নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে সরকারি উদ্যোগের প্রভাবসহ চার কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, বিশ্ব বাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে আসা, দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় এবং খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকারি উদ্যোগের প্রভাবে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত থাকবে। এ ছাড়া বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি দাঁড়াবে বলে আশা করছি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কৃষি খাতের উৎপাদন অব্যাহত রাখার স্বার্থে সুলভ মূল্যে সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও গ্যাসের জন্য ভর্তুকি বাবদ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি সুদের হার অর্থাৎ রেপো সুদের হার কয়েক দফা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া চালের মূল্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহার, রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ডিজেলের মূল্য কমাতে ডিজেলের আগাম কর অব্যাহতি ও শুল্ক ১০ শতাংশ হতে ৫ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও স্বল্প আয়ের জনগণের ওপর মূল্যস্ফীতির প্রভাব প্রশমনের জন্য সরকার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) এবং এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড বিতরণের মতো কার্যক্রমসমূহ পরিচালনা করছে।
উল্লেখ্য, বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সূচককে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরে তা সংশোধন করে ৬ শতাংশ করা হয়। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকট এবং আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়ার কারণে সেই লক্ষ্যও পূরণ করা যায়নি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ১০ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশে, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
আগে ৪২২টি পণ্যের মূল্য ধরে মূল্যস্ফীতি হিসাব করত পরিসংখ্যান ব্যুরো। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের পরামর্শ মেনে মে মাস থেকে আরও প্রায় ৩০০ পণ্যকে ‘ঝুড়িতে’ যুক্ত করা হয়। গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি (পয়েন্ট টু পয়েন্ট) এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে উঠে গিয়েছিল। এরপর তা কিছুটা কমে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ৮ শতাংশের ঘরে থাকলেও মার্চে ফের ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশে উঠে যায়। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের ওপর এর প্রভাব প্রশমনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।