মানুষের জীবনমান উন্নত হলেই আঘাত আসার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়- প্রধানমন্ত্রী

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মানুষের জীবনমান উন্নত হলে, তারা ভালো থাকলেই একটা আঘাত আসার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (জুলাই, ২০২০-জুন, ২০২৫) দলিলের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভার প্রারম্ভিক ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা লক্ষ করবেন, বাংলাদেশের মানুষের যখন একটু ভালো সময় আসে, মানুষ একটু ভালো থাকার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে, জীবন-মান একটু উন্নত হয়, তখনই কিন্তু একটা আঘাত আসার আশঙ্কা থাকে। সেই কারণেই সবাইকে একটু সতর্ক থাকা দরকার।’ শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে জাতির পিতা যখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে পা বাড়াচ্ছিলেন, দেশটা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে সেই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এবং তার সুফলও মানুষ পেতে শুরু করেছে, মানুষ একটু খুশি এবং স্বস্তিতে; ঠিক সেই সময়ে কিন্তু ১৫ আগস্টের ঘটনাটা ঘটল। তিনি বলেন, ‘আমি জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা, ১৫ আগস্টের সব শহীদ এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং নির্যাতিত মা-বোনদের স্মরণ করে সবাইকেই এ বিষয়ে একটু সতর্ক করতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় সবার সহযোগিতায় তাঁর সরকারের করোনা মোকাবিলার সাফল্য তুলে ধরে বলেন, ‘ভৌগোলিক দিক থেকে ছোট হলেও জনসংখ্যার দিক থেকে বড় এই দেশে আমরা করোনা মোকাবিলা করেও তা যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলায় আমরা যেমন নির্দেশনা দিয়েছি, প্রণোদনা দিয়েছি, তেমনি ভ্যাকসিন প্রদানও শুরু করেছি। যা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও এখনো আনতে পারেনি।’ তিনি টিকা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষণা চলার সময়ই এটি চালু হলে বাংলাদেশ যেন আগে পেতে পারে, সে জন্য আগাম অর্থ দিয়ে বুকিং করে রেখেছিলেন বলেও উল্লেখ করেন। কেননা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখনই অনুমতি দেবে, টিকাটা যাতে দেশের মানুষ পেতে পারে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা এ সময় দেশবাসীর প্রতি পুনরায় কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, ‘তারা ভোট দিয়েছিল বলেই আমরা ক্ষমতায় আসতে পেরেছি এবং তাদের সেবা করার সুযোগটা পেয়েছি। তাঁর সরকার, দল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী এবং জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সবাই আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়াতেই দেশের কোভিড এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সারা বিশ্বের অর্থনীতি আজ স্থবির অনেক উন্নত দেশ না পারলেও বাংলাদেশ আজ টিকা দিয়ে একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে পেরেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ যথেষ্ট সচেতন বিধায় এই করোনাভাইরাসের প্রভাব আর খুব বেশি আমাদের দেশে থাকবে না।’ তিনি এ সময় ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা চলার সময় ১৬ ফেব্রুয়ারির স্মৃতিচারণা করে সেই মামলার আসামি সার্জেন্ট জহুরুল হক হত্যাকাণ্ডের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা আগেই আমরা অনুমোদন দিয়েছিলাম আর আজ আমরা তা উন্মুক্ত করলাম। যার বাস্তবায়নও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। তিনি ভাষার মাসে ভাষাশহীদদের স্মরণ করে বলেন, ‘দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করাতে বছরের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু স্মৃতি আমাদের রয়ে গেছে। কাজেই বাংলাদেশের মানুষ ভালো থাক, সুস্থ থাক এবং স্বাধীনতার চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠুক, এটাই আমাদের একমাত্র কামনা।’

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.