ইউরোপ শ্রমবাজারে হাতছানি
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে তিনগুণ বেতন পাচ্ছে বৈধ কর্মীরা পালিয়ে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে দক্ষতার মান বৃদ্ধি জরুরি মধ্যপ্রাচ্যের বিকল্প হিসেবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রফতানির দুয়ার খুলছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অনিশ্চয়াতার মাঝেও ইউরোপের প্রায় বিশটি দেশে নতুনভাবে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ শুরু হয়েছে। ইউরোপের শ্রমবাজারে বইতে শুরু করেছে সুবাতাস। ইউরোপের অন্যতম দেশ ইতালিতে জোরেশোরে বাংলাদেশি কর্মী যাওয়া শুরু হয়েছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ইতালিতে ১৩ হাজার ৩৬৬জন বাংলাদেশি কর্মী কর্মসংস্থান লাভ করেছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতেও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ শুরু হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে কয়েকগুন বেশি বেতন ভাতা পাচ্ছেন ইউরোপে কর্মরত প্রবাসীরা। বৈধ কর্মস্থল থেকে পালিয়ে ইউরোপের অন্য দেশে গমনের চেষ্টাকালে গ্রেফতারের ঘটনায় ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে আলোচিত এ শ্রমবাজারটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে পারলে ইউরোপের দেশগুলোতে প্রচুর কর্মী নিয়োগের সুযোগ আসছে। পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও মলদোবা। এ দেশগুলোতে নির্মাণ, জাহাজশিল্প, কৃষি খাত, শিল্প কারখানা, পোশাক তৈরি শিল্প, কেয়ার গিভিং ও রেস্তোরাঁ শিল্পে বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের দুয়ার খুলেছে। বিএমইটির নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য নিশ্চিত করেছে। বৈশ্বিক শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মীর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এডিবি দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বিশেষ গরুত্ব দিচ্ছে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের জন্য ৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রতি ডলার ১০৯ দশমিক ৩১ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ সরকার ও সংস্থাটির মধ্যে চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক বিভাগের সচিব শরিফা খান এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সংস্থাটির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর জিয়াংবাউ নিং চুক্তিতে সই করেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততায় ২০২৪-২০৪১ মেয়াদে স্কিল ফর ইন্ডাস্ট্রি কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রাম শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো উৎপাদন খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং শিল্প খাতে বর্ধিত কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করা।
অর্থ বিভাগ এ কর্মসূচির তহবিল ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সোয়া কোটি বাংলাদেশি নারী পুরুষ কর্মী কঠোর পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছেন। সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে কমেছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। গেল মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ পথে ও ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। দেশের প্রবাসী আয়ের এ অংক গত ছয় মাসে সর্বনিম্ন। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ১৫৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকিং চ্যানেলের চেয়ে খোলা বাজারে যখন ডলারের দামের ব্যবধান বেশে হয় তখন হুন্ডি বেড়ে যায়। আর যখন হুন্ডির চাহিদা বাড়ে তখন রেমিট্যান্স কমে যায়। গত মাসে ব্যাংকের চেয়ে খোলা বাজারে ডলারের দাম ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা বেশি ছিল। তাই বেশি লাভের আশায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, সদ্যবিদায়ী আগস্টে মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে এসেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। এ অংক আগের বছরের আগস্টের তুলনায় ৪৩ কোটি ৭৪ লাখ বা ২১ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম। গত বছরের আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।
বিএমইটির সূত্র মতে, ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সাল নাগাদ ১৬ হাজার ৪০৯ বাংলাদেশি কর্মীকে ভিসা দিয়েছে রোমানিয়া। বাংলাদেশ থেকে দ্রুত কর্মী নিতে ঢাকায় অস্থায়ী কনস্যুলেটও খুলেছি দেশটি। পরবর্তীতে অনাকাঙ্খিত ঘটনার দরুণ তাৎক্ষণিক ভাবে ঢাকা থেকে অস্থায়ী কনস্যুলেটটি প্রত্যাহার করে নেয়। এখন দিল্লী থেকে বহু কাঠগড়া পুড়িয়ে রোমানিয়ার ওয়ার্ক ভিসা সংগ্রহ করতে হয়। রোমানিয়া থেকে বৈধ ওয়ার্ক ভিসার বাংলাদেশি কর্মীরা মাঝে মধ্যেই উচ্চাভিলাসী জীবন যাপনের স্বপ্ন দেখে দেশটি সীমান্ত পথে পালিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টাকালে গ্রেফতার হচ্ছে। এতে ইউরোপের শ্রমবাজার বার বার ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। রোমানিয়া থেকে পালিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার ঘটনা দ্রুত কমিয়ে আনার বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
এদিকে, পশ্চিম রোমানিয়ার আরাদ কাউন্টি থেকে ১৬ জন বাংলাদেশি অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির সীমান্ত পুলিশ। অভিবাসীরা অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে হাঙ্গেরিতে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সম্প্রতি রোমানিয়া সীমান্ত পুলিশ এসব তথ্য জানিয়েছে। পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মধ্যরাতে আরাদ কাউন্টির নাদলাক বর্ডার ক্রসিং পয়েন্টে একটি ভ্যানে লুকিয়ে থাকা ১৬ বাংলাদেশিকে খুঁজে পেয়েছে সীমান্ত পুলিশ।
মধ্যরাতে নাদলাক সীমান্ত পয়েন্টে একজন রোমানীয় নাগরিক গাড়ি নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিতে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আসেন। তিনি রোমানিয়াতে নিবন্ধিত একটি ভ্যান চালাচ্ছিলেন। রোমানিয়া-ইতালি রুটে কার্ডবোর্ডের বাক্সের পণ্য পরিবহণ করছিলেন বলে উপস্থাপিত নথিতে উল্লেখ করেন তিনি। কিন্তু তার অতীত রেকর্ড বেশ ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় পুলিশ সীমান্ত পারাপারের অনুমতি না দিয়ে গাড়ির পণ্য তল্লাশি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এক পর্যায়ে সীমান্ত পুলিশের সদস্যরা গাড়ির ভেতর কার্ডবোর্ডের বাক্সে লুকিয়ে রাখা ১৬ জন বাংলাদেশি অভিবাসীদের দেখতে পায়।
অভিবাসীদের আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সীমান্ত পুলিশ সেক্টরের সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পর পুলিশ জানায়, বাংলাদেশি অভিবাসীরা ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সী। তারা সবাই বৈধ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে রোমানিয়ায় এসেছিলেন। এ ছাড়া বেআইনিভাবে সীমান্ত পাড়ি দিতে চেষ্টা করা বাংলাদেশিদের প্রতারণার অভিযোগে আইনি তদন্ত খোলা হয়েছে। সাধারণত এমন অপরাধের দায়ে অভিবাসীদের রোমানিয়া থেকে বহিষ্কার ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এর আগে রোমানিয়া জেনারেল ইনস্পেক্টরেট ফর ইমিগ্রেশনের তথ্য ও জনসংযোগ কার্যালয় জানিয়েছিল, চলতি বছরের জুলাই মাসে রোমানিয়ার অভিবাসন পুলিশ প্রায় ২০০ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে তাদের নিজ দেশে জোরপূর্বক ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের মধ্যে ৫১ জন বাংলাদেশিও রয়েছেন।এতে ইউরোপের শ্রমবাজারে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বিকল্প হিসেবে ইউরোপের শ্রমবাজার ধরতে কাজ করছে পররাষ্ট্র ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। ইউরোপের ২০টি দেশ এখন আমাদের জন্য নতুন শ্রমবাজারের হাতছানি বলে জানিয়েছেন বিএমইটির উপ সচিব ইমিগ্রেশনের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হাই। দেশগুলোতে এরই মধ্যে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জার্মানির সঙ্গে জিটুজি চুক্তি স্বাক্ষরের চেষ্টা চলছে। উপ সচিব আবদুল হাই ইনকিলাবকে বলেন, গত ১ জানুয়ারি থেকে গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত জনশক্তি রফতানির নতুন দেশ বলিভিয়ায় গেছে ১৭৮ জন, ফিজিতে গেছে ৬৫৪ জন, গ্রিসে গেছে ৬৮ জন, হাঙ্গেরিতে গেছে ৮৬ জন, ইরাকে গেছে ৩৬ জন,আলবেনিয়ায় ২৫২ জন, আলজেরিয়ায় ১৩৬ জন, ব্রাজিলে গেছে ২৮২ জন, সাইপ্রাসে গেছে ৪১৪ জন, কসোভো গেছে ২৪১ জন, কাজাকিস্তান গেছে ১৪ জন, জার্মানি গেছে ১০ জন, ফিনল্যান্ড গেছে ১০ জন, নিউ জিল্যান্ডে গেছে ৪৬৬ জন, পোল্যান্ডে গেছে ১ হাজার ৮৮১ জন গেছে, পুর্তগালে গেছে ৫৯৪ জন, সার্বিয়ায় গেছে ১৬৩ জন, রোমানিয়ায় গেছে ৭ হাজার ২৯৩ জন, ইতালিতে গেছে ১৩ হাজার ৩৬৬ জন গেছে, মাল্টা গেছে ৫৩৩ জন, মালদোভায় গেছে৩৬ জন, সিসেলস গেছে ৪৩২জন, দক্ষিণ আফ্রিকা গেছে ৪৭৮ জন, উজবেকিস্তানের গেছে ১২০ জন, যুক্তরাজ্যে গেছে ৪ হাজার ৯৫০ জন, জাপানে গেছে ৫৯১,দক্ষিণ কোরিয়ায় গেছে ৩ হাজার ৮৩৮ জন, লাটভিয়ায় গেছে ৮ জন, আয়ারল্যান্ডে গেছে ২৮ জন, চেক প্রজাতন্ত্রে গেছে ৩৯ জন, হংকং গেছে ১৩৬ জন, কম্বোডিয়া গেছে ১ হাজার ২৬৬ জন, লাউস গেছে ৭৩ জন, ডেনমার্ক গেছে ৭ জন, জিবুতি গেছে ১৯ জন, লিবিয়ায় গেছে ২০৬জন, লিথিনিয়া গেছে ৭ জন।
এছাড়া একই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছে ৬৭ হাজার ৬৬৬ জন, সিঙ্গাপুরে গেছে ৩৫ হাজার ৯৮৮জন, ওমানের গেছে ৯৭ হাজার ৬৩৫ জন, কুয়েত গেছে ২৭ হাজার ৪৪১ জন, কাতার গেছে ২৬ হাজার ৫৭৮ জন, সউদী আরবে গেছে ৩ লাখ ৬ হাজার ৩৩০ জন। সূত্র মতে, ২০২২ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৯৮৪ কর্মী বিদেশে চাকরি লাভ করেছে। আর গত জানুয়ারি থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে সর্বমোট চাকরি লাভ করেছে ৮ লাখ ৮২ হাজার ১১৭জন ।
ভূমধ্যসাগর পাড়ের ইউরোপীয় দেশ গ্রিস। উন্নত এ দেশটিতে বিনা খরচে বাংলাদেশি কর্মীদের নিরাপদ অভিবাসন ও কর্মসংস্থানের জন্য ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গ্রিস ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে চুক্তি সই হয়। এটি ইউরোপের কোন দেশের শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মী নেয়ার প্রথম চুক্তি। এর আওতায় দেশটির কৃষি, পর্যটন ও তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ৫ বছরের ভিসা সরবরাহ করবে গ্রিস সরকার। প্রতি বছর ৪ হাজার করে বাংলাদেশি কর্মী যাওয়ার কথা দেশটিতে। মধ্যপ্রাচ্য নির্ভরতা কাটাতে এরই মধ্যে মলদোভা, সার্বিয়া, যুগোসøাভিয়া, আলবেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও মাল্টায় কর্মী পাঠানো শুরু হয়েছে। সরকার বিভিন্ন দেশগুলোর সঙ্গে দক্ষ কর্মী নিতে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা, সমঝোতা স্মারক সই ও জিটুজি চুক্তি স্বাক্ষরের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো।
সদ্য পোল্যান্ড ফেরত পোলিশ কোম্পানী অ্যামেজিং মাল্টিপ্লেক্স সার্ভিসেস স্পোকাজুর প্রেসিডেন্ট ও তাফা হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের স্বত্বাধিকারী ড. মো. মামুন আশরাফী গতকাল বুধবার ইনকিলাবকে বলেন, প্যোল্যান্ডসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রচুর দক্ষ বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা রয়েছে। ইউরোপের শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মী প্রেরণের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, আমি পোল্যান্ডে ৫০ জন পাইপ ফিটার ও ৫০ ওয়েল্ডার নিয়োগের চাহিদাপত্র লাভ করেছি।
শিগগিরই এসব কর্মী বাছাই ও নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করা হবে। দেশটিতে এসব কর্মীর বেতন হবে কম পক্ষে ১ লাখ টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা। এক প্রশ্নের জবাবে ড. মামুন আশরাফী বলেন, প্যোল্যান্ড ও রোমানিয়া থেকে যেসব বৈধ বাংলাদেশি প্রবাসীদের আশ্বাসে পালিয়ে অন্যা দেশে গিয়ে অবৈধ হয়েছে তারাই এখন বড় বিপদে রয়েছে। পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে না পারলে ইউরোপের সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার আরো ঝুঁকির মাঝে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বোয়েসেলের মাধ্যমে স্বল্প অভিবাসন ব্যয়ে রোমানিয়ায় কর্মী প্রেরণের বিদায়ী অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছিলেন, ইউরোপ বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার এবং প্রতিনিয়ত ইউরোপে কর্মী গমণের হার বাড়ছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশের (যেমন ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া) সাথে বাংলাদেশী কর্মী প্রেরণ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। প্রবাসী মন্ত্রী আরো বলেন, বোয়েসেলের মাধ্যমে রোমানিয়াসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে কর্মী প্রেরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তিনি বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদেরও দেশের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ ও কাজে মনোযোগী হয়ে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান। দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চ বেতনে দক্ষ বাংলাদেশি কর্মীর অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দেশটির জাহাজ শিল্প, নির্মাণসহ অন্যান্য খাতে প্রচুর দক্ষ বাংলাদেশির চাহিদা রয়েছে। রিক্রুটিং এজেন্সি বিজনেস এ্যালায়েন্সের ম্যানেজিং পার্টনার এস আই মজুমদার সিরাজ এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার ল’ইয়ার্স ফার্মের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে গত ২৯ মার্চ ৪৮ জন দক্ষ ওয়েল্ডার দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠিয়েছে বিজনেস এ্যালায়েন্স। দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্রুপে যথাক্রমে গত ১৮ এপ্রিল ২১জন এবং ১২ জুলাই ৫৩ জন দক্ষ ওয়েল্ডার পাঠিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এসব দক্ষ কর্মী বর্তমানের কোরিয়ায় প্রতিমাসে আড়াই লাখ টাকা বেতন পাচ্ছেন। এক প্রশ্নের জবাবে জনশক্তি রফতানিকারক সিরাজ বলেন, চীনের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীতে প্রায় ৫ হাজার কর্মী নিয়োগের জোর প্রচেষ্টা চলছে।