কুশলের সঙ্গে উন্নয়ন প্রচারের নির্দেশনা
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আগামী বৃহস্পতিবারের ঈদুল আজহাই সম্ভবত মুসলমানদের সর্বশেষ বড় ধর্মীয় উৎসব। তাই এ উৎসব ঘিরে ভোটের রাজনীতি করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে না কোনো দলই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশ কোরবানি ঈদে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অসহায় মানুষের পাশে নানাভাবে যুক্ত থাকবেন। কেউ যেন ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হন, দল ও প্রশাসনের প্রতি সে নির্দেশনাও আছে সরকারপ্রধানের। এ ছাড়া ঈদে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন সরকারের উন্নয়ন সবার সামনে তুলে ধরার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে নেতাদের।
অন্যদিকে আগামী নির্বাচনে যারা মনোনয়নপ্রত্যাশী, তারা প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনা পালনের মধ্য দিয়ে ঈদ ঘিরে রাজনীতিটা সেরে ফেলতে চাইছেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আমাদের সময়কে বলেন, ‘কষ্টে থাকা মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ সব বিত্তবানের প্রতি আমাদের এ আহ্বান থাকবে।’
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘কিছু দল ঈদ ঘিরেও হুমকি দিচ্ছে। নির্বিঘেœ মানুষ যেন ঈদ উদযাপন করতে না পারে, সে লক্ষ্যেই তারা এগোচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে তাদের এসব হুমকি এবং বক্তব্য প্রমাণ করে, তারা ভোটের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে ষড়যন্ত্রের জালে মানুষকে আবদ্ধ করতে চায়। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে মানুষ যেন সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ঈদ উদযাপন করতে পারে, সে বিষয়ে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’
সিলেট বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন জানান, ‘শুধু ঈদ নয়, যে কোনো উৎসব কিংবা দুর্যোগের সময় আওয়ামী লীগের একটাই নির্দেশনাÑ অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে থাকা। এ ঈদেও ভিন্ন কিছু নয়।’ তিনি জানান, ঈদের দিনটি তিনি নেত্রকোনা-৫ আসনের মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে কাটাতে চান।
চট্টগ্রাম বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘আসন্ন ঈদুল আজহায় নির্বাচনের আমেজ যুক্ত হবে, এটা স্বাভাবিক। সংসদ সদস্যরা এবং মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ঈদে এলাকায় গণসংযোগ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।’
বিএনপির সরকাবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে আল মাহমুদ স্বপন আরও বলেন, ‘ঈদের পর আন্দোলনের হুমকি পুরাতন হুঙ্কার। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ বিচলিত নয়। আন্দোলন মোকাবিলা করার সক্ষমতা সরকার ও দলের রয়েছে। আমাদের মুখ্য কাজ হবে, জনগণের দোরগোড়ায় গিয়ে বিশ্ব মন্দা ও ষড়যন্ত্রের মাঝে দেশ বাঁচাতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা।’
রংপুর বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী জানান, ২৫ বছর ধরে তার নিজ এলাকা চাঁদপুর-৩ আসনের মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গে তিনি মিশে আছেন। তিনি এলাকার মানুষকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করছেন। এবারও এ সহযোগিতা থাকবে।
ময়মনসিংহ বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে সবাই যেন ঈদ-আনন্দে অংশ নিতে পারেন, এই নির্দেশনা দলের নেতাকর্মীদের ওেদয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় (মৌলভীবাজার-২) পরিবার, স্বজন ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে ঈদ উদযাপন করবেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ঈদের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন। এ তালিকায় দলের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্থানীয় নেতারাও আছেন।
জাতীয় নেতা শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর নাতি প্রয়াত মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে শেহেরিন সেলিম রিপন (এমবিই) তার নিজ এলাকা (সিরাজগঞ্জ-১) ঈদের সমাবেশকে কাজে লাগাবেন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার কর্মী-সমর্থক ও দরিদ্র মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। একই সঙ্গে সরকারের উন্নয়ন প্রচার করবেন।
যুবলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার তুহিন আহাম্মদ খান নেত্রকোনা-৫ আসন এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। ঈদপরবর্তী পুনর্মিলনীতে মতবিনিময়ের পাশাপাশি ঘটা করে সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার জানান দেবেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা খলিলুর রহমান ইতোমধ্যে তার নিজ এলাকায় (বরগুনা-১) চলে গেছেন। তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা মনিরুজ্জামান জানান, তিনি তার নিজ এলাকায় (ঝালকাঠি-১) দরিদ্রদের মাঝে ইতোমধ্যে লুঙ্গি, টি-শার্ট ও নগদ অর্থ বিতরণ করেছেন। ঈদের দিন শ্রমজীবীদের মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করবেন তিনি।
কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা এইচএম মাসুদ দুলাল তার নিজ এলাকায় (নারায়ণগঞ্জ-৩) ঈদ উদযাপন করবেন। নিজ এলাকায় (ভোলা-৩) ঈদ করবেন সাবেক ছাত্রনেতা ইঞ্জিনিয়ার নোমান হাওলাদারও।