আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে । হীরেন পণ্ডিত
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন ‘আঘাত আসবে, ষড়যন্ত্র হবে, কিন্তু সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের জনগণের ভোটের ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে, আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশও প্রতিষ্ঠা করবে। বাংলাদেশ আর পিছিয়ে যাবে না, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করেছে। আর্থিক সক্ষমতা দিয়েছে সরকার। এখন সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের হাতে দেওয়া হয়েছে। স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতৃত্বাধীন সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরে জানান, ইভিএম করার পর আর কোনো ভোট জালিয়াতি করার সম্ভাবনা নেই। আওয়ামী লীগের জনগণের ওপর আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। সেই বিশ্বাস নিয়েই আওয়ামী লীগ চলে। দুর্নীতির আওয়ামী লীগের জিরো টলারেন্স অবস্থান রয়েছে। বাংলাদেশ সব বন্ধ্যাত্ব কাটিয়ে আজকে দ্রুতগতিতে যাচ্ছে। তার মধ্যে একটি বাধা এসেছে করোনা, এরপর শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
কোভিড-১৯-এর অর্থনৈতিক অভিঘাত থেকে আমরা বের হয়ে আসছিলাম। সেখানে এই যুদ্ধ আর নিষেধাজ্ঞা আমাদের সব অগ্রযাত্রা নষ্ট করছে। উন্নত দেশগুলোও আজ হিমশিম খাচ্ছে। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশের বর্তমান মাথাপিছু এখনো ভালো অবস্থায় রয়েছে। আওয়ামী লীগ যেকোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। এটাই আওয়ামী লীগ এবং এটাই আওয়ামী লীগের শিক্ষা। আওয়ামী লীগের ইতিহাস যেমন সংগ্রামের ইতিহাস, আবার সেই সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগই পারে একটি দেশকে উন্নত করতে বা এগিয়ে নিয়ে যেতে, যেভাবে এখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের ইতিহাস দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস।
আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে জনগণের পাশে থেকে এ দেশের জনগণকে সুন্দর জীবন দেবে, উন্নত জীবন দেবে এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর সেভাবেই এ দেশ পরিচালনা করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। যত অশুভ শক্তি, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করুক না কেন বাঙালি এগিয়ে যাবে, অগ্রযাত্রার পথে কেউ বাধা হয়ে হাঁড়াতে পারবে না। এরই মধ্যে শুরু হয়ে যাওয়া লোডশেডিং সমাধানের চেষ্টা করছে।
বিশ্বব্যাপী গ্যাস, তেল ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে তাও কাটিয়ে উঠবে। লোডশেডিং ও মূল্যস্ফীতি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে এটাও আমরা সবাই জানি। এখন জ্বালানি কেনা খুবই কঠিন তাই দেশবাসীকে একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। তবে ইতিমধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি সই হয়েছে। আমরা জলবিদ্যুৎ আমদানির ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। কয়লা কেনার জন্য ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আবার চালু করা যায় তার জন্য।
আওয়ামী লীগ সরকার শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছে। কিন্তু এখন তেল, গ্যাস, কয়লার দাম বেড়ে গেছে। এখন কয়লাই পাওয়াই একটি কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একসময় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ওগুজব চালানো হয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে, এখন আবার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। যার জন্য আমাদের দেশের জন্য কয়লা কিনে আনতে নানারকম সমস্যা হচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই সমস্যা কেটে যাবে।
আমাদের সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। দেশবাসী সঠিক তথ্য জানেন এবং সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে অবগত আছেন। বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব হয়েছে অত্যন্ত ক্ষতিকর। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পুরো বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেইন বিপর্যস্ত হয়। রাশিয়া ও ইউক্রেন মিলিতভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে ৩০ শতাংশ খাদ্যের জোগান দিয়ে থাকে। আর রাশিয়া আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের এক- দশমাংশের জোগান দেয়। ফলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট দেখা দেয়। এখন বিশ্ব অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে যে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রভাব বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও পড়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতি।
শুধু বাংলাদেশেই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতেই বর্তমানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। যদিও উন্নত দেশগুলো নিজস্ব কৌশল প্রয়োগ করে মূল্যস্ফীতিকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। যে উদ্যোগগুলো এখন নেওয়া হয়েছে, সেইগুলো আগে নেয়া যেতো। বৈশ্বিক সংকট তৈরি হয়েছে একবছরের অধিক সময় ধরে। সংকট মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি অনেক সময় বাস্তবতার প্রেক্ষিতেও নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। শুধু নিত্যপণ্য নয়, বেড়েছে বিদ্যুতের দাম, প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলপি গ্যাসের দামও। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে সরকারি উদ্যোগের প্রভাবসহ চার কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী। বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে আসা, দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় এবং খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকারি উদ্যোগের প্রভাবে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
কয়েক দিন ধরে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে নির্বাচনে অনিয়ম ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের তারা ভিসা দেবে না। তবে সরকার যে এই মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে খুশি নয়, তা স্পষ্ট হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে। তিনি বলেছেন, কে আমাদের ভিসা দেবে না, নিষেধাজ্ঞা দেবে, ও নিয়ে মাথাব্যথা করে লাভ নাই। ২০ ঘণ্টা প্লেনে জার্নি করে, আটলান্টিক পার হয়ে ওই আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না। পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে। সেখানেই আমরা যাতায়াত করব, বন্ধুত্ব করব। আমাদের অর্থনীতি আরও উন্নত হবে, মজবুত হবে, আরও চাঙা হবে।’ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেকগুলো বিষয় কাজ করে। এখানে অনেক কিছু নিয়ে মতপার্থক্য থাকে। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি ভিন্ন। সেখানে আমাদের দলের সভাপতির নেতৃত্বে নির্বাচনে সব কার্যক্রম চলে।
দেশের মানুষ ও আওয়ামী লীগের শুভাকাক্সক্ষীরাও দেখতে চায়, সমস্যামুক্ত আওয়ামী লীগ এবং সব ধরনের সংকট উত্তরণে সক্ষম আওয়ামী লীগ। কারণ দেশে অসংখ্য রাজনৈতিক দল থাকলেও আওয়ামী লীগের বিকল্প ভালো রাজনৈতিক দল এখনো দেশে গড়ে ওঠেনি। দেশের এগিয়ে যাওয়ার ধারা অব্যাহত রাখতে হলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে, দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারবে।
বাংলাদেশের জনগণ কখনই কোনো বিদেশি চাপের কাছে মাথা নত করবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, দেশি-বিদেশি চাপ যতই আসুক না কেন, বাঙালিরা কখনোই সেই চাপের কাছে মাথা নত করবে না। আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে, এ দেশ আমাদের। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমরা কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। জনগণের সমর্থনের কারণে সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশের অগ্রযাত্রা সম্ভব হয়েছে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবেই এগিয়ে যাবে। দেশের জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের জনগণকে আর কেউ দমন করতে পারবে না।
গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশে ব্যাপক পরিবর্তন ও উন্নয়ন হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত করবে। বাঙালি জাতির প্রতিটি মহৎ, শুভ ও কল্যাণকর অর্জনে আওয়ামী লীগের ভূমিকা রয়েছে। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ আজ আত্মপ্রত্যয়ী, বিশ্বে উন্নয়ন বিস্ময়। রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে আওয়ামী লীগ সরকার বদ্ধপরিকর।
আওয়ামী লীগ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশ যখন উন্নয়নের সোপানে এগিয়ে যাচ্ছে তখন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির দোসররা অস্থিতিশীলতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে। কোনো অশুভ শক্তিকে এই দেশে বিস্তার লাভ করতে দেওয়া হবে না। মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে। সাক্ষরতার হার ৭৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২ কোটি মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন ধরনের ভাতা পাচ্ছেন। দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছেন।
স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায়। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে দরিদ্র মানুষ বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ পাচ্ছেন। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭৩ বছর। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে। সারাদেশে সড়ক, মহাসড়ক, সেতু, ফ্লাইওভার, পাতাল সড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রেল, নৌ ও যোগাযোগসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। মেট্রোরেল নির্মাণের চালু হয়েছে গত ডিসেম্বরে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করা হয়েছে গত বছরের জুনে চালু হয়েছে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত এবং স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ও অবৈধ সেনাশাসকদের নির্যাতন আর নিপীড়নের মাধ্যমে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয় জনগণের সংগঠন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে। কিন্তু কোনো অপচেষ্টা কখনই সফল হয়নি। আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মী, সমর্থকেরা জীবন দিয়ে সকল প্রতিকূলতা, ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দলকে টিকিয়ে রেখেছে, শক্তিশালী করেছে এবং ভবিষ্যতেও রাখবে।
গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
খাদ্য ঘাটতির দেশ বাংলাদেশকে আওয়ামী লীগ সরকারই খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত করে। আওয়ামী লীগ সরকার গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, কূটনৈতিক সাফল্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ প্রতিটি খাতে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বের শীর্ষ ৫টি দেশের একটি বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগের বিশাল কর্মযজ্ঞ সামনে রেখেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শিক্ষা, যোগাযোগ অবকাঠামো, গ্যাস, বিদ্যুৎ, নারী শিক্ষা, চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা শতভাগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা, বিনামূল্যে বই বিতরণ, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, সামাজিক কর্মসূচির আওতায় পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী, অসহায়, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, স্বামী নিগৃহীত নারী, অটিজম, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা প্রদান, আশ্রয়ণ প্রকল্প, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, নারীর ক্ষমতায়নসহ ও বিভিন্ন সেক্টরের সামগ্রিক উন্নয়নের সুফল জনগণ পাচ্ছে। একমাত্র বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সেই সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারি সত্ত্বেও এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে এগিয়ে আামাদের প্রিয় বাংলাদেশ কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ‘আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে আমরা মাথা উঁচু করে চলতে পারি। কারও কাছে মাথা আমরা মাথা নত করবো না, কারও কাছে মাথা নত করে আমরা চলব না’। আমাদের যতটুকু সম্পদ আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বারবার বলেছেন, সেই সম্পদটুকু কাজে লাগিয়েই আমরা বিশ্বসভায় আমাদের নিজেদের আপন মহিমায় আমরা গৌরবান্বিত হবো, নিজেদের গড়ে তুলব এবং সারাবিশ্বের কাছে আমরা মাথা উঁচু করে চলব। এটাই হবে এ দেশের মানুষের জন্য সবদিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এভাবেই এগিয়ে যাবে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন এবং সহজেই নাগরিক সেবা প্রাপ্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবস্থাপনা, কর্মপদ্ধতি, শিল্প-বাণিজ্য ও উৎপাদন, অর্থনীতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালনা করার লক্ষ্যে কাজ করছে। দেশের প্রতিটি নাগরিকের কাছে প্রযুক্তি যেমন করে সহজলভ্য হয়েছে, তেমনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছের প্রযুক্তিনির্ভর সেবা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সব নাগরিক সেবা ও জীবনযাপন পদ্ধতিতে প্রযুক্তি হয়ে উঠেছে এক বিশ্বস্ত মাধ্যম।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মোকাবেলায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দিয়েছে। বাংলাদেশ আগামী পাঁচ বছরে জাতিসংঘের ই-গভর্ন্যান্স উন্নয়ন সূচকে সেরা ৫০টি দেশের তালিকায় থাকার চেষ্টা করছে। এক দেশ এক রেইট কর্মসূচির মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে জনগণকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা হয়েছে সাড়ে ৫ হাজার ইউনিয়ন। সারাদেশে ৮৬০০ ডিজিটাল সেন্টার চালু করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে ৫ জি চালু হয়েছে তবে এ বছরের শেষে বাণিজ্যিকভাবে কাজ করবে।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তরুণরা গড়ে তুলছে ছোট-বড় আইটি ফার্ম, ই-কমার্স সাইট, অ্যাপভিত্তিক সেবাসহ নানা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটসহ কয়েকটি বড় প্রাপ্তি বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এখন স্বপ্ন নয় এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। একমাত্র আওয়ামী লীগ এ দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যায় এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক