অবশেষে ইবির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকের চাকরী ফিরে পেতে যাচ্ছেন পাবনার ছেলে আরিফুল !

0

পাবনা প্রতিনিধি : অবশেষে পাবনার ছেলে আরিফুল কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়( ইবির) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে চাকরী ফিরে পেতে যাচ্ছেন । ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবির) অর্থনীতি বিভাগে ২০১৮ সালে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পরীক্ষায় ৬১ জনের মধ্যে প্রথম হয় পাবনার সন্তান আরিফুল ইসলাম । তখন সিন্ডিকেট সভায় তার নিয়োগের বিষয় চুড়ান্ত হয় । তখন ছাত্র শিবির তকমায় আটকে যায় তার নিয়োগ প্রক্রিয়া।

পরে আদালতের নির্দেশে দীর্ঘ চার বছর পর নিয়োগ পেতে চলছেন পাবনার ছেলে আরিফুল ইসলাম । আরিফুল ইসলাম পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের মালফিয়া গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিন বিশ্বাসের সন্তান । ইসলামী বিশ্ববিদ্রালয়(ইবি) অর্থনীতি বিভাগের মেধাবী ছাত্র ছিলেন আরিফুল ইসলাম ।

২০১৮ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি ইবিতে তার শিক্ষক হিসেবে যোগদানের কথা ছিল । তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক শিক্ষক তার সুপারিশে চাকরী হয়েছে জানিয়ে ঘুষ দাবি করেন । আরিফ তা দিতে অস্বীকৃতি জানান । ওই শিক্ষকের ষড়যন্ত্রে ছাত্রলীগের তৎকালীন কয়েকজন নেতা আরিফুল কে ছাত্র শিবিরের তকমা লাগিয়ে দিলে নিয়োগ স্থগিত হয় ।

২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক নিয়োগে বোর্ড গঠন করা হয় । এর প্রধান ছিলেন তৎকালীন উপাচার্য হারুন উর রশিদ আশকারি । সদস্য অধ্যাপক আবুল বারকাত , ড.আব্দুল মুঈদ ও অধ্যাপক সেলিম তোহা । এই বোর্ডের নিয়োগ পরীক্ষায় নির্বাচিতদের একই বছরের ১৭ ই ফেব্রুয়ারি যোগদানের কথা ছিল । কিন্তু আরিফের যোগদান আটকে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পদত্যাগ করেন ড. আব্দুল মঈদ ।

চাকরী ফিরে পেতে যাচ্ছে এমন সংবাদ জানান পর আরিফুল ইসলাম এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন আমি সর্বপ্রথমেই বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড.আব্দুস সালাম স্যারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি আকর্শন করছি যেন আমার জীবন থেকে যে চারটি বছর হারিয়ে গেছে , যে আর্থিক , সামাজিক ও মানসিক ক্ষতিকর সম্মুখীন আমি হয়েছি তার প্রতিকার যেন পাই ।

আরিফুল ইসলাম আরো জানান তিনি রাজনীতির শিকার । তিনি বলেন আমি ছাত্র শিবির করি না । আমার পরিবার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি । সেটার প্রমান পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন । তাই সিন্ডিকেট সভায় আমার নিয়োগ অনুমোদন করা হয়েছে ।

উল্লেখ্য ইবি প্রশাসনকে গত ১৮ডিসেম্বর পাবনা পুলিশের ডিএসবি শাখা একটি প্রতিবেদন দিয়েছে । প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোন রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি । আরিফুল ইসলাম চাকরী ফিরে পেতে গত ৫ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে একটি রিট করেন । রিটের পর বিচারক অবিলম্বে আরিফুল ইসলাম কে ১০১৮ সাল থেকে ইবির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে পদায়নের নির্দেশ দিয়েছেন ।

চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) সিন্ডিকেটের ২৫৪তম সভা হয় । সেই সভায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ ১৮ জনের মধ্যে ১৭ জন আরিফুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়ার পক্ষে মতামত দেন । অধ্যাপক আব্দুল মঈদ বলেন আরিফুল তার বিভাগের সেরা মেধাবী ছাত্র । অথচ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার জীবনের ৪ বছর কেড়ে নেওয়া হয়েছে ।

রেজিষ্টার আতাউর রহমান বলেন, আদালতের রুলের কাগজ ও পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছেন । সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যলয় (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন আরিফুলের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে তার নিয়োগে আর কোন বাধা নাই।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.