৫১ কোটি টাকায় বে টার্মিনাল নির্মাণে নিয়োগ হচ্ছে পরামর্শক

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নাধীন ‘বে-টার্মিনাল নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় ব্রেক ওয়াটার নির্মাণ ও এক্সেস চ্যানেল ড্রেজিং এবং বিস্তারিত ইঞ্জিনিয়ারিং নকশা প্রণয়নে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এ কাজে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছে যৌথভাবে জার্মানির চার প্রতিষ্ঠান ‘সেলহর্ন-ডব্লিউএসপি-কেএস-এক্যুয়া’। ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৫১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আগামী বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বেটার্মিনাল নির্মাণ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, যা চট্টগ্রাম বন্দরের ভবিষ্যৎ বন্দর। প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ২০১৭ সালে স্বতন্ত্র একটি বিস্তারিত সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা পরিচালনা ও চূড়ান্ত করা হয়। ওই সময় আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘সেলহর্ন/এইচপিসি-কেএস’ যৌথভাবে এ কাজটি করেছিল। প্রণীত সমীক্ষায় প্রস্তাবিত ‘বে-টার্মিনাল’-কে কতগুলো কম্পোনেন্টে বিভাজন করা হয়। ওই বিভাজনের মধ্যে ব্রেক ওয়াটার নির্মাণ ও এক্সেস চ্যানেল ড্রেজিং অন্যতম। গত ২০২১ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত এক সভায় ২০১৭ সালের সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে তিনটি টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিন টার্মিনালের মধ্যে একটি নির্মিত হবে চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে এবং অপর দু’টি টার্মিনাল প্রাইভেট অপারেটরদের মাধ্যমে পিপিপির আওতায় ‘জি-টু-জি’ পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হবে।

টার্মিনাল নির্মাণের অবিচ্ছেদ্য অংশ ব্রেক ওয়াটার নির্মাণ ও এক্সেস চ্যানেল ড্রেজিংয়ের কাজগুলো বিশ্বব্যাংকের ওডিএ ঋণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। এ বিষয়ে বিশ^ব্যাংকের সম্মতি পাওয়া গেছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। সূত্র মতে, উল্লেখিত সমীক্ষা যাচাইয়ের পরবর্তী কার্যক্রম হিসেবে নতুন করে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কাজের প্রথম অংশ হচ্ছে- বে-টার্মিনালের ব্রেক ওয়াটারের ডিজাইন, ড্রয়িং, প্রাক্কলন ও দরপত্র দলির তৈরি করাসহ ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা প্রদান এবং পরিমাপ নির্ধারণ। দ্বিতীয় অংশ হচ্ছে- ঠিকাদার নিয়োগের পর পরামর্শক কর্তৃক ঠিকাদারের কাজ সুপারিভিশন করা। সার্বিক পরামর্শক সেবার কাজটি ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ’-এর নিজস্ব অর্থায়নে হবে। পরামর্শকের মেয়াদ হবে তিন বছর ছয় মাস।

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগে গত ২০১৯ সালে দরপত্র আহ্বান করা হলে প্রাথমিকভাবে ২৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয়। পরে এসব দরপত্রের মধ্যে থেকে প্রাথমিক যাচাই-বাছায়ের মাধ্যমে সাতটি প্রতিষ্ঠানের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত ‘প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি’। এগুলো হচ্ছে- জার্মানির যৌথভাবে চার প্রতিষ্ঠান ‘সেলহর্ন-ডব্লিউএসপি-কেএস-এক্যুয়া’। জাপানের যৌথভাবে ‘এনকে-জেপিসি’। যুক্তরাজ্যের ‘এইচআর ওয়ালিংফোর্ড লিমিটেড’। স্পেনের ‘আইডম’। ডেনমার্কের যৌথভাবে ‘রেম্বল-ডিডিসি’। ইতালির যৌথভাবে ‘রিনা-এসএমসিই-এসিআই’ ও কোরিয়ার যৌথভাবে ‘ইয়ুশিন-ডাই-বেটস’। এর মধ্যে প্রথম তিনটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়। কারিগরি মূল্যায়নে জার্মানির যৌথভাবে চার প্রতিষ্ঠান ‘সেলহর্ন-ডব্লিউএসপি-কেএস-এক্যুয়া’ সর্বোচ্চ স্কোর পায়। জানা যায়, ট্যাক্স ও ভ্যাট ছাড়া পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশী মুদ্রায় মোট দিতে হবে ৩৮ কোটি টাকা। ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ মোট ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৫১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রস্তাব অনুমোদিত হলে শিগগিরই পরার্শক নিয়োগের জন্য একটি চুক্তি করা হবে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.