এক্সপ্রেসওয়ে নয়, পঞ্চবটি-মুক্তারপুর দোতলা সড়ক হবে
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি থেকে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের প্রস্তাব হলেও তা পরিবর্তিত হয়ে দোতলা সড়ক হিসেবে প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। নাম পরিবর্তন হলেও কাজটি ভালোভাবে করার জন্য ব্যয় ১৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ‘পঞ্চবটি হতে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ প্রকল্পটি ওঠে। প্রায় ২ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে।
তবে সভায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রকল্পের নাম পরিবর্তন ও ব্যয় বাড়িয়ে তা অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম। প্রধানমন্ত্রীক উদ্ধৃত করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হওয়ার জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, তা এই সড়কে নেই।
“প্রধানমন্ত্রী বলছেন, আসলে এটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হবে না। এটি সড়কই হবে। এটার নাম হওয়া উচিত দুতলা রাস্তা। নিচে গাড়ি চলাচল করবে, ওপরেও চলবে।” তাই এই প্রকল্পটির নাম সংশোধন করে ‘রাস্তা প্রশস্তকরণ দুতলা সড়ক নির্মাণ’ হচ্ছে বলে জানান শামসুল।প্রকল্পটি মানসম্পন্ন করতে নকশার উপর জোর দিয়ে পরামর্শক ব্যয় ১০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ কোটি টাকায় উন্নীত করার নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী দেন।
শামসুল আলম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এত বড় একটি প্রকল্প, অনেক যান চলাচল হবে, এটা তো সুন্দর করে নির্মাণ করতে হবে। ভালো নকশা করতে হবে। না হলে সেতু শক্তিশালী হবে না।” পদ্মা সেতুমুখী গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজ শেষ করার জন্য ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় নেওয়া হচ্ছে। এত সময় লাগার কারণ প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানায়, সড়কটি অনেক বাড়িঘর ও রাস্তার ভেতর দিয়ে গেছে বলে সেগুলো ঠিক করতে একটু সময় বেশি লাগছে।
প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মো. মামুন আল রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার সড়কের উপর তৈরি হবে এই দ্বিতল সড়ক। তিনি বলেন, “মুন্সীগঞ্জ ও আশপাশে এখন প্রচুর শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে। তাই ওই শিল্পকে কেন্দ্র করে গাড়ি চলাচল ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে। ওই চাপ সামাল দেওয়ার জন্য এই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
“আর প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণাঞ্চলের যানবাহনগুলোকে রাজধানীতে প্রবেশ করতে হবে না। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলমুখী যানবাহন তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচল করবে।” ড. শামসুল আলম বলেন, বৈঠকে এই প্রকল্পটিসহ মোট চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চার প্রকল্পের সমন্বিত ব্যয় প্রায় ৩ হাজার ৯০৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ৫২৪ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৭৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
অন্য প্রকল্পগুলো ‘কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প। এর ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৪১ কোটি ২০ লাখ টাকা। ‘চরখালী–তুষখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ (জেড-৮৭০১) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প। এতে ব্যয় বেড়েছে ৪৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ‘ময়মনসিংহ কর্পোরেশনের সড়ক উন্নয়ন ও ড্রেনেজ নেটওয়ার্কসহ নাগরিক সেবা উন্নতকরণ’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা।