বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ । আবীর আহাদ
বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আগামী অর্থ বছর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা ১২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান আবীর আহাদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি পরম কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন । এর ফলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
আজ প্রধানমন্ত্রীর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা মাসিকভিত্তিতে প্রদানের জি-টু-পি পদ্ধতি উদ্ভাবনী অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতাবৃদ্ধির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে আবীর আহাদ উপরোক্ত মন্তব্য করে এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা বহুদিন ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান ও ভুয়ামুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকাসহ তাদের আর্থসামাজিক উন্নত জীবন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের জন্যে ধারাবাহিক আন্দোলন সংগ্রাম ও লেখালেখি করে আসছি । সেসবের পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ইতোমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধাদের উচ্ছেদের লক্ষ্যে বেসামরিক গেজেট, বাহিনী গেজেট ও লাল মুক্তিবার্তা তালিকা যাচাই বাছাই কার্যক্রম চলছে। আমরা চাই, অন্যান্য তালিকা থেকেও ভুয়াদের উচ্ছেদ করতে হবে । এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই তিনি পদক্ষেপ নেবেন । কারণ তিনি অবশ্যই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঐতিহাসিক মর্যাদা ও ভাবমূর্তির আলোকে একটি স্বচ্ছ তালিকা চান । সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদাহরণকারী অমুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান থাকতে পারে না । অপরদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থসামাজিক উন্নত জীবন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করে তিনি পর্যায়ক্রমে আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করে তিনি প্রমাণ করছেন যে, তিনি অভিভাবকের ভূমিকায় অসহায় ও দারিদ্রপ্রপীড়িত মুক্তিযোদ্ধাদের পাশেই আছেন।
আবীর আহাদ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনের শেষ প্রান্তে অবস্থান করছেন। অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা নানান রোগে আক্রান্ত। অনেকেই বলা চলে বিনা চিকিৎসায় ধরাধাম ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। অন্যান্যরা চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরছেন । বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার কথা থাকলেও তারা আসলেই কোনো চিকিতসা পাচ্ছেন না । এমতাবস্থায় মাসিক ভাতার পাশাপাশি তাদেরকে মাসিকভিত্তিতে একটি উপযুক্ত চিকিৎসা ভাতা প্রদানের জন্যেও আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক বিবেচনা কামনা করছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান সম্পর্কে আবীর আহাদ বলেন, এটাও বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন দেশবাসীর একান্ত দাবি । মুক্তিযোদ্ধাদের সীমাহীন শৌর্য ত্যাগ রক্ত ও বীরত্বে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি না থাকার ফলে তারা সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে যথাযথ মূল্যায়ন পাচ্ছেন না । অপরদিকে সময়ের পরিক্রমায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী নানান অপশক্তির হাতে তারা নানাভাবে অপমানিত লাঞ্ছিত ও আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছেন। ফলে তাদের জাতীয় মর্যাদা ও জীবনের নিরাপত্তার প্রয়োজনে সাংবিধানিক সুরক্ষা থাকা বাঞ্ছনীয়। আমরা আশা করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঐতিহাসিক মর্যাদা সমুন্নত রাখার প্রয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করে নিজেও ইতিহাসের পাতায় মহিমান্বিত হয়ে থাকবেন।
আবীর আহাদ : চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ