আজ দিনাজপুর হিলি ট্রেন ট্র্যাজেডি দিবস
মোঃ আসাদুল্লাহ আল গালিব, দিনাজপুর প্রতিনিধি : আজ ১৩ জানুয়ারি দিনাজপুর হিলি ট্রেন ট্র্যাজেডি দিবস। দিনাজপুর জেলার হিলিতে এক ভয়ংকর ট্রেন ট্রাজেডির কালো রাতের নাম ১৩ জানুয়ারী। আজ থেকে ২৬ বছর আগে ১৯৯৫ সালের ১৩ জানুয়ারি দিনাজপুর হিলি রেলস্টেশনে দেশের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। হিলিতে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে মারা যান ২৭ জন। দুর্ঘটনার ২৬ বছরেও আহত ও নিহতের পরিবার পায়নি ক্ষতিপূরণ। আজও আলোর মুখ দেখেনি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন।
বাংলাহিলি রেলওয়ে একতা ক্লাবের তৎকালীণ সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বুলুসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও হিলি স্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালের ১৩ জানুয়ারি শুক্রবার রাত সোয়া ৯টায় দিনাজপুর হিলি রেল স্টেশনে ক্রসিংয়ের উদ্দেশ্যে স্টেশনের ১ নম্বর লাইনে দাঁড়িয়েছিল গোয়ালন্দ থেকে পার্বতীপুরগামী ৫১১ নম্বর লোকাল ট্রেন। তবে সেসময়ের দায়িত্বরত স্টেশন মাস্টার ও পয়েন্টসম্যানের অবহেলার কারণে একই লাইনে ঢুকে পড়ে সৈয়দপুর থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী ৭৪৮ নম্বর আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
এতে দুইটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিকট শব্দে ভারি হয়ে উঠে আকাশ-বাতাস। দুর্ঘটনায় লোকাল ট্রেনটির ইঞ্জিনসহ ৩টি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় রেলওয়ে একতা ক্লাবের সদস্যসহ স্থানীয়রা দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের উদ্ধার করেন এবং হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনায় ২টি ট্রেনের অর্ধশতাধিক যাত্রী নিহত হয়। আহত হয় ২ শতাধিক যাত্রী। নিহতদের অনেকেরি দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে থাকে।ঐ এলাকার স্থানীয় মানুষ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সহায়তায় লাশ উদ্ধারসহ আহতদের দ্রুত উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময়ে সরকারি ভাবে নিহতের সংখ্যা ২৭ জন ঘোষণা করা হয় এবং আহতের সংখ্যা বলা হয় শতাধিক।
দুর্ঘটনার পরের দিন ১৪ জানুয়ারি দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন নিহত ও আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কিন্তু দুর্ঘটনার ২৬ বছরেও আহত ও নিহতদের অনেক পরিবার সেই ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি। সেই সঙ্গে আজও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি। এদিকে প্রতিবারের মতো এবারও স্থানীয় রেলওয়ে একতা ক্লাবের উদ্যোগে কলো ব্যাচ ধারণ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।