১১৪ কোটি টাকা খরচ করে মংলা বন্দরের বর্জ্য অপসারণ করা হবে

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ১১৪ কোটি টাকা খরচ করে মংলা বন্দরের বর্জ্য অপসারণ করা হবে। এই অপসারণের কাজটি পেতে যাচ্ছে ফিনল্যান্ডভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান ‘ল্যামর’। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, মংলা বন্দরে সমুদ্রগামী জাহাজের কারণে এখানে অনেক বর্জ্যরে সৃষ্টি হয়। এই বর্জ্যরে কারণে অনেক সময় সুন্দরবনের পরিবেশও নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। এই অবস্থায় মংলা বন্দরে আগত সমুদ্রগামী জাহাজ থেকে বর্জ্য দূষণ থেকে সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষার্থে উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এ জন্য ‘মংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ‘ডিজাইন, সাপ্লাই অ্যান্ড ইন্সটলেশন অব পোর্ট রিসিপশন ফ্যাসিলিটি’ ক্রয় কাজ বাস্তবায়ন করবে। এজন্য ব্যয় হবে ১১৪ কোটি ৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।

সূত্র জানায়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়নাধীন ‘মংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পটি ৪০১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে ২০১৯ সালের একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছিল ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন ২০২২।

এ বিষয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, মংলা বন্দরের চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে এবং বাংলাদেশ দ্য ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রিভেনশন অব পলিউশন ফ্রম শিপসের (এমএআরপিওএল) স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে বন্দর চ্যানেলে জাহাজ থেকে নিঃসৃত বিভিন্ন বর্জ্যরে মধ্যে বিশেষভাবে মারপল ৭৩/৭৮ রেগুলেশনস অ্যানেক্স ১.৪ ও ৫ দ্বারা চিহ্নিত বর্জ্য সমুদ্রে নিক্ষেপ রোধ করার প্রয়োজন। এই জন্য সামুদ্রিক পরিবেশকে দূষণ থেকে রক্ষা করাসহ মংলা বন্দরে আগত জাহাজ থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে তা আন্তর্জাতিক পরিবেশ মানদণ্ড অনুযায়ী পরিশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যথোপযুক্ত মানের তরল ও কঠিন পদার্থে রূপান্তর করা হবে। এর তা যথাস্থানে অবমুক্ত করার জন্য একটি আধুনিক পোর্ট রিসিপশন ফ্যাসিলিটি (পিআরএফ) অত্যন্ত জরুরি বিবেচনায় ডিজাইন, সাপ্লাই অ্যান্ড ইন্সটলেশন অব পোর্ট রিসিপশন ফ্যাসিলিটি সংগ্রহ করা হবে।

সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ডিপিপিতে ক্রয় কাজটি উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্র পদ্ধতিতে সম্পন্ন করার কথা ছিল। পরে পিপিআর ২০০৮-এর বিধি ৮৪ক(২) অনুযায়ী হোপের অনুমোদনক্রমে এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। ক্রয় পরিকল্পনায় জি ৪, লট ১ (আইটেম-২) প্যাকেজের বিপরীতে ১২১ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় সংস্থান রয়েছে।

সূত্র জানায়, ক্রয় কাজটি সম্পন্ন করার জন্য দরপত্র বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে দেশী-বিদেশী মোট তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দলিল ক্রয় করে। দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত তারিখে মোট একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দরপত্র উন্মুক্তকরণ ও মূল্যায়নের লক্ষ্যে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। দরপত্রে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ফিনল্যান্ডের ল্যামর করপোরেশন এবি করপোরেট হেডকোয়ার্টার্স । দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি মংলা বন্দরের জন্য একটি আধুনিক পোর্ট রিসিপশন ফ্যাসিলিটির (পিআরএফ) প্রয়োজনীয়তা থাকায় কমিটি বিস্তারিত পর্যালোচনা শেষে টেন্ডারের সব শর্ত পূরণ করায় ল্যামর করপোরেশন এবি কে রেসপন্সিভ হিসেবে ঘোষণা করে।

কারিগরিভাবে রেসপন্সিভ হিসেবে ল্যামর করপোরেশন এবির প্রস্তাব পরে হোপ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রস্তাব খোলা ও পরে পরীক্ষা করা হয়। প্রকল্পের দাফতরিক প্রাক্কলন (সিডি ও ভ্যাটসহ) ১২১ কোটি ৬২ লাখ ৪৪ হাজার ৯৬১ টাকা। প্রস্তাবিত চুক্তিমূল্য (সিডি ও ভ্যাট সহ) ১১৪ কোটি ৮ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯ টাকা, যা দাফতরিক প্রাক্কলিত মূল্য অপেক্ষা ৬.১৯ শতাংশ কম।
ক্রয় প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.