পাতালরেলের কাজ শুরু ডিসেম্বরে
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দেশের প্রথম পাতালরেলের (মেট্রোরেল লাইন-১) মূল কাজ শুরু হচ্ছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে। যোগাযোগের সুবিধার্থে এ লাইনটি মাটির নিচ দিয়ে সরাসরি যুক্ত হবে নির্মাণাধীন বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে। এ লাইনের ট্রেনে চেপে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে যেতে সময় লাগবে মাত্র ২৪ মিনিট। এ প্রকল্পের মূল কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে কাল ২৩ নভেম্বর। ডিপো নির্মাণের কাজ উদ্বোধনের মাধ্যমে আগামী মাসেই এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২৩ নভেম্বর মেট্রোরেল লাইন-১-এর ডিপো নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে এ প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরের যে কোনো দিন মূল কাজের উদ্বোধন করা হবে।
আশা করা হচ্ছে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকার যোগাযোগব্যবস্থার নতুন এক অধ্যায় শুরু হবে। কেননা এটিই হবে দেশের প্রথম পাতালরেল। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এর আগে ২৩ অক্টোবর এ প্রকল্পের দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল নির্মাণের তদারকির জন্য আট কোম্পানির একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড। তখনো জানানো হয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরে শুরু হবে প্রকল্পটির মূল কাজ। অক্টোবরের ওই চুক্তি অনুসারে, জাপানি নিপ্পন কোই কোম্পানি লিমিটেডের নেতৃত্বে কনসোর্টিয়ামটি রাজধানীতে ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ রেল প্রকল্প বা এমআরটি লাইন-১ নির্মাণের তত্ত্বাবধান করবে। ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, এমআরটি লাইন-১-এর দুটি অংশ থাকবে। এর একটি হবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর (বিমানবন্দর রুট) পর্যন্ত। এই ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার অংশটি মাটির নিচ দিয়ে হবে। নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল (পূর্বাচল রুট) পর্যন্ত প্রায় ১১ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার অংশটি হবে এলিভেটেড (উড়াল) লাইন। এ প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এমআরটি লাইনে মোট ২১টি স্টেশন থাকবে। এর মধ্যে ১২টি স্টেশন থাকবে আন্ডারগ্রাউন্ডে (মাটির নিচে) আর বাকি ৯টি এলিভেটেড (্উড়াল)। এই লাইনে প্রতিদিন ৮ কোচবিশিষ্ট ২৫টি ট্রেন চলাচল করবে। একটি ট্রেনের ধারণক্ষমতা হবে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৮ জন। কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে মাত্র ২৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। এ ছাড়া নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল যেতে ২০ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড এবং কমলাপুর থেকে পূর্বাচল যেতে লাগবে ৪০ মিনিট। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রুটে প্রতি আড়াই মিনিটে একজন যাত্রী ট্রেন ধরতে পারবেন। আর নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল রুটে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৪ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড।
সূত্র জানায়, থার্ড টার্মিনাল ভবনের সঙ্গে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গপথ ও উড়াল সেতু নির্মাণ করা হবে, যা মেট্রোরেল লাইন-১ ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে। এতে থাকবে আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা। থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের প্রথম ধাপের সঙ্গে বর্তমান টার্মিনাল ভবনগুলোর আন্তযোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে না। তবে প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে কানেকটিং করিডরের মাধ্যমে পুরনো টার্মিনাল ভবনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের কাজ হচ্ছে মোট ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে। এর মধ্যে ডিপোর সিপি-১-এর সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর ডিপোর মূল কাজ নির্মাণের জন্য সিপি-১-এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে।