আমার ছেলেমানুষিগুলো । আল-আমীন হোসেন লিমন
আমার ছেলেমানুষিগুলো
~~~~~~~~~~~
আল-আমীন হোসেন লিমন
~~~~~~~~~~~~
আমার ছেলেমানুষিগুলো আজকাল
বেশ বড়মানুষ হয়ে গেছে ৷
কিছু দেখলেও দেখা হয না,
কিছু ভাবলেও ভাবার সময় হয় না ৷
অনুভূতির জায়গাগুলো কেন জানি
অসাড় হয়ে গেছে,
রক্ত মাংসহীন হাড্ডিতে কিচ্ছু বেঁধে না ৷
একটা সুন্দর মুখ দেখে
কোনো অনুভূতি জাগে না আমার,
হোক তা ফুল কিংবা রমনী ৷
বড়মানুষ হলেই বুঝি
অনুভুতিগুলোও বুড়ো হয়ে যায়!
এখন কিছু চাইতেও মন সায় দেয় না,
পাওয়ার আনন্দটাও পাতলা হয়ে গেছে ৷
চেয়েও পাই না আবার পেয়েও চাই না,
যা পাই তা মনেও থাকে না ঠিকমত ৷
শরতের সাদামেঘ দেখে মেঘ হবার
বাসনা আগেই বৃষ্টিতে ভিজে গেছে,
ঘাসফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত মন
ফুলের গাদায় বসেও এখন সুখ পায় না ৷
বাতাসে ভরা নদীর নাচন দেখে আমার
পা ওঠে না, বড়মানুষের পা ভারিই থাকে ৷
অল্পতে তুষ্ট হয়ে জীবনে কতবার হেসেছি!
ক্ষনিক কাছে পাবার আনন্দে কতরাত
ঘুম হারাম করেছি!
আজ ভাবতে গেলেই লজ্জা পাই,
কতইনা ছেলেমানুষি ছিল আমার!
আমার চলন বলনেও শ্লীলতা নেই আর,
গুছিয়ে কাপড় পরার ধৈর্যও আর নেই,
সুখতলা ক্ষয়ে যাওয়া পুরনো চটিও
পাল্টাতে চায় না মন ৷
কোনোকিছুতেই মন বসে না যেন,
কেবল প্রয়োজনেই করে যাই সব ৷
খাবারের স্বাদ বোঝার সাধ নষ্ট হয়ে গেছে,
কোনোমতে গিলতে পারলেই বাঁচি ৷
মিষ্টি কথা প্রায়ই ঝাঁঝালো লাগে,
গুছিয়ে কথা বলার চেষ্টাও করি না আর ৷
ছেলেমানুষিগুলো সত্যিই বুড়ো হয়ে গেছে!
দু’পা এগিয়ে কারো হাত ধরবার ইচ্ছেটাও
সমূলে বিনাস হয়ে গেছে ইদানিং ৷
গিজগিজ করা স্বপ্নেরা ভয়ে কাছে আসে না,
আমিও কাছে ডাকি না ওদের,
আমারও ভালো লাগে না আর ৷
অনেকের মত আমার ছেলেমানুষ হবার
খায়েশ নেই বললেই চলে,
আমার ছেলেমানুষিরা ভুলে যাক আমাকে,
এখন আমারও ছেলেমানুষি ভালো লাগে না ৷
— আল-আমীন হোসেন লিমন।