চলে গেলেন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু প্রণব মুখার্জী
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ভারতীয় রাজনীতির একটা অধ্যায় শেষ হয়ে গেল । ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় চলে গেলেন। দীর্ঘ ২১ দিন ধরে সেনা হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তিনি বাড়ির বাথরুমে পড়ে গিয়েছিলেন। হাসপাতালে দেখা যায়, তাঁর মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে আছে। সঙ্গে সঙ্গে অপারেশন করা হয়। তাঁর করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। ফুসফুস আক্রান্ত হয়। অপারেশনের পরে তাঁকে ভেন্টিলেটারে রাখতে হয়। কিছুদিন পরে তিনি গভীর কোমায় চলে যান। রোববার রাত থেকে তাঁর শরীর আরো খারাপ হয়। সোমবার বিকেলে তিনি চলে যান না ফেরার দেশে । পশ্চিমবঙ্গে বীরভূমের গ্রাম কীর্ণাহার থেকে প্রণববাবুর দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার ইতিহাস ঘটনাবহুল এবং ভারতীয় গণতন্ত্রের শক্তির পরিচায়ক। সাধারণ ঘরের একজন মানুষ যে দেশের সর্বোচ্চ পদে যেতে পারেন, প্রণব মুখার্জী তা প্রমাণ করেছিলেন।
২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি ‘ভারতরত্ন’ পুরস্কারে সম্মানিত হন প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও বাঙালি এই রাজনীতিবিদের ঝুলিতে দেশ-বিদেশের নানা সম্মান ও পুরস্কার রয়েছে । ১৯৮৪ সালে ‘ইউরোমানি’ পত্রিকার সমীক্ষায় প্রণব মুখোপাধ্যায়কে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অর্থমন্ত্রী বলা হয়েছিল। ২০১০ সালে বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের দৈনিক সংবাদপত্র ‘এমার্জিং মার্কেটস’ তাঁকে ‘ফাইনান্স মিনিস্টার অফ দ্য ইয়ার ফর এশিয়া’ পুরস্কার দিয়েছিল। দেশের জন্য অসামান্য কৃতিত্বের নিদর্শন রাখায় ২০০৮ সালে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘পদ্মবিভূষণ’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল। ২০১১ সালে উলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডক্টর অফ লেটারস ডিগ্রি দেয়। ২০১২ সালে অসম বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বেশ্বরায়া প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রণববাবুকে সাম্মানিক ডি. লিট ডিগ্রি দেওয়া হয় ।
২০১৩ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ২০১৩ সালে মরিশাস বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেও তাঁকে ‘ডক্টর অফ ল’ সম্মান দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ‘ভারতরত্ন’ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় প্রণব মুখোপাধ্যায়কে । ২০০৮ সালে বিদেশমন্ত্রী থাকাকালীন প্রণব মুখোপাধ্যায় তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে ইউএস সেক্রেটারি অফ স্টেট কন্ডোলিজা রাইস সেকশন ১২৩ চুক্তি সই করেন। তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার, বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও আফ্রিকান উন্নয়ন ব্যাংকের বোর্ড অফ গভর্নরসের সদস্য। ১৯৮৪ সালে প্রণব মুখোপাধ্যায় আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত গ্রুপ অফ টোয়েন্টিফোরের সভাপতিত্ব করেন। ১৯৯৫ সালের মে থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি সার্ক মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলনেও সভাপতিত্ব করেছিলেন প্রয়াত পরাক্তন রাষ্ট্রপতি।