নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী শাখারভের জন্য রুশ সরকারের বিশেষ সম্মাননা
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বহুল আলোচিত শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী রুশ নিউক্লিয়ার পদার্থবিদ আন্দ্রেই শাখারভকে বিশেষ সম্মাননা জানালো দেশটির সরকার। শাখারভের জন্মশরবার্ষিকী উদযাপন কর্মসূচীর সমাপ্তি ঘোষণা করে গত ১০ নভেম্বর বিশ্ব বিজ্ঞান দিবসে রাশিয়ার বিখ্যাত মায়াক একাডেমির নামকরন করা হয়েছে এই বিজ্ঞানীর নামে।
শাখারভ রুশ হাইড্রোজেন বোমা আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বিশ্বে নিরস্ত্রীকরণ এবং মানবাধিকারের একজন সুস্পষ্ট প্রবক্তা হিসেবে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। সোভিয়েত সরকারের সঙ্গে মতবিরোধের জের ধরে দেশত্যাগ করে তিনি তখন বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন।
রাশিয়ার নিঝনি নভগোরাদের মায়াক একাডেমি অবস্থিত, যা রুশ রাস্ট্রীয় পরমানু শক্তি কর্পোরেশন রোসাটম এবং নিঝনি নভগোরাদ সরকারের একটি যৌথ প্রকল্প। এই অঞ্চলটি সারোভে অবস্থিত এবং বর্তমানে অল-রাশিয়ান সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইন্সটিটিউট অফ এক্সপেরিমেন্টাল ফিজিক্স হিসেবে পরিচিত প্রতিষ্ঠানে শাখারভ তার কর্মজীবনের একটি বড় অংশ অতিবাহিত করেন। নিঝনি নভগোরাদ রাশিয়ার পারমানবিক শিল্পের আতুরঘর হিসেবে অতি পরিচিত।
নতুন নামকরণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রদত্ত স্বাগত বক্তব্যে রুশ বিজ্ঞান একাডেমির প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার সের্গেইয়েভ জানান যে, রসাটম এই নতুন নামকরনের প্রস্তাব গ্রহণ করলে শাখারভের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটি তা সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন করে। তিনি আরো বলেন যে শাখারভ ছিলেন নিঃসন্দেহে একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন বিজ্ঞানী এবং তিনি ভবিষ্যতের রুপরেখা প্রনয়ন করে গেছেন।
রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচোভ বলেন, “অধ্যাপক শাখারভ বিংশ শতাব্দীর অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ক্ষমতা ও সুরক্ষা সুসংহতকরনে তার গবেষণা গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেছে”।
আন্দ্রেই শাখারভের নাতনী মারিনা শাখারভা- লিবারম্যান বিজ্ঞানে শাখারভের অবদানের কথা স্মরণ করে আশা প্রকাশ করেন যে মায়াক একাডেমি নতুন অনেক প্রতিভা খুঁজে বের করতে সক্ষম হবে। মারিনা জানান শাখারভ নিয়ন্ত্রিত নিউক্লিয়ার ফিউশন রিয়্যাক্টর ‘টকামাক’ ধারনাটি প্রস্তাব করেন। এছাড়াও তিনি আয়ন ক্যাটালাইসিস ধারণারও উদ্ভাবক যা বর্তমান পদার্থবিদ্যার নতুন একটি শাখার ভিত্তি তৈরি করেছিল।
নামকরণ অনুষ্ঠান শেষে কমিশন অফ দা রাশান ফেডারেশন ফর ইউনেস্কো এর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথিতযশা রুশ এবং বিদেশী বিজ্ঞানীদের অংশগ্রহণে শান্তি ও উন্নয়নে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান শীর্ষক একটি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার উপপাদ্য বিষয় ছিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নীতিগত দিক এবং আবিষ্কারের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের দায়িত্ববোধের সীমা।