জঙ্গিবাদ নিয়ে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : রমজান, ঈদ এবং বাংলা নববর্ষ উদযাপনকে কেন্দ্র করে যেকোনও ধরনের জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি, সংগ্রহ করা হচ্ছে তথ্য। যদিও জঙ্গিদের হামলা চালানোর সক্ষমতা বা হামলা চালানোর পরিকল্পনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও তথ্য নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। অতীতের বিভিন্ন হামলা ঘটনার বিষয়গুলো আমলে নিয়ে যেকোনও জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ২০১৬ সালে ঈদের আগ মুহূর্তে গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। সে সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টায় হামলাকারীদের দমাতে সক্ষম হয়। তাই উৎসবকে কেন্দ্র করে কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী কোনও ধরনের অপতৎপরতা সৃষ্টির সুযোগ যেন না পায় সে ব্যাপারে মাঠে রয়েছে গোয়েন্দারা। এছাড়া রমজানের শেষ দিকে কেনাকাটার জন্য মানুষের ভিড় পরিলক্ষিত হবে বিভিন্ন সড়কে এবং মার্কেটগুলোতে। অন্যদিকে এবার রমজানে উদযাপন হবে পহেলা নববর্ষ। এসব বিষয় মাথায় রেখেও যেকোনও ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা মাঠে রয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় ৫৫ জন তরুণ এরই মধ্যে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তাদের মধ্যে দশ জনকে এরই মধ্যে র্যাব আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। বাকিরা এখনও পাহাড়ে এবং পাহাড় ছেড়ে বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এছাড়া জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ, দাওয়াতি শাখার প্রধান মাইমুন, অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান রাকিব এখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে। যেহেতু পাহাড়ে অনেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং তারা বয়সে অনেক তরুণ, তাদের মোটিভেটেড করে কোথাও হামলা চালানোর চেষ্টা করতে পারে জঙ্গি সংগঠনের নেতারা। সেসব বিষয় প্রতিরোধে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে জঙ্গিদের হামলা চালানোর সে ধরনের কোনও সক্ষমতা নেই। আর আগে জানান দিয়ে কোনও জঙ্গি সংগঠন কোথাও হামলা চালায় না। আমাদের পর্যবেক্ষণে আমরা দেখতে পেয়েছি কোনও জঙ্গি সংগঠনের কোথাও হামলা চালানোর পরিকল্পনা থাকলে সংগঠনের ঊর্ধ্বতনও এক দুই জন বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকে।’
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নতুন জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষিত তরুণরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাদের হামলা চালানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে এসব বিষয়ে কঠোর মনিটরিংয়ে রেখেছি। যদিও এসব বিষয়ে কোনও গোয়েন্দা তথ্য নেই, তারপরও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। কোথাও কোনও ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হলে সম্মিলিতভাবে তা প্রতিরোধ করতে র্যাবের প্রতিটি সদস্য নিয়োজিত রয়েছে।’