উন্নয়নের মহাসড়কে পটুয়াখালী
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সাগরকন্যা খ্যাত পটুয়াখালী ! অপার সম্ভাবনাময় এ জেলাটি পুরাতন ১৯ জেলার আটটি হলেও উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ছিল সবার পেছনে। বর্তমান সরকারের গত তিন মেয়াদে পটুয়াখালী জেলার ৮টি উপজেলাই এখন উন্নয়ন অগ্রযাত্রার মহাসড়কে। হাজার হাজার কোটি টাকার এক একটি প্রকল্পের কাজ চলমান এ জেলায়। বন্দর, ইপিজেড, বিদ্যুত, পর্যটন, কৃষি, মৎস্য, রেল, সড়ক যোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে সরকারের একাধিক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব কাজের কোন কোনটির কাজ চলমান আবার অনেকগুলোর কাজ শেষ হয়েছে।
কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র, পায়রা বন্দর, পায়রা ব্রিজ, পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র, শেখ হাসিনা সেনানিবাস, সাবমেরিন ল্যান্ডিং স্টেশন, মহিপুর মৎস্য অবতন কেন্দ্র, ইপিজেডসহ একাধিক মহাপ্রকল্পের কাজ চলছে পটুয়াখালী জেলায়। এক কথায় পিছিয়ে থাকা পটুয়াখালী জেলা এখন সবার আগে।
কুয়েত উন্নয়ন তহবিলের এক হাজার ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে কুয়াকাটা-পটুয়াখালী-বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের সেতুর নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে প্রায় শতভাগ শেষ হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে পটুয়াখালীবাসীর স্বপ্নের ‘পায়রা সেতু’ যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার লক্ষ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের অধীনে চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। পায়রা সেতু খুলে দেয়া হলে মাওয়া থেকে পটুয়াখালী এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরসহ কুয়াকাটার সঙ্গে সারাদেশের ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকা থেকে কুয়াকাটার সড়কপথে দূরত্ব কক্সবাজারের চেয়ে অর্ধেকে নেমে আসবে।
পটুয়াখালী জেলার ছোট্ট একটা উপজেলা দুমকি। এখানকার কৃষি কলেজকে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ২০০০ সালের ৮ জুলাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করেন। যার নাম দেয়া হয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)। ৮৯.৯৭ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিদ্যাপিঠ। রয়েছে নয়টি ফ্যাকাল্টি। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে আটটি আধুনিক আবাসিক ছাত্রাবাস। উপক‚লের কৃষি, মৎস্য ও দুর্যোগ নিয়ে এখানে চলে নানা গবেষণা। যা এ অঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ।
পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের চরহায়দার, চরবোথাম ও চর বাঁশবাড়ীয়া মৌজায় ১ হাজার ৪৪ দশমিক ৩৬ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ বীজ ভাণ্ডার। যা বীজ উৎপাদন খামার প্রকল্প নামে পরিচিত। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
দক্ষিণাঞ্চলের কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি, চর এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং প্রকল্প এলাকার জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করার উদ্দেশ্য মূলত : বীজ উৎপাদন খামার প্রকল্পের গড়ে তোলা হয়।
সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে পটুয়াখালী জেলা শহরটি এখন অনেকটাই ব্যস্ততম একটি শহরে পরিণত হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে অদূরেই থাইল্যান্ড কিংবা সিঙ্গাপুরের আদলে একটি উন্নত শহরে পরিণত হবে পটুয়াখালী। এমন ভাবনা সামনে রেখে পটুয়াখালী জেলা শহরের সঙ্গে এর আশপাশের ইউনিয়নগুলোকে জেলা শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করা ও জলাবদ্ধতা নিরসনে শহরের খালগুলোকে প্রবাহমান করতে বেশকিছু আধুনিক এবং দৃষ্টিনন্দন ১২ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। চলতি বছরের মধ্যে এসব সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শতবর্ষ পরিকল্পনাকে বাস্তরে রূপ দিতে গ্রামেও শহরের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এবং খাল ও জলাধারগুলোকে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেই এই ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এমন গুরুত্ব বিবেচনা করে মোট ১২টি সেতু নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে অনেকগুলোর শুরু হয়ে গেছে। এছাড়া পটুয়াখালী জেলা শহরের প্রবেশদ্বার চৌরাস্তা থেকে সার্কিট হাউস পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা, হাটার পথ, ড্রেন, রাস্তা, সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাইটিং করা, লেকসহ সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধার একটি পৌরভবন নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পটুয়াখালী পৌরসভায় বর্তমানে শত কোটি টাকার ওপরে উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার পশ্চিমে পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ সড়কের পাশে ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর এলাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৪৩ কোটি ৫৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৩ দশমিক ৬৮ একর জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে কোস্টগার্ডের প্রশিক্ষণ ঘাঁটি। নাম দেয়া হয় সিজি বেইজ অগ্রযাত্রা। এই ঘাঁটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে গণপূর্ত অধিদফতর। প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে ১৯টি ভবন ও ৭টি স্থাপনা রয়েছে। পটুয়াখালীতে সিজি বেজ অগ্রযাত্রা প্রশিক্ষিত সদস্যরা উপক‚লীয় জেলেদের নিরাপত্তায় যথাযথ ভ‚মিকা রাখার পাশাপাশি সমুদ্র পথকে নিরাপদ রাখতে সক্ষম হবে।
এছাড়া পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুরে পচাকোরালিয়া মৌজায় ইপিডে নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসনের কাছে ৪১০ একর ভ‚মি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সাগরকন্যাখ্যাত পটুয়াখালীতে চলছে সরকারের বিস্ময়কর উন্নয়ন। এ জেলার কলাপাড়া হতে চলেছে বাংলাদেশের সিঙ্গাপুর। ইতোমধ্যে ওই জনপদের দৃশ্যপট বদলে গেছে। দেশের তৃতীয় ‘পায়রা সমুদ্রবন্দর’ নির্মাণ করা হয়েছে। এখন নৌপথে চলছে পণ্য খালাশের কার্যক্রম। দেশের বৃহৎ ১৩২০ মেগাওয়াট ‘পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র’ নির্মাণ করা হয়েছে। যার থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। নির্মাণাধীন রয়েছে রুরাল পাওয়ার কোম্পানির আরেকটি বিদ্যুত কেন্দ্র। চলমান রয়েছে শের-ই-বাংলা নৌঘাঁটি। একাধিক কোল টার্মিনাল। কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ নদীর কোল ঘেঁষে এসব নির্মাণ চলছে। এসব উন্নয়ন কাজের সঙ্গে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার উন্নয়নে তৈরি করা হয়েছে মাস্টারপ্ল্যান। সাগরপারের এই জনপদের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনারবাংলা গড়ার মধ্য দিয়ে এতদাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রায় এক অভ‚ত পরিবর্তনের ধারা বইয়ে দিয়েছেন। ২০১২ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে বাংলার উন্নয়ন জননী শেখ হাসিনা কলাপাড়ায় দিনভর সফর করে খেপুপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ মাঠের জনসভায় যেসব উন্নয়নের ঘোষণা দিয়েছিলেন তা এক এক করে বাস্তবায়ন করেছেন, এখনও অসমাপ্তগুলো নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। যেন বদলে যাওয়া জনপদে পরিণত করেছেন পটুয়াখালীকে। এসব উন্নয়ন কাজে জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ক্ষতিপূরণের নগদ অর্থ ছাড়াও পাকা সেমিপাকা ভবন দিয়ে বসবাসের সুযোগ করে দিচ্ছেন। উন্নয়ন কর্মের পাশাপাশি এসব মানুষের জীবনযাত্রার অগ্রগতি করছেন। বিভিন্ন শ্রেণীপেশার এই অদক্ষ মানুষকে কর্মদক্ষ করতে পুনর্বাসনের পাশাপাশি প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে দক্ষ জনগোষ্ঠীতে পরিণত করছেন।
দেশের তৃতীয় পায়রা সমুদ্র বন্দর ॥ দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা এখন কর্মচঞ্চল মানুষের পদচারণায় মুখরিত রয়েছে। এখানে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের অংশগ্রহণে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। দিনরাত চলছে উন্নয়ন কর্মের ধারা। স্থানীয় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের অন্তত হাজার মানুষ এ কর্মযজ্ঞে শামিল হয়েছেন। হয়েছে এখানকার হাইলা-কামলা শ্রেণীর অন্তত পাঁচ শ’ অদক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান। ২০১৩ সালের ১৯ নবেম্বরে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতের ছোঁয়ায় শুরু হওয়া পায়রা বন্দরের এ কর্মযজ্ঞের ধারা চলবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। পূর্ণাঙ্গ সমুদ্র বন্দরে উন্নীতের এ ধারা বইছে এ জনপদে। মাত্র সাতবছর আগে সন্ধ্যায় ঘুট ঘুটে অন্ধকারে নিমজ্জিত জনপদ, শিয়ালের ডাক ছাড়া কিছুই শোনা যেত না। রাতে তো দূরের কথা দিনেও পদচারণা ছিল না কোন মানুষের। ফেলনা নদীর পাশের বনজঙ্গলে ঘেরা কলাপাড়ার টিয়াখালীর এ জনপদ এখন পরিণত হয়েছে আলোকিত জনপদে। ফ্ল্যাড লাইটের আলোর ঝলকানিতে চোখ কুচকে যায়। চায়ের পিয়াস মেটানোর সুযোগ ছিল না, সেখানে এখন কফির তেষ্টা মেটায় মানুষ। নিত্য পদচারণা থাকছে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীর। ফেলনা, অনাবাদি জমি পরিণত হয়েছে সোনার খনিতে।
আনুষ্ঠানিকভাবে এ বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট। এরপর থেকে নৌপথে মূল চ্যানেলে পণ্যবাহী মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাশ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ফি মাসে অন্তত পাঁচ থেকে ১০টি জাহাজ পণ্য খালাস করছে। কর্মব্যস্ত যেমন এ বন্দরের নৌ-পথ, তেমনি কর্মব্যস্ত বন্দর এলাকার স্থলপথ। ইতোমধ্যে অন্তত কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে এ বন্দর থেকে। বর্তমানে মূল চ্যানেলে চলছে ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর কাজ। ৭৫ কিলোমিটার এলাকা ১০০-১২৫ মিটার প্রস্থ এ চ্যানেলটিতে ছয় দশমিক তিন মিটার নাব্যতা বজায় রাখতে ১৮ মাসব্যাপী এই খনন কাজ চলবে। পাশাপাশি চারিপাড়ায় প্রথম জেটিসহ টার্মিনাল নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। যেখানটায় সরাসরি মাদার ভেসেল ভিড়তে পারবে বলে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন।
১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র ॥ জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরী দেশের প্রধানমন্ত্রী মহীয়সী নারী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে ভুলিয়ে দিয়েছেন বিদ্যুত বিভ্রাট কী। এক সময়, দশ বছর আগে; রাত-দিন মিলিয়ে ৪-৫ ঘণ্টা বিদ্যুত মিলত না। দেশের মানুষের কাছে বিদ্যুত বলতেই এক ভয়ানক ভোগান্তির নাম ছিল। রাত কাটত বিদ্যুতবিহীন, নির্ঘুম। সেসব এখন গল্পের মতো; তবে পেছনে ফেলে আসা স্মৃতি হাতড়ে বেড়ানো তিক্ত অভিজ্ঞতা। এসব অতীত মানুষ ঘাটতে চায় না। জাতির পিতার দেশ এগিয়ে নেয়ার স্বপ্নের সেই মহান দায়িত্ব নিয়ে দুর্বার গতিতে উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ এগিয়ে চলছে। নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দিয়েছেন। ভুলিয়ে দিয়েছেন বিদ্যুতের লোডশেডিং শব্দটি। শিল্প উদ্যোক্তারা এখন আর ভোগেন না বিদ্যুত না পাওয়ার শঙ্কায়। আর বিদ্যুতের অভাবনীয় সাফল্যের দুয়ার খুলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ উদ্যোগে। দেশের এ পর্যন্ত সর্ববৃহৎ ‘পায়রা’ এই বিদ্যুত প্লান্টের উৎপাদিত বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ চলমান রয়েছে। দেশের বিদ্যুত চাহিদাকে ছাপিয়ে বাড়তি উৎপাদনে এখন দেশ। আর দক্ষিণের পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ পাড়ের এই জনপদের রাত আলোকিত হয় পায়রার বিদ্যুত উৎপাদনের মধ্য দিয়ে। এটি এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি এই পাওয়ার প্লান্টের প্রথম ইউনিট চালু করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদন শুরু করে ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট। এখন পুরো ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্লান্টটি চালু রয়েছে। জাতীয় গ্রিডে চাহিদা মাফিক বিদ্যুত সরবরাহ করে আসছে। এ তথ্য নিশ্চিত করলেন বিসিপিসিএল এর সহকারী প্রকৌশলী (তড়িৎ) জাহিদুল ইসলাম।
বদলে যাবে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা \ বদলে যাবে কুয়াকাটা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভ‚মি কুয়াকাটাকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরে সরকার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এরমধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সেতুসহ মহাসড়ক নির্মিত হয়েছে। ইতোমধ্যে কুয়াকাটার মাস্টারপ্ল্যান চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে। চমকে দেয়ার মতো। উদ্বেলিত হওয়ার মতো পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। কুয়াকাটার উন্নয়নে লতাচাপলী মৌজার দশ হাজার দুই শ’ ৭৯ একর জমি সংরক্ষিত জোনের আওতায় নেয়া হয়েছে। পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের খাস জমির দখলদার উচ্ছেদ করার। এসব জমিতে নির্মিত হবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের স্থাপনা। সরকারী সূত্র মতে কুয়াকাটায় সরকার নির্মাণ করতে যাচ্ছে একটি আন্তর্জাতিকমানের স্টেডিয়াম। একটি বিশ্ববিদ্যালয়। প্লে-গ্রাউন্ড, কনভেনশন সেন্টার। বিমানবন্দর। ওয়াচ টাওয়ার। আধুনিক হাসপাতাল। সুপার মার্কেট। সরকারী-আধাসরকারী সকল অফিস। মিউজিয়াম। ফায়ার সার্ভিস।
দর্শনীয় শহীদ মিনার, হেলিপ্যাড। চালু করা হবে হিস্টরিক সাইট। নির্মাণ হবে বাসটার্মিনাল, লঞ্চঘাট। বিশেষ মার্কেট। ইকোপার্ক। মৎস্য মার্কেট। মেরিন পার্ক, মেরিন ড্রাইভ, টেনিস পার্ক। এমনকি সাবজেল পর্যন্ত নির্মিত হবে। পর্যটন, গৃহায়ন ও গণপূর্তসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আলীপুর মৎস্যবন্দর থেকে কুয়াকাটাগামী মহাসড়কের তুলাতলী স্পট থেকে একটি ডাবল লেনের উন্নত সড়ক পর্যটন পল্লী গঙ্গামতি পর্যন্ত যাওয়ার জন্য নির্মাণের পরিকল্পনা চ‚ড়ান্ত করেছে সরকার। কলাপাড়া থেকে কুয়াকাটা মহাসড়কের ২২ কি.মি. অংশে তিন নদীতে তিনটি আধুনিক সেতু নির্মিত হয়েছে। ফেরি পারাপারের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। বর্তমানে কুয়াকাটায় যেতে তিনটি সেতু পার হতে হয়। যে কারণে উপজেলা সদর থেকে বিকল্প পথে কুয়াকাটায় যেতে ইতোমধ্যে বালিয়াতলী পয়েন্টে আন্ধারমানিক নদীতে নির্মাণ হয়েছে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু। এটি দুই এক মাসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা।