডান হাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সেনগ্রামের সজিব সিংহ চাটমোহর সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে অনার্সে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন খুলনার আজম খান সরকারি কলেজে। বাবা প্রদীপ সিংহ অসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। মা শিপ্রা রানী গৃহিণী। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট সজীব। ডান হাতি পেস বোলার হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
কাটাখালী গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান সাব্বির হোসেন চাটমোহর সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কলেজে ভর্তির চেষ্টা করছেন। বাবা মহরম সরকার কৃষক। মা তাছলিমা খাতুন গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট সাব্বির। বাবার কৃষিকাজে সহযোগিতা করেন তিনি। ডান হাতি পেসার হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
হোগলবাড়িয়া গ্রামের সাদ্দাম হোসেন আটলংকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। বাবা শাহেদ বিশ^াস কৃষক। মা সামিরন খাতুন গৃহিণী। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সবার ছোট সাদ্দাম। ডান হাতি বোলিং পেসার হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
নেউতিগাছা গ্রামের তাওহিদুর রহমান তন্ময় চিকনাই উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। বাবা নবুয়ত হোসেন এনজিওতে চাকুরী করেন। মা তাসলিমা খাতুন গৃহিণী। দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় তন্ময়। ডান হাতি পেস বোলার হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এই পাঁচজনের মধ্যে লিমন, সজিব, সাব্বির ও তন্ময় চাটমোহর ক্রিকেট একাডেমীর সাথে যুক্ত সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার। তারা চাটমোহর ক্রিকেট একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক ও প্রশিক্ষক ফজলুল হক কালুর কাছে ক্রিকেট প্র্যাকটিস করছে অনেকদিন ধরে। তন্ময় বলেন, তার ক্রিকেট শেখা চাটমোহর ক্রিকেট একাডেমী থেকে। সাব্বির হোসেন বলেন, চাটমোহর ক্রিকেট একাডেমীর পাশাপাশি আমার বাবার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তিনি সবসময় আমার ক্রিকেট খেলাকে সাপোর্ট করে যাচ্ছেন। সাদ্দাম হোসেন বলেন, নিজের এলাকায় নিজের মতো করে চেষ্টা করে এই সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি।
চাটমোহর ক্রিকেট একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক কালু বলেন, এই খবরটি নি:সন্দেহে আনন্দের। আমি এ স্বপ্নটি সবসময় দেখি আমাদের চাটমোহর ক্রিকেট একাডেমীর ক্রিকেটাররা এক সময় দেশের নামকরা দলের হয়ে খেলবেন। কারণ তাদের মধ্যে সেই মনোবল ও দক্ষতা আছে। যারা বিভাগীয় বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের জন্য শুভ কামনা। আশা করি তারা জাতীয় পর্যায়েও উত্তীর্ণ হয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখবে।