সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত রাখুন

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত রাখতে কোস্ট গার্ডের সদস্যদের সব সময়ে দেশপ্রেম ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন বলে আশা করি।

গতকাল সকালে ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৭তম জয়ন্তী ও কোস্ট গার্ড দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকার শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সদর দফতরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৯৪ সালে সংসদে কোস্ট গার্ড বিল উত্থাপনের বিষয়টি তুলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তখন বিরোধী দলে ছিলাম। এত বেশি সংসদ সদস্য ছিল না। আমরা নিয়মিত হাউজে উপস্থিত থাকতাম। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা সব সময় পার্লামেন্ট প্র্যাকটিসে আন্তরিক ছিলাম। আমরা জানতাম সরকারপক্ষ কখনই এই বিল পাস করবে না। বিলটি (কোস্ট গার্ড বিল) যখন নিয়ে এলাম, তখন কণ্ঠভোট আসে। আমরা নিজেরা গুনে দেখি যে, আমরা সংখ্যায় বেশি। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এক সংসদ সদস্য ডিভিশন ভোটের দাবি করেন। এই ভোটে বিরোধী দল জয়লাভ করে। তখনই এই আইনটি পাস হয়।

এটি একটি ঐতিহাসিক ব্যাপার। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান চার কোস্ট গার্ড সদস্যের হাতে তাদের সাহসিকতা ও বিশেষ কৃতিত্বের জন্য পদক তুলে দেন। পরে কোস্ট গার্ডের কর্মকান্ড নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়। প্রধানমন্ত্রী কোস্ট গার্ড সদস্যদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন এবং তাঁকে রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানানো হয়। কোস্ট গার্ড সদস্যদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকা এবং সামুদ্রিক জলসীমার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা, মৎস্যসম্পদ রক্ষা, দেশের সমুদ্র বন্দরের নিরাপত্তা বিধান, চোরাচালান ও মাদকবিরোধী অভিযান, ডাকাত দমনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলীয় জনগণের জানমাল রক্ষায় কোস্ট গার্ডের ভূমিকা উত্তরোত্তর বাড়ছে। জাটকা নিধন রোধে এবং মা ইলিশ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের ভূমিকা প্রশংসনীয়। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানগত সুবিধা এবং এ অঞ্চলের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা চাই সমুদ্রে আমাদের যে সম্পদ আছে, সে সম্পদ আমাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগুক, সেটা আমাদের বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এ অঞ্চল, বিশেষ করে বঙ্গোপসাগর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখান থেকে এটা আমাদের অবশ্যই চিন্তা করতে হবে, আমাদের এ অঞ্চলের সব নিরাপত্তা রক্ষা করা প্রয়োজন, সে জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়াও দরকার। সেটা আমরা করে যাচ্ছি।

কোস্ট গার্ডের উন্নয়নে সরকার প্রয়োজনীয় সব করবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাহিনীর ধারাবাহিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং আপনাদের সার্বিক কল্যাণে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা অবশ্যই আমাদের সরকার করে যাবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে তুলতে আমরা কোস্ট গার্ডকে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের নিজস্ব জনবল নিয়োগ কার্যক্রম এবং ফোর্স পুনর্গঠনের মাধ্যমে এ বাহিনীর সক্ষমতা অর্জনে আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠন করে কোস্ট গার্ডের জনবল বৃদ্ধি করেছি। ব্লু-ইকোনমি ও গভীর সমুদ্রে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য এ বাহিনীর রূপকল্প-২০৩০ ও ২০৪১ অনুযায়ী জাহাজ, সরঞ্জামাদি ও জনবল আরও বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব ইয়ার্ডে জাহাজ তৈরির সক্ষমতা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে খুব শিগগিরই এ বাহিনীতে উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ, হোভ্যারক্র্যাফট ও দ্রুতগতি সম্পন্ন বোট যুক্ত হতে যাচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

গত ১৩ বছরে কোস্টগার্ডের জন্য ৭৭টি জলযান নির্মাণ ও সংযোজন করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরও জাহাজ নির্মাণ করা হবে। ভবিষ্যতে এই বাহিনীকে আরও আধুনিক যুগোপযোগী করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের সমুদ্রসীমা রক্ষা এবং নদীমাতৃক দেশকেও নিরাপদ করার জন্য আমাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একান্তভাবে দরকার। সেই দায়িত্ব কোস্টগার্ড যথাযথভাবে পালন করে যাচ্ছে। কারণ আমাদের এই অঞ্চল (বঙ্গোপসাগর) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চলের সব নিরাপত্তা রক্ষা করা প্রয়োজন এবং সেদিকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। সেটা আমরা যথাযথভাবে করে যাচ্ছি।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.