নিরাপদ খাদ্য মানুষের সাংবিধানিক অধিকার : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের এই অধিকার পূরণকল্পে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদন ও পুষ্টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা গবেষণার ওপর এখন গুরুত্ব দিয়েছি।‘নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩’ এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনসাধারণের জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য খাদ্য উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাতকরণে সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। জনসাধারণের সচেতন উপলব্ধি ও সমন্বিত অংশ গ্রহণের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য আইনের প্রয়োগ ও নিরাপদ খাদ্য আন্দোলন বেগবান করা সম্ভব।’
প্রধানমন্ত্রী আজকের ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২২’ উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণের প্রত্যয় নিয়ে পঞ্চমবারের মতো ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২২’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘সুস্বাস্থ্যের মূলনীতি, নিরাপদ খাদ্য ও স্বাস্থ্যবিধি’ যথাযথ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের পাশাপাশি জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। ভেজাল ও দূষণমুক্ত নিরাপদ খাদ্যের প্রাপ্তির জন্য আমরা ‘নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩’ প্রণয়ন করে ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠা করি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি, ভেজাল ও দূষণবিরোধী অভিযান পরিচালনা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা কার্যক্রম ও দেশী-বিদেশী সংস্থার সাথে সমন্বয় করে সফলভাবে এগিয়ে চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্যের উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে খাদ্যের নিরাপত্তা ও পুষ্টিমান বজায় রাখা জরুরি। দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট। যিনি উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত, তার যেমন সচেতনতা প্রয়োজন; তেমনি যিনি ভোগ করবেন, তার ক্ষেত্রেও নিরাপত্তার বিষয়টি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তাই সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অংশীজনদের প্রায়োগিক ভূমিকার মাধ্যমে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সক্ষম হবেন। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের পর মাত্র ৯ মাসের মধ্যে আমাদের একটি সংবিধান উপহার দেন, যে সংবিধানে তিনি মৌলিক বিষয়গুলো যেমন: অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সেখানে খাদ্যটাকেই সবচেয়ে বেশি তিনি গুরুত্ব দেন। সেই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধু পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে এ দেশের গণমানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমে সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন এঁকেছিলেন। সেই স্বপ্নের আলোকে বাস্তবায়িত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘রূপকল্প-২০২১’।
‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়ন দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। তিনি ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।