পরনির্ভরশীলতার অচলায়তন আমরা ভাঙতে পেরেছি

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাহস নিয়ে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করার ফলে আজকে বাংলাদেশের সম্মানটা ফিরে এসেছে। নইলে আমাদের দেশের সবার একটা পারসেপশন ছিল, একটা মানসিকতা ছিল যে, আমরা অন্যের অর্থায়ন ছাড়া কিছুই করতে পারব না। এই যে একটা পরনির্ভরশীলতা, পরমুখাপেক্ষিতা-এটাই কিন্তু আমাদের মাঝে ছিল। একটা দৈন্য ছিল। বিশ্বব্যাংক যখন এই টাকাটা তুলে নিয়ে গেল, আমরা অন্তত সেই জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছি। সেই অচলায়তন ভেঙে আমরা যে একটা আত্মমর্যাদাশীল জাতি, আমরা যে পারি, সেটা প্রমাণ করতে পেরেছি।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী তার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। পদ্মা সেতু ইস্যুতে বিশ্বব্যাংক বা বিরোধীরা দুঃখ প্রকাশ করেছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কথা হলো-‘নিজের ভাড় ভালো না, গোয়ালার ঘির দোষ দিয়ে লাভ কী?’

বিশ্বব্যাংককে আমি কী দোষ দেব। তারা বন্ধ করল কাদের প্ররোচনায়। সেটা তো আমাদের দেশেরই কিছু মানুষের প্ররোচনায় তারা বন্ধ করেছিল। এটাই তো বাস্তবতা। আর যারা বিভিন্ন কথা বলেছেন, তারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন, যদি তাদের অনুশোচনা থাকে। আর না থাকলে আমার কিছু বলার নেই।

আমার কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। বরং আমি ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই এজন্যই যে, এই ঘটনাটি ঘটেছিল বলেই আমরা এটা (নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু) করতে পেরেছি। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে টাকা বন্ধের ঘোষণা না দিলে আপনি কী নিজেই তাদের বাদ দিয়ে দিতেন-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা তো অতীত হয়ে গেছে। এটা নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।

তবে আমি যেভাবে হোক বাংলাদেশের মানুষ যাতে অপমানিত না হয় তার জন্য যা যা করণীয় তার সবই করতাম। তখন আমাদের নিজেদের অনেক লোকও চাচ্ছিল, তাদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করছিল। বারবার আমাকে এ প্রস্তব-সে প্রস্তাব দিচ্ছিল। সেজন্য আমাকে ধৈর্য ধরতে হয়েছে। কিন্তু আমার নিজের সিদ্ধান্ত ছিল। আমি নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম। যখন সময় হয়েছে তখনই বলেছি যে, ‘না আর চাই না’।

শত প্রতিকূলতার মধ্যেও পদ্মা সেতু নির্মাণে সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মানুষের কাছ থেকে যে অভূতপূর্ব সাড়াটা আমি পেয়েছিলাম, সেটাই কিন্তু আমার সাহস আর শক্তি। মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদেরই সাহসে এই পদ্মা সেতু আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।

দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের (দেশবাসী) সাহসে সাহসী হয়েই নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি। উৎসব সবাই করবেন কিন্তু প্রত্যেকে একটু ধৈর্য ধারণ করবেন এবং নিয়ম মানবেন এবং কোথাও কোনো দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখবেন। তিনি বলেন, যার যার জায়গা থেকে যেমনভাবে হোক এই উৎসবে সবাই শামিল হবেন-এটা আমাদের মর্যাদার বিষয় যে, আমরাও পারি। এটাই আমরা প্রমাণ করেছি, কাজেই সেভাবেই সবাই উৎসবে শামিল হবেন।

জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ওরা (বিএনপি) কাকে (নেতৃত্বে) নিয়ে নির্বাচন করবে, বলতে পারেন? ওদের (বিএনপি) জন্য কান্নাকাটি করে লাভ নেই। ওদের পুঁজিটা কী? বিএনপির কি একটাও যোগ্য নেতা নেই যাকে চেয়ারম্যান করতে পারে? তাহলেই তো (এখনকার মতো) দুরবস্থা হয় না।

আওয়ামী লীগকে গণমানুষের দল অভিহিত করে তিনি বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে করতে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা। কিন্তু আমাদের অন্য দলগুলোর কী অবস্থা? তাদের জন্ম কোথায়? প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া একজন সামরিক শাসক। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যায় জড়িত। ১৫ আগস্টের পর খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় এসে তাকে সেনাপ্রধান নিয়োগ দিয়েছিলেন। তারপর নিজেই নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করলেন। নিজেই একাধারে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি। পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খানের মতো।

তিনি বলেন, হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে (জিয়াউর রহমান) ক্ষমতায় থাকলেন। সেই ভোট কেমন হয়েছিল, মানুষ জানে। সেই জিয়া বিএনপি গঠন করলেন। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল থেকে নেতাদের নিয়ে। এ গাছের বাকল, ও গাছের ছাল নিয়ে ক্ষমতায় বসে তৈরি করা হলো দল। তিনি বলেন, আরেক সামরিক শাসক ক্ষমতায় বসে আরেকটি দল গঠন করলেন। এভাবে মিলিটারি ডিকটেররা ক্ষমতায় বসে দল গঠন করেছে।

কিন্তু আমি তো জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না। আমিই সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। সেটা করতে গিয়ে গ্রেনেড-বোমার মুখে পড়েছি। অনেক কষ্ট করেও গণতন্ত্র চর্চা করতে পেরেছি এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে বলেই আজ এ অবস্থায় আছি। এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, মানবাধিকার আমাদের শেখাতে আসবে কারা? যারা খুনিদের আশ্রয় দেয়! আর যে দেশে প্রতিনিয়ত স্কুলে গুলি হয়ে ছাত্রছাত্রী মারা যায়, রাস্তাঘাটে পুলিশ গলায় পাড়িয়ে মেরে ফেলে; তো তারা আমাদের কী মানবাধিকার শেখাবে?

‘হ্যাঁ, এগুলো নিয়ে তারা কথা বলবে আর আমাদের কিছু লোক এটা নিয়ে নাচবে। কিন্তু আমাদের যে আত্মবিশ্বাস আছে, আমরা সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই চলব। জনগণের শক্তি নিয়ে চলব। বাংলাদেশ কোনো চাপের মুখে কখনো নতি স্বীকার করেনি, করবেও না। সাজাপ্রাপ্ত আসামি কীভাবে ব্রিটিশ নাগরিক হলো : বিএনপি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, একটি দল তখনই জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করে যখন জানে, সেই দল নির্বাচনে জয়ী হলে কে হবে সরকারপ্রধান। এটি সবাই বিবেচনা করে। কিন্তু তারা কাকে দেখাবে?

এতিমের টাকা মেরে দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে? আমিই নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করেছি। নাকি তারা গ্রেনেড হামলার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি, যে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে ব্রিটিশ নাগরিক হয়ে আছে তাকে? তিনি বলেন, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়ে কীভাবে ব্রিটিশ নাগরিক হলো, তার খোঁজ করেন। সেই খোঁজ করলেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। এই নেতৃত্ব নিয়ে তারা ইলেকশন করবে কীভাবে, সেটিই বড় কথা। চেয়ারম্যান করতে পারে, এ রকম একটা যোগ্য নেতাও কি নেই?

শেখ হাসিনা বলেন, একটা ভালো শক্তিশালী দল করে দেন মাঠেই দেখা হবে। মাঠে আমরা দেখব। সেখানে ঠিক আছে জনগণ যাকে চায়। আমার কথা একটাই। স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ অনেক থাকে। কিন্তু ওই রকম সুযোগ নিয়ে আমি তো প্রধানমন্ত্রী হইনি কখনো।

আপনারা তদন্ত করুন : ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনো একটি ফাউন্ডেশনে ছয় মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ দিয়েছিলেন-এক আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্য সম্প্রতি এমন বক্তব্য দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত হবে কিনা-এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা সাংবাদিক। আপনারাও তো তদন্ত করতে পারেন কিন্তু করেন না। আপনারা তদন্ত করুন। একজন ব্যাংকের এমডি হয়ে কোনো ফাউন্ডেশনে এত অর্থ কীভাবে দেন? আপনারা অনুসন্ধান করুন। আমি (তদন্ত) করতে গেলে তো আবার বলবেন প্রতিহিংসাপরায়ণ।

তাই আপনারা খুঁজে বের করলেই ভালো হয়। ড. ইউনূসের আর্থিক অনিয়ম নিয়ে আরও অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কোন ব্যাংকে কত টাকা আছে, কোন ব্যাংক থেকে কত টাকা সরিয়ে নিয়েছেন, সেগুলো খুঁজে বের করুন।

কোনো ফাউন্ডেশন বা ট্রাস্ট করে তার টাকা কীভাবে ব্যক্তিগত হিসাবে চলে যায়? এক চেকে ছয় কোটি টাকা তুলে নিয়ে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা করে, সেই টাকা উধাও (ভ্যানিশ) করে দেওয়া হলো! এসব বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বেশিদিন আগের কথা তো নয়।

২০২০ সালের কথা। অ্যাকাউন্ট নম্বর তো আছেই। আপনারা অনুসন্ধান করুন, তথ্য বের করুন। তারপর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হলে আমরা নেব। জুজুর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই : পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করলেও বাংলাদেশের নামে বরাদ্দকৃত টাকা তারা ফেরত নিতে পারেনি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক কোনো অনুদান দেয় না। আমরা লোন নেই। যে টাকাটা বাংলাদেশের নামে স্যাংশন হবে, সেটা নষ্ট করার কোনো রাইট তাদের নেই। পদ্মা সেতু থেকে টাকা তারা বন্ধ করছে, কিন্তু ওই টাকা আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি। এই টাকা আমরা অন্যান্য প্রজেক্টে ব্যবহার করতে পেরেছি।

বিশ্বব্যাংক কোনো একটি দেশের একটি প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ দিলে দেশটি চাইলে অন্য প্রকল্পে ব্যবহার করতে পারে। এরা দাতা নয়। আমরা ভিক্ষা নেই না। তিনি বলেন, আমি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে ওই দাতা কথাটি বন্ধ করে দিলাম। আমি বলেছি, কীসের দাতা। এরা উন্নয়ন সহযোগী। গণমাধ্যমের বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা কিন্তু কারও থেকে ভিক্ষা নেই না। ঋণ নেই। সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধও করি। এটুকু ঠিক, সুবিধাটা স্বল্প সুদ। আমাদের কেউ করুণা করে না।

আমরা কারও করুণা-ভিক্ষা নিইনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় আমরা কনসোর্টিয়ামের মিটিংয়ে প্যারিসে যেতাম। আমি বললাম, প্রত্যেক দিন আমরা যাব কেন? ওরা এসে এখানে টাকা দিয়ে যাবে। আমি শুরু করলাম। আমরা ঢাকায় মিটিং করেছি। এই টেকনিক্যাল জিনিসগুলো জানা দরকার। আমাদের জুজুর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সাবেক যোগাযোগমমন্ত্রী আবুল হোসেনকে সরকার ও দলীয় পদে ফিরিয়ে আনা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সময়ই বলে দেবে, কী করব।

প্রয়োজনীয়তা দেখে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু : দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারের ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, সারা দেশে বিভিন্ন সেতু নির্মাণ করে সংযোগ তৈরি করেছি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দ্বিতীয়টার জন্য আয়োজন রয়েছে। তবুও আগে দেখতে হবে, এটার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? সেটা বিবেচনা করে করা হবে। নেতিবাচক মন্তব্যের জবাব : প্রশ্ন-উত্তরের আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ১৯৯৭ সালে জাপান সফরে পদ্মা ও রূপসা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করি। জাপান সরকার দুটি নদীর ওপরই সেতু নির্মাণে রাজি হয়।

যেহেতু পদ্মা অনেক খরস্রোতা ও বিশাল নদী, তাই পদ্মা নদী সমীক্ষা শুরু করে। আর রূপসা নদীর ওপর আমার অনুরোধের আগেই নির্মাণকাজ শুরু করে। ২০০১ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণের সমীক্ষার তথ্য আমাদের দেয়। শেখ হাসিনা বলেন, জাপানের সমীক্ষায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু নির্মাণের স্থান নির্বাচন করা হয়। এই সমীক্ষার ভিত্তিতে ২০১১ সালের ৪ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে আমি মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি। এরপর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের বিভিন্ন ধাপের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতু নিয়ে যারা নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন, তাদেরও কিছু বক্তব্য তুলে ধরে তার জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশা করি পদ্মা সেতুর মান নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না। এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগের বড় লিংক : প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুকে ঘিরে গড়ে উঠবে নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক। ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে। দেশে শিল্পায়নের গতি ত্বরান্বিত হবে।

পদ্মা সেতু এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগেরও একটি বড় লিংক। তাই আঞ্চলিক বাণিজ্যে এই সেতুর ভূমিকা অপরিসীম। তাছাড়া পদ্মার দুই পারে পর্যটন শিল্পেরও ব্যাপক প্রসার ঘটবে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা : সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্যার ঝুঁকির কথা তুলে ধরে সরকারের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বন্যা শুরু হয়েছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্যার ঝুঁকিটা আমাদের থাকে, পানিটা নেমে আসবে দক্ষিণ অঞ্চলে। সেজন্য আমাদের আগাম প্রস্তুতি আছে। সিলেট অঞ্চলে এবারের বন্যাকে ভয়াবহ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার সব থেকে ভয়াবহ বন্যা আমরা পেয়েছি, কিন্তু এটা আমাদের মোকাবিলা করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।

সিলেট অঞ্চলে এবারের ভয়াবহ বন্যার কথা তুলে ধরে সেখানে ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতার বিস্তারিত বিবরণ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি আগেই নির্দেশ দিয়েছিলাম, পানি যাতে দ্রুত নেমে যেতে পারে, প্রয়োজনে রাস্তা যেন কেটে দেয়। এটাও আমাদের একটা শিক্ষা, কোন জায়গা থেকে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে, কারণ আমাদের এখানে তো বন্যা আসবেই। সেটা চিহ্নিত করে রাখতে বলেছি, সেখানে ব্রিজ কালভার্ট এমনভাবে করে দেব, যাতে পানি জমা থাকতে না পারে।

ওই অঞ্চলে আরও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র করার পাশাপাশি বন্যার কথা মাথায় রেখে অবকাঠামো করার কথাও সরকারপ্রধান বলেন। বন্যার পর কৃষক যেন কৃষিকাজ করতে পারে, সেজন্য বীজ, সারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। সংবাদ সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রীর পাশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। করোনার কারণে দীর্ঘদিন পরে সরাসরি এই সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিকসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.