প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে হৃদয়-রুপার আঁকা ছবি; পাচ্ছে ২ লাখ টাকা
পাবনা প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে ব্যবহার হয়েছে পাবনার দুই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী হৃদয় ও রুপার আঁকানো ছবি। সেই ছবির সম্মানী বাবদ তারা দুইজন পাচ্ছে দুই লাখ টাকা। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে সম্মানী ঘোষণার চিঠি পেয়েছে তারা।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী দুই শিক্ষার্থী হলো, পাবনার বেড়া উপজেলার রতনগঞ্জ গ্রামের সাঈদ মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া এবং মাশুমদিয়া মধ্যপাড়া গ্রামের মো: আলিম খানের মেয়ে রুপা খাতুন। তারা দু’জনই সুপ্ত শিখা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, পাবনার বেড়া উপজেলার মাশুমদিয়া ইউনিয়নের ত্রিমোহনী বাজার এলাকায় ২০০৭ সালে সুপ্ত শিখা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন মাশুমদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরোজ হোসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা কার্ডে ব্যবহার হয় এই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর দুই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী হৃদয় মিয়া ও রুপা খাতুনের আঁকানো ছবি। সেই ছবির সম্মানী বাবদ দুইজনকে এক লাখ টাকা করে মোট দুই লাখ টাকা প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে সম্মানীর চেক ইস্যু করে চিঠি দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এসাইনমেন্ট অফিসার আফরোজা বিনতে মনসুর গাজী লিপি স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে জানানো হয়, ‘পবিত্র ঈদুল ফিতর-২০২১ শুভেচ্ছা কার্ডে ব্যবহৃত আপনার আঁকা ছবির সম্মানী হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সদয় হয়ে প্রধানমন্ত্রীন ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে এককালীন এক লাখ টাকা প্রদান করেছেন। এমতাবস্থায় আপনার অনুকুলে প্রস্তুতকৃত চেক এ কার্যালয় হতে সংগ্রহ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো’।
এই একই চিঠি দুই শিক্ষার্থীর নামে পাঠানো হয়েছে। দুইজনই এক লাখ করে মোট দুই লাখ টাকা পাবে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে। বুধবার (৩০ জুন) এই চিঠি হাতে পান বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ। তারপর থেকে আনন্দের বন্যা বইছে শিক্ষক, দুই শিক্ষার্থী ও তাদের স্বজনদের মাঝে।
এ বিষয়ে সুপ্ত শিখা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও আজীবন দাতা সদস্য মাশুমদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরোজ হোসেন বলেন, ‘এটি একটি অনন্য অর্জন। আমাদের জন্য এ বিষয়টি মাইলফলক হয়ে থাকবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমাদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
মিরোজ হোসেন বলেন, ‘আমরা সম্মানী ঘোষণার চিঠি পেয়েছি। দু’একদিনের মধ্যেই দুই শিক্ষার্থী ও তাদের বাবাকে নিয়ে আমরা ঢাকায় যাবো সম্মানীর চেক আনতে। যদিও লকডাউন, তারপরও ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ঢাকায় যাতায়াতের অনুমতি নেয়া হয়েছে।’
সুপ্ত শিখা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সভাপতি ও বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহা: সবুর আলী বলেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত। সবাই আজ মিষ্টি মুখ করেছি। একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় থেকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর এই প্রতিভা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’
দুই শিক্ষার্থীর বাবা আলিম খান ও সাঈদ মিয়া বলেন, তারা তাদের সন্তানের এমন অর্জনে খুবই খুশি। সবাই খুব প্রশংসা করছে। প্রধানমন্ত্রীকেও তারা ধন্যবাদ জানান তাদের সন্তানকে এভাবে সম্মান দেয়ার জন্য।