বিশ্বপরিমণ্ডলে দেশ পিছিয়ে থাকবে না

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ, যেখানে প্রতিটি মানুষের প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকবে এবং দেশ বিশ্বপরিমণ্ডলে পিছিয়ে থাকবে না। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা এবং লার্নিং যেমন—ই-শিক্ষা, ই-স্বাস্থ্য, ই-ব্যবসা, ই-ইকোনমি ও ই-গভর্ন্যান্স হবে প্রযুক্তিগত জ্ঞানভিত্তিক। ’

প্রধানমন্ত্রী গতকাল শনিবার নিজ কার্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের বই তুলে দিয়ে বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় এ কথা বলেন। আজ রবিবার সারা দেশে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব উদযাপিত হবে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকবে এবং সরকার এ জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। মানে প্রতিটি নাগরিক হবে প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন। প্রতিটি ছেলেমেয়ে কম্পিউটার টেকনোলজি এখন থেকে শিখছে এবং আরো এগিয়ে যাবে। আমাদের পুরো জনগোষ্ঠীই হবে প্রযুক্তি জ্ঞানে স্মার্ট। বিশ্ব থেকে কোনো কিছুতেই পিছিয়ে থাকবে না। নিশ্চয়ই আমরা পারব। ’

আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নকাজের কথা তুলে ধরে সমালোচকদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চোখ থাকতেও দেশের উন্নয়ন তারা (সমালোচক) দেখতে পায় না। তিনি বলেন, ‘যদিও এত কাজ করার পরও কিছু লোকের মন ভরে না। তাতেও তারা বলবে, আমরা নাকি কিছুই করি নাই। কিছুই করি নাই (যারা বলে) শ্রেণিটা চোখ থাকতেও দেখে না। দৃষ্টি থাকতেও তারা অন্ধ। তারা দেখবেই না। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাদের (সমালোচক) মাথার ভেতরে ‘নাই’ শব্দটা ঢুকে গেছে। আমরা ‘নাই’-তে থাকতে চাই না। আমরা পারি, বাংলাদেশের মানুষ পারে। আমরা সেটাই প্রমাণ করতে চাই। ‘নাই’ ‘নাই’ শুনব না। আমরা করতে পারব, এটা করতে হবে। ”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সরকার জনগণের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য অনেক দিক থেকে কঠোরতা আরোপ করলেও শিশুদের জন্য পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর ক্ষেত্রে কোনো আপস করেনি।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এই করোনা, নানা ঝামেলা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ—এখন তো সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী কষ্ট, তার মধ্যেও কিন্তু আমরা শিশুদের কথা ভুলিনি। তাদের বই ছাপানোর খরচাটা অন্য দিক থেকে আমরা সাশ্রয় করছি, বই ছাপানোর দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা অর্থাৎ প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের ছেলেমেয়েরা কেন পিছিয়ে থাকবে। ’

করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার সময় থেকে এ পর্যন্ত আমার ঘরে আমার স্কুল, অর্থাৎ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ, কাজেই ঘরে বসে পড়াশোনা। কেউ যাতে পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে না পারে, সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। সংসদ টিভির মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে শিক্ষা কার্যাক্রম চালানো হয়েছে। আবার বিটিভির মাধ্যমেও চালানো হয়েছে। আমি মনে করি, সংসদ টিভি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব সময় ব্যবহার করতে পারে। ’

শিক্ষার জন্য আলাদা টিভি চ্যানেল চালুর উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের শিশুদের আন্তরিকতার সঙ্গে গড়ে তুলতে পারলে বিশ্বের কোনো শক্তি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি ঠেকাতে পারবে না।

ছেলেমেয়েদের আন্তরিকতার সঙ্গে গাইড করলে তারা বেশি দক্ষ হয়ে উঠবে বলে অভিভাবকদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে যত বেশি এই ছেলেমেয়েদের গাইড করব, তারা তত বেশি দক্ষ হয়ে উঠবে। ’ তিনি শিক্ষার্থীদের এই শীতে নিজেদের সুস্থ রাখার এবং ঘরবাড়িসহ আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধেরও পরামর্শ দেন।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। বর্তমান সরকার ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুরু করে এবং এ পর্যন্ত মোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) হিসাব অনুযায়ী সারা দেশে আজ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.