স্বেচ্ছাসেবকলীগের কমিটি থেকে রাজাকার পুত্রকে অব্যাহতি

দলের মধ্যে কোন অনুপ্রবেশকারী রাজাকার বা স্বাধীনতা বিরোধী চক্র থাকতে পারবে না- বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি

0

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তীব্র সমালোচনার মুখে জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক কমিটি থেকে ৮ নং সদস্য খাইরুল ইসলামকে অব্যাহতি দিয়েছে। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে ওই সদস্য খাইরুল ইসলামের বাবা ঈশ্বরদী পৌর এলাকার মশুড়িয়াপাড়ার মরহুম আবুল হোসেন রাজাকার ছিলেন।

দলীয় সূত্র জানায়, গত ৩১ জুলাই জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করে। গত রোববার দুপুরে সদ্য ঘোষিত উপজেলা কমিটির আহবায়ক কমিটির সুপারিশে পাবনা জেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত একপত্রে অভিযুক্ত খাইরুল ইসলামকে অব্যাহতি প্রদান করে। ঈশ্বরদী আহবায়ক কমিটির আহবায়ক মাসুদ রানা ও যুগ্ম আহবায়ক সজিব মালিথা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১২ বছর পর এই কমিটি গঠন করা হয়। ঘোষিত আহবায়ক কমিটিতে অনুপ্রবেশকারীদের খোঁজ নিতে গিয়ে তারা রাজাকারপুত্র এই কমিটিতে রয়েছে বলে নিশ্চিত হন। এ নিয়ে দলের মধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা হয়। বিষয়টি ঈশ্বরদীতে বেশ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং প্রতিকার চেয়ে পাবনা-৪(ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস ও পৌর মেয়র ইছাহক মালিথার দৃষ্টিতে আনেন।

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক মাসুদ রানা জানান, সদ্য কমিটি ঘোষিত হওয়ার পরপরই চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পরে জেলা কমিটির হস্তক্ষেপে রোববার তাকে কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। যুগ্ম আহবায়ক সজিব মালিথা বলেন, দীর্ঘদিন পর তড়িঘড়ি করে কমিটি ঘোষণা করায় দলের মধ্যে হাইব্রিডদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। খাইরুল ইসলাম মৃত রাজাকার আবুল হোসেনের ছেলে জানার পর তাকে পাবনা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে। আশা করি আর কোন সমস্যা হবে না।

এ ব্যাপারে জেলার সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক এক মেয়রের সুপারিশে রাজাকারের ছেলে খাইরুল ইসলাম কমিটিতে এসেছে। জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সঠিকভাবে যাচাই-বাচাই না করে ঈশ্বরদীতে কমিটি দেওয়া আমাদের ভুল হয়েছে। রাজাকারের ছেলে কমিটিতে থাকায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তাই তাকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সম্পাদক মেয়র ইছাহক আলী মালিথা জানান, যে বা যারাই স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারের ছেলেকে আওয়ামীলীগ বা অঙ্গ সহযোগী সঙগঠনের মধ্যে প্রবেশ করে অন্যায় করেছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে।

আর পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, খাইরুল ইসলামই শুধু রাজাকারের ছেলে নয়। অনেক রাজাকারের ছেলে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী হয়ে পদপদবী ব্যবহার করছে। আওয়ামী লীগ থেকে রাজাকার পরিবারের সদস্যদের বের করে দেয়ার তালিকা হচ্ছে। দলের মধ্যে কোন অনুপ্রবেশকারী রাজাকার বা স্বাধীনতা বিরোধী চক্র থাকতে পারবে না বলে দাবী করেন এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.