বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক । প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির জাতির পিতা, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা।’ বাঙালি জাতি ও বঙ্গবন্ধু যেন এক অবিচ্ছেদ্য মেলবন্ধন। এই মেলবন্ধনই তাঁকে জেল-জুলুম, ফাঁসিরকাষ্ঠ সবকিছুকে তুচ্ছ করে কোটি বাঙালিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে ঐক্যবদ্ধ করতে প্রেরণা জুগিয়েছিল। আর তাইতো বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তির সংগ্রামে, ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকাকে। আর এ জন্যই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একান্তভাবেই অবিচ্ছেদ্য।
বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ অর্জন তার স্বাধীনতা। আর এ স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বার্থক রূপকার, স্থপতি ও অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মূলত: এই ভূখন্ডের মানুষ প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ পায় ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত বাঙালি জাতির রাজনৈতিক যে ইতিহাস তা বাঙালির জাতিসত্বার অভ্যুদয়ের ইতিহাস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে মহানায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর অধিষ্ঠিত হওয়ার ইতিহাস। বাঙালি জাতির জন্য একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান ও স্বপ্ন। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য যে অমিত সাহস, দূরদৃষ্টি, পরিপক্কতা ও প্রখর ব্যক্তিত্ব দরকার ছিল সেসব অনন্য বৈশিষ্ট্যের অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছিল বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে। বঙ্গবন্ধু নিজের মধ্যে লালন করতে থাকেন স্বাধীনতার স্বপ্নকে। তারপর আস্তে আস্তে এই স্বপ্নকে তিনি ছড়িয়ে দেন পুরো জাতির মধ্যে। ১৯৪৭ সালের পরই তিনি বুঝতে পারেন যে, বাঙালিরা পাকিস্তানের সঙ্গে থাকতে পারবে না। পকিস্তানের সঙ্গে থাকলে প্রতিনিয়ত শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়ে বাঙালি জাতিকে থাকতে হবে নতজানু হয়ে। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে, সে স্বপ্নকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধু আস্তে আস্তে তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন।১৯৬৬-এর ৬-দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ-আন্দোলন, ১৯৭০-এর নির্বাচন এবং তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের স্বাধীনতা।
১৯৭১-এর ৭ মার্চ রেসকোর্সের স্মরণাতীতকালের বৃহত্তম জনসভায় বঙ্গবন্ধু উদাত্ত কণ্ঠে স্বাধীনতার ডাক দেন। তিনি ঘোষণা করেনÑ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ পাকিস্তানি ষড়যন্ত্র মোকাবেলা এবং প্রয়োজনে সশস্ত্র সংগ্রামে এগিয়ে আসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে সমগ্র জাতিকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেবার আহবান জানান। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঐ রাতে গ্রেফতার করা হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। গ্রেফতারের আগে গভীর রাতে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এর ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে প্রবল পরাক্রমশালী পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পর্যুদস্ত করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জন্মলাভ করে স্বাধীন বাংলাদেশ নামক জাতিরাষ্ট্র।
পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করে স্বাধীন স্বদেশভূমিতে প্রত্যাবর্তনের পর বঙ্গবন্ধু এবার দেশ গড়ার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করলেন। পাকিস্তানি বাহিনীর জালাও পোড়াও নীতির ফলে একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ভূখ- ছাড়া বাংলাদেশের বলতে গেলে তখন আর কিছুই ছিল না। বাংলাদেশের প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক আবকাঠামো হয়ে পড়েছিল বিপর্যস্ত। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কলকারখানা সবকিছুই তখন ছিল বন্ধ। রক্তাক্ত, ছিন্নভিন্ন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বঙ্গবন্ধু নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। স্বাধীনতালাভের এক বছরের মধ্যেই দেশ পুনর্গঠনে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ, পুরো দেশবাসীকে একাজে উজ্জীবিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক পরিম-লে দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর নেওয়া পদক্ষেপসমূহ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে। পরবর্তী সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, ব্রিজ-কালভার্ট-সেতু নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান যোগাযোগের উন্নয়ন, ধ্বংসপ্রায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্গঠন, দক্ষ পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন, প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সুদৃঢ়করণে পদক্ষেপ গ্রহণ, শিক্ষা সংস্কারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, কৃষি সংস্কার, আদমশুমারি ইত্যাদি ছিল বঙ্গবন্ধুর উল্লেখযোগ্য কর্মপ্রয়াস ।
বঙ্গবন্ধু দেশের শাসনভার গ্রহণ করে বুঝতে পারেন যে, শতকরা ৮৫ ভাগ লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল দেশে কৃষিপন্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে না পারলে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদ- সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। এ জন্য তিনি সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। কৃষকদের ভাগ্যোন্নয়নে ধ্বংসপ্রাপ্ত কৃষি অবকাঠামো পুনর্নিমাণ, কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ, ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ, কৃষিপণ্যের নূন্যতম ন্যয্যমূল্য নির্ধারণ, বকেয়া কৃষিঋণ মওকুফ, নামমাত্র মূল্যে কৃষিবীজ সরবরাহ এমনি নানবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের চেষ্টা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে গণমানুষের রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু যেমন দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে বিরামহীনভাবে ছুটে বেড়িয়েছেন তেমনি দেশ-পুনর্গঠনের সময়ও তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের গ্রাম-গঞ্জের আনাচে-কানাচে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অব্যবহিতপরেই ১৯৭২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাবনার নগরবাড়িতে আসেন বন্যা প্রতিরোধ, পানি নিস্কাশন ও কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়নে গৃহীত সমন্বিত পাবনা প্রজেক্ট উদ্বোধন করতে। পাবনা ও সিরাজগঞ্জের বন্যা প্লাবিত জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব এবং এ অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ জমিতে ফসল আবাদের সুবিধার জন্য বঙ্গবন্ধু নিজের হাতে কোদাল দিয়ে মাটি কেটে এদিন যমুনা ও বড়াল নদীতে বাঁধ দেয়ার কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন। যেটি বর্তমানে স্থানীয়ভাবে ‘মুজিব বাঁধ’ নামে পরিচিত।
আমি তখন নগরবাড়ি সংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী ধোবাখোলা করোনেশন (নাটিয়াবাড়ি) উচ্চ বিদ্যালয় এর সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। আমার সেদিন সৌভাগ্য হয়েছিল নগরবাড়ির সেই ঐতিহাসিক সমাবেশে উপস্থিত হয়ে জাতির পিতাকে একটু দেখার এবং তাঁর ভাষণ শুনবার। এ দিনে তিনি তাঁর ভাষণে মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো নারীদেরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘বীরঙ্গনা’ খেতাবে ভূষিত করেন। তিনি তাঁর ভাষণে আরও বলেন, ‘পঁচিশ বিঘা যাদের জমি আছে পঁচিশ বিঘা পর্যন্ত তাদের খাজনা মনে আছে আপনাদের বলেছিলাম এইখানে যে রোজ কেয়ামত পর্যন্ত মাফ হয়ে যাবে। মাফ করে দিছি, আর খাজনা দিতে হবে না। তবে ট্যাক্স দিতে হবে, না হলে জমির মালিকানা থাকা কষ্টকর হবে। ট্যাক্স, অন্যান্য যা ট্যাক্স আছে দিতে হবে। না হলে সরকার চালানো যাবে না। … … আপনাদের কাজ করতে হবে। আপনাদের গ্রামে গ্রামে এই যে কোদাল ধরছি কেন আমি? পয়সা যদি আমার থাকতো আমি বলতাম দিলাম পয়সা চালাও কোদাল। পয়সা নাই বইলা আমি বলছি পয়সা নাই, আমিও কোদাল মারি, তোরাও কোদাল মার। আপনাদের যত রাস্তা, খাল এগুলো আপনাদের নিজেদের কাটতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে এই ভাষণে আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা পাওয়া যেমন কষ্টকর স্বাধীনতা রক্ষা করাও তেমনি কষ্টকর। আজ স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি এ দেশের দুঃখি মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি গরিবের উপর অত্যাচার অবিচার হয়। স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি আমার সোনার বাংলা আবার না হাসে। স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি আমার ছেলেরাই কাজ না পায়। কিন্তু সময়ের প্রয়োজন। আসমান থেকে আসবে না যে আমি তাড়াতাড়ি আপনাদের সবকিছু দিবার পারবো। আপনাদের সহ্য করতে হবে, কাজ করতে হবে, খাটতে হবে। আর আমি বলেছি, কৃষি বিপ্লব। আমার দুনিয়ার কাছ থেকে খালি খাবার কিনতে হবে, খালি খাবার কিনতে হবে। পারবো না। খাবার তৈয়ার করতে হবে। আপনাদের গ্রামে গ্রামে ফসল উৎপাদন করতে হবে। আমি জানি বন্যায় নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু পয়সা কোথায়? চেষ্টা করতেছি। স্বাধীন দেশ, আইন-শৃঙ্খলা রাখতে হবে। এই দায়িত্ব যেমন সরকারের এই দায়িত্ব তেমনই জনসাধারণের। আপনারা সকলে যেমন দস্যু পশ্চিম পাকিস্তানের পিশাচদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, তেমনি করে গুন্ডা-পান্ডা বদমাহিশদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।’
এভাবে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু যখন বাংলার জনগণের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করে স্বাধীনতার চেতনা ও আদর্শকে সমুন্নত রেখে সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের শত সমস্যাকে জয় করে বাংলাদেশকে একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করান; বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে একটি মর্দাদাসম্পন্ন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন ঠিক তখনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল বিপথগামী সামরিক বাহিনীর সদস্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও প্ররোচনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা করে। সেদিন ঘাতক খুনি-চক্র এমন বর্বর হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, হত্যা করেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রগতিকে। তারা ধ্বংস করতে চেয়েছিল জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের সকল অর্জনকে, রাষ্ট্রের চার মূলনীতি ও সংবিধানকে। সর্বোপরি বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা সামরিক শাসকরা আইন করে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি বিল’ চাপিয়ে দিয়ে ধৃণ্য মানবতাবিরোধী এই হত্যাক-ের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের সকল পথ রুদ্ধ করে দিলো।১৯৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের পুনর্বাসন করা শুরু হলো। জাতীয় চার নেতাকে কারাগারের অভ্যন্তরে সকল নিয়ম ভেঙে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। উপরন্ত বঙ্গন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করা হলো বিদেশি মিশনে চাকরি দিয়ে।
এরপর ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর এর বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম শেষে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার অবৈধ‘ইনডেমনিটি বিল’ সংবিধান থেকে অপসারণ করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ের বিচারের পথ সুগম করেন। শুরু হয় বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার।কিন্তু ২০০১-এর পর বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে বিচারের রায় ভ-ুল করে খুনি-চক্রকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য নান টালবাহানা শুরু করে। শুধু তাই নয় ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় গ্রেনেট হামলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা তৎকালীন বিরাধীদলীয় নেতা আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রচেষ্টা চালায়। এই হামলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা আহত হন এবং আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান। অতপর রাজপথের আন্দোলন সংগ্রাম শেষে ২০০৮-এর ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করে জাতির পিতার হত্যাকরীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করলে বাঙালি জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়। তবে বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর সকল খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এন বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর করা ও খুনি-চক্রের নেপথ্য কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করা আজ সময়ে দাবি।
বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে অগ্রগতি ও উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। তিনি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ করে চলেছেন। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বিক মুক্তির প্রতীক বঙ্গবন্ধুর সেনার বাংলা গড়ার জন্য আমাদের সবাইকে দেশের স্বার্থে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। শোকের এই আগস্টে জাতির পিতার প্রতি রইল প্রণঢালা ভালোবসা ও গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
লেখক : উপাচার্য – পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।