৫ জনের পরিবার ৪জনই প্রতিবন্ধী,২৫শ’ টাকায় চলে মাস
সাইফুর নিশাদ, স্টাফ রিপোর্টার : ৫ জনের একটি পরিবার।তার এক নারী, ৩ শিশুসহ ৪ জনই প্রতিবন্ধী। ২৫শ’ টাকার মাসিক আয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে পরিবারটির। রোগের চিকিৎসা এখন স্বপ্ন বিলাস তাদের।
নরসিংদী জেলার মনোহরদীর চরমান্দালিয়া গ্রামের বন্দুকশী পাড়ার প্রবাসী আইনুদ্দীনের ৫ সদস্যের পরিবার।তার ৪সন্তানের ৩ সন্তানই শারিরীক প্রতিবন্ধী। সেই সাথে স্ত্রীও। সামান্য ভিটে বাড়ীটুকু সম্বল তার। আইনুদ্দীন নিজে সামান্য বেতনে মালদ্বীপে কাজ করেন।তার পাঠানো মাসিক ২৫শ’ টাকা সম্বল করে শ্বাশুড়ি সহ ৬ জনের পরিবারের দিন চলে মাস কাটে। মানে কাটাতে হয় তাদের। ফলে খেয়ে না খেয়ে দিন যায় পরিবারটির।
আইনুদ্দীনের স্ত্রী শাফিয়া জানান, তার বড়ো মেয়ে জান্নাতুল (১৩) জন্ম থেকেই শারিরীক প্রতিবন্ধী।লিকলিকে পা জোড়া নিয়ে ভীষন কষ্টে হাঁটাচলা করে সে। পিঠ বাঁকা কুঁজোও সে।বীরগাঁও বালিকা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী জান্নাত।শারীরিক প্রতিবন্ধীতা সত্বেও অনেক কষ্টে পড়াশোনা ঠিক আছে তার।পরিবারটির আরেক সদস্য তৈয়ব (৯)। তার অবস্থাও তথৈবচ। পা বাঁকাত্যাড়া বলে কষ্টেসৃষ্টে বেঁকেচুরে হাঁটাচলা করে সে।
ছোট ছেলে আবদুল্লাহ (২)।তারও জন্ম থেকেই বাঁকা পা।তাদের মা শাফিয়া জানান, মনোহরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আংশিক চিকিৎসা হয়েছে ছেলের। তাতে আংশিক সুস্থ তৈয়ব।তাদের বাড়ী থেকে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। সেখানে যাওয়া আসার পথ খরচ জুটানো হয় না বলে যাওয়া হয়নি আর। ফলে পূর্ন সুস্থতা মিলছে না ছেলের। আইনুদ্দীনের শ্বাশুড়ি আম্বিয়া জানান, নিজ ভিটে বাড়ী বিক্রি করে মেয়ে জামাইকে বিদেশ পাঠিয়েছেন। আলাপকালে সেখানে উপস্থিত তার শ্বাশুড়ী জানান,মেয়ে জামাইয়ের ভিটেয় একটি ঘরও করে দিয়েছেন তিনি। ভিটে হারিয়ে মেয়ের বাড়ীতে তাদের সংসারের স্থায়ী সদস্য এখন তিনি। ফলে তাকে নিয়ে ৬ জনের পরিবার।তাদের এখন দিন চলে আইনুদ্দীনের পাঠানো মাসিক ২৫শ’ টাকাকে সম্বল করে। পরিবারটির ৪ শারীরিক প্রতিবন্ধী সদস্যের মধ্যে একমাত্র জান্নাত সরকারী প্রতিবন্ধী ভাতা পান। তার মা শাফিয়া জানান, তিনি নিজেও প্রতিবন্ধীর কাতারে। দু’ পায়েই মস্ত সমস্যা তার। চলাফেরা করতে হয় খুব কষ্টেসৃষ্টে। সব মিলিয়ে হত দরিদ্র এ প্রতিবন্ধী পরিবারটির নিদারুন দুরবস্থায় কাটছে দিন। বাদ বাকী প্রতিবন্ধীদের ভাতার ব্যবস্থা হলেও কিছুটা স্বস্তি মিলতো পরিবারটির।এ ব্যাপারে চরমান্দালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদিরের সাথে যোগাযোগ হয়। তিনি জানান,
বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করবেন এবং তাদের দুরবস্থা নিরসনে পরিপূর্ন সচেষ্ট হবেন তিনি।