সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পুঁজিবাজারের সূচক

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : চার দিন পর দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু হয়েছে গতকাল সোমবার। সপ্তাহের প্রথম দিনই মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক সাড়ে তিন বছর পর সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসছে। এ দিন ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৬৯ পয়েন্ট। আর সিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ২৪০ পয়েন্ট। সেই সাথে দাম বেড়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। এর পাশাপাশি লেনদেনও হয়েছে বড় অঙ্কে। মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এই লকডাউনের মধ্যেও বর্তমান নিয়মেই লেনদেন চলবে বলে জানিয়েছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। এ সময় বিনিয়োগকারীদের লেনদেন করতে হবে অনলাইনে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত। ব্রোকারেজ হাউজে যাওয়া যাবে না। এই বিধিনিষেধের মধ্যে সীমিত পরিসরে খোলা রাখা হয়েছে ব্যাংক। আর ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে সপ্তাহে চার দিন শেয়ারবাজারের লেনদেনও চালু রাখা হয়েছে।

গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই বড় উত্থানের আভাস পাওয়া যায়। প্রি-ওপেনিং চালু থাকায় লেনদেন শুরুর আগেই অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়ে যায়। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শুরু হয় প্রধান মূল্য সূচক ৫০ পয়েন্ট বাড়ার মাধ্যমে। সূচকের এই বড় উত্থানের ধারা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২১৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে; যা ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি সূচকটি ছিল ৬ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সূচকের এই বড় উত্থানের দিনে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৪৩টি। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৯টির। আর ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর মাত্র তিন ঘণ্টাতেই ডিএসইতে লেনদেন পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৫১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় এক হাজার ৪০৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৪৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৩ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এমএল ডাইংয়ের ৩৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৬ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেয়া কসমেটিকস।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ম্যাকসন স্পিনিং, ন্যাশনাল ফিড, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মালেক স্পিনিং, জেনারেশন নেক্সট ও আইএফআইসি ব্যাংক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৪০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৬টির এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বারাকা পতেঙ্গার শেয়ার বরাদ্দ বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করা বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আবেদন করা সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ১০ হাজার টাকার আবেদনে ৫৪টি করে শেয়ার বরাদ্দ পেয়েছেন। সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নিকুঞ্জের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে কোম্পানিটির এই শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হয়। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের চেয়ে আইপিওতে দ্বিগুণের বেশি শেয়ার পেয়েছেন প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা। তারা ১০ হাজার টাকার আবেদনে ১২৮টি করে শেয়ার পেয়েছেন। নতুন নিয়মের আইপিওতে দ্বিতীয় কোম্পানি হিসেবে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হলো। আইপিওর নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী আবেদন করা প্রত্যেক বিনিয়োগকারী শেয়ার পাচ্ছেন। আইপিও আবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিনিয়োগকারীদের সমানুপাতিক হারে এই শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।

আইপিওর নতুন নিয়মে প্রথম কোম্পানি হিসেবে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হয়। যেসব দেশীয় সাধারণ বিনিয়োগকারী সোনালী লাইফের আইপিওতে ১০ হাজার টাকার আবেদন করেন তারা ১৭টি করে শেয়ার বরাদ্দ পান। সে হিসাবে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের আইপিওতে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে অনুমোদন নিয়ে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার ১৩ থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আইপিও আবেদন গ্রহণ করে। আইপিওতে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম নির্ধারণ করা হয় ২৯ টাকা। এই দামে আইপিওতে একজন বিনিয়োগকারীর সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার আবেদন করার সুযোগ ছিল। এর আগে কোম্পানিটিকে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ২২৫ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলনের অনুমোদন দেয় বিএসইসি।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.