বঙ্গবন্ধু টানেলের এক টিউবের ‘কাজ শেষ’

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম টানেলের একটি টিউবের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে; দ্বিতীয়টিও প্রায় শেষের পথে, সব মিলিয়ে টানেলের কাজ এগিয়েছে ৯৩ শতাংশ।

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ এর দক্ষিণ টিউবটির পূর্ত কাজের সমাপনী অনুষ্ঠান হবে আগামী ২৬ নভেম্বর। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকার কথা রয়েছে।

তবে বাংলাদেশের প্রথম এবং দক্ষিণ এশিয়ার নদীর তলদেশে নির্মিত প্রথম সড়ক টানেলটির কাজ প্রায় শেষের পথে থাকলেও যানবাহন চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কবে নাগাদ এটি খুলে দেওয়া হবে তা এখনও ঠিক হয়নি।

বুধবার প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, টানেলের সামগ্রিক বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৯৩ শতাংশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষের জোর চেষ্টা চলছে।

‘সাউথ টিউবের’ পূর্ত কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটির পূর্ত কাজের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকতে সম্মতি দিয়েছেন।

তিন দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টানেলের টিউব দুটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। একটির সঙ্গে অপর টিউবের দূরত্ব ১২ মিটারের মত। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চারটি লেইন রয়েছে।

এটির ‘সাউথ টিউব’ দিয়ে আনোয়ারা থেকে চট্টগ্রাম শহরে এবং উজানের দিকের ‘নর্থ টিউব’ দিয়ে চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমির দিক থেকে আনোয়ারার দিকে যানবাহন চলাচল করবে।

টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে থাকছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। এছাড়া ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ওভারব্রিজও রয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এক প্রকৌশলী জানান, দুটি টিউবেরই নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু দক্ষিণ টিউবের স্ট্রাকচারাল কাজ পুরো শেষ হয়েছে।

কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে চীনের সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তুলতে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের এ  প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। ২০১৫ সালে অনুমোদনের দুই বছর পর ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে কাজ শুরু হয়।

কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর সময় এ কাজ কিছুটা গতি হারায়। ২০২০ সালের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত টানেল নির্মাণে অগ্রগতি হয় ৫ শতাংশ।

এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মধ্যে একটি নতুন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বানানো হচ্ছে এ টানেল। নির্মাণ কাজ করছে চীনা কোম্পানি ‘চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’।

বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে টানেল প্রকল্পের শুরুর দিকে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। অনুমোদনের দুই বছর পরে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শুরু হলে ব্যয় বাড়িয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা করা হয়। পাশাপাশি মেয়াদ বাড়ানো হয় এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। 

প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ বলেন, টানেলের নির্মাণ কাজ অনেকটাই শেষ হয়ে এসেছে। কিন্তু টিউবের অভ্যন্তরে কিছু কাজ বাকি রয়েছে। পুরোদমে আমরা কাজ করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে এটির নির্মাণ কাজ শেষ করা যায়।

টানেল নির্মাণের কাজকে চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি কোনো সহজ কাজ নয়, সবদিক বিবেচনা এবং নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কাজ শেষ করতে হচ্ছে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.