বিনা জরিমানায় আগের টিআইএনে রিটার্ন জমা দেয়া যাবে
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আয়কর বাড়াতে চলতি অর্থবছরে বিশেষ একটি উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। যেসব করদাতার শনাক্তকরণ নম্বরের (টিআইএন) বিপরীতে আয়কর রিটার্ন জমা হয়নি তাদের ২০২২-২৩ অর্থবছরে জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দিয়েছে এনবিআর। অর্থাৎ যারা কয়েক বছর আগে জরুরি কাজে টিআইএন নিয়েছেন, কিন্তু প্রতি বছর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক হলেও কোনোবারই রিটার্ন দেননি, তারা এবার রিটার্ন দিলে কোনো জরিমানা গুনতে হবে না। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সবাইকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় আনা হয়েছে। এনবিআরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এত দিন টিআইএন নেয়ার পর কেউ কোনো বছর রিটার্ন দাখিল না করলে, তাকে প্রতি বছরের জন্য সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হতো। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের হয়রানির ভয়ে মানুষ রিটার্ন দিতে আগ্রহী হতো না। বর্তমানে ৭৬ লাখ টিআইএনধারী রয়েছেন, তাদের মধ্যে মাত্র ২৬ লাখ টিআইএনধারী রিটার্ন জমা দেন। বাকি ৫০ লাখ টিআইএনধারীর জন্য এবার বিরাট সুযোগ দেয়া হয়েছে। এনবিআরের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করছেন অর্থনীতিবিদরা।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে আগের আয় বছরের রিটার্ন দাখিল শুরু হয়। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিল করতে পারেন করদাতারা। অর্থাৎ আগামী ৩০ নভেম্বর চলতি বছরের আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার শেষ দিন। তবে যৌক্তিক কারণে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দাখিল না করতে পারলে উপকর কমিশনারের কাছে আবেদন করে করদাতা সময় নিতে পারেন। কিন্তু আবেদন না করলে তাকে প্রদেয় করের ১০ শতাংশ বা এক হাজার টাকার মধ্যে যা বেশি, ওই পরিমাণ অর্থ এবং প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা করে জরিমানা দিতে হয়।
যাদের বছরে তিন লাখ টাকার বেশি আয় আছে, তাদের মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সবার টিআইএন নেয়া ও প্রতি বছর আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে টিআইএনধারীদের আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ৩৭ ধরনের সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে কেবল জমি বিক্রি করতে এবং ক্রেডিট কার্ড নিতে যারা টিআইএন নিয়েছেন, তাদের রিটার্ন দেয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। এ ছাড়া বাংলাদেশে স্থায়ী ভিত্তি নেই এমন অনিবাসীদের রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক নয়।
আয়কর বিভাগের হিসাব মতে, প্রতিটি কর অঞ্চল থেকে ই-টিআইএনধারী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে রিটার্ন দাখিল করতে নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ই-টিআইএন-এ দেয়া ঠিকানায় সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার খুঁজে পাওয়া গেলেও তারা রিটার্ন দেয় না। তাদের অনেকে ভয়ে ও অনেকে ঝামেলা এড়াতে রিটার্ন দাখিল থেকে বিরত থাকে। অনেকে মনে করেন, একবার রিটার্ন দাখিল করলে প্রতি বছর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। কেউ কেউ মনে করেন, রিটার্ন দাখিল করলে দৈবচয়নের নামে এনবিআরের কর্মকর্তারা নানা কায়দায় ঘুষ দাবি করবেন। আইনজীবীকে টাকা দিতে হবে। অহেতুক ঝামেলায় পড়তে হবে। এসব কারণে একাধিক নোটিশ দেয়া হলেও বেশির ভাগ মানুষ কর্ণপাত করে না।