ভেঙ্গে পড়ল নেত্রকোণায় মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া ঘর
মেহেদী হাসান আকন্দ: নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া দুর্যোগ সহনশীল ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে পড়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবহেলিত জনগোষ্টীর মাথাগোঁজার ঠাঁই করে দিতে নেত্রকোণা জেলায় ৯৬০জন অসহায় ভূমিহীন পরিবারকে উপহার স্বরুপ ১টি করে আধা-পাকা বাড়ী নির্মাণ করে দিচ্ছেন। এর মধ্যে খালিয়াজুরী উপজেলায় নির্মাণ করা হচ্ছে ৪৪৩টি বাড়ী।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১লক্ষ ৭১হাজার টাকা ব্যয়ে ২টি শোয়ার ঘর, ১টি রান্না ঘর, সংযুক্ত টয়লেট-বাথরুম ও ১টি বারান্দাসহ রঙিন টিনের ছাউনী দ্বারা প্রতিটি বাড়ী তৈরি করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই কারীগরী ত্রুটির কারণে ভেঙ্গে পড়ছে নির্মাণাধীন ঘরগুলো। উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ৩১জন উপকারভুগীদের মধ্যে ২১টি বাড়ী নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর মধ্যে কয়েকটি বাড়ীর দেয়াল ধ্বসে পড়ে গেছে। অধিকাংশ বাড়ীর দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে।
নির্মাণকাজে ব্যবহৃত জমাটবাধা সিমেন্ট গুলো এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্থানীয় রন সরকার, জগদীশ সরকার, তুলা সরকার, অমর সরকার, ইন্দ্রজিৎ সরকার, প্রথাকি সরকার, নীলকন্ঠ সরকার, অবনী কান্ত দাস কানু সরকার, মহলদার সরকার, গোপাল সরকার, লিটন চৌধুরী, মুনীর চৌধুরীসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজীব আহম্মেদের যোগসাজসে স্থানীয় সন্তোষ চন্দ্র সরকারের ছেলে সুভাষ চন্দ্র সরকার অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করার কারণেই মূলত দেয়াল ধ্বসে পড়েছে। একটি ঘরের দেয়াল ধ্বসে গোলাপ সরকার মারাত্মক আহত হয়েছে বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, সুভাষ চন্দ্র সরকার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজীব আহম্মেদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে যাদবপুর গ্রামে ৩১ বাড়ী নির্মাণের দায়িত্ব নেন। এব্যাপারে সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, তিনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজীব আহম্মেদের নিজস্ব লোক। এই বাড়ীগুলোর নির্মাণে সকল মালামার তিনিই সরবরাহ করেন এবং সকল কাজ তিনিই তদারকি করেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সুভাষ চন্দ্র সরকার রাজমিস্ত্রিদের খাবার এবং নদীর পাড় থেকে নির্মাণ সামগ্রী পরিবহণে তাদেরকে বাধ্য করে। অন্যথায় তাদেরকে ঘর তৈরি করে দেয়া হবেনা বলে হুমকী দেয়।
সুভাষ চন্দ্র সরকার হুমকীর বিষয়ে অস্বিকার করলেও মিস্ত্রিদের খাবার এবং নির্মাণ সামগ্রী পরিবহণে সুবিধাভুগীদের খরচের কথা অকপটে স্বিকার করেন। খালিয়াজুরী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের সহকারী প্রকৌশলী জনি জানান, নির্মাণাধীন কয়েকটি ঘরের দেয়াল ধ্বসে পড়েছে তবে নির্মাণকাজে অনিয়মের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন রাজীব আহম্মেদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিফ করেন নাই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ আরিফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনিও ফোন রিসিফ করেন নাই।