ছেলেকে ভর্তি না করায় শিক্ষককে পেটালেন অভিভাবক
পাবনা প্রতিনিধি : ছেলেকে ভর্তি করাতে না পেরে পাবনা কালেক্টরেট পাবলিক স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক অভিভাবকের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ওই অভিভাবক হলেন, পাবনা পৌর শহরের গোবিন্দা মহল্লার বাসিন্দা শেখ মাসুম। স্কুলটির অবস্থানও একই এলাকায়। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শিক্ষক সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বাড়ি থেকে বের হলে তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে পেটান অভিভাবক শেখ মাসুম।
ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জেলা শহরে মানববন্ধন করেছেন। বিকেল চারটার দিকে স্কুল ছুটির পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শহরের আব্দুল হামিদ সড়কে প্রেসক্লাবের সামনে সমবেত হন। সেখানে তাঁরা মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, পাবনা কালেক্টরেট পাবলিক স্কুলের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম, শামসুল আলম, ইমরান কবির, মাহবুব আরা ও কারুন নাহার প্রমুখ। মানববন্ধন থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেন।
মানববন্ধন থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ি চলতি বছর বিদ্যালয়টিতে লটারীর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। সপ্তম শ্রেনীতে ভর্তির জন্য ওই অভিভাবকের ছেলে লটারী প্রক্রিয়ায় অংশ নিলেও নাম না ওঠায় ছেলেটি স্কুলে ভর্তি হতে পারেননি। ফলে কয়দিন ধরেই তিনি ছেলেকে ভর্তির জন্য স্কুলে ঘুরছিলেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন অনিয়ম করে কোন শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন। এতেই অভিভাবক তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হন। বুধবার সন্ধ্যায় শিক্ষক আলাউদ্দিন বাড়ি থেকে বের হবার পর তাকে হাতুরী দিয়ে পেটান অভিভাবক শেখ মাসুম।
আহত শিক্ষক আলাউদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়টির সভাপতি জেলা প্রশাসক নিজে। সভাপতির অনুমতি ছাড়া বিদ্যালয়ে ভর্তির কোন সুযোগ নেই। তিনি ওই অভিভাবককে শুধু এটুকই বলেছিলেন। এতেই তিনি ক্ষিপ্ত হন। জোরপূর্বক ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করতে বলেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁর পায়ে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়।
মানববন্ধন থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষকের উপর এ ধরনের হামলা মেনে নেয়া হবে না। অবিলম্বে ওই অভিভাবককে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। না হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আরও বড় কর্মসুচি নেবে।
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষককে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু বাইরের এলাকার মানুষ হওয়ায় তিনি অভিযোগ দিতে রাজী হচ্ছেন না। তারপরও পুলিশের জায়গা থেকে অভিযুক্ত অভিভাবককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অভিভাবকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে চেষ্টা করে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এ জন্য তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে পুলিশের ভয়ে তিনি পলাতক রয়েছেন।