পূর্বাচল পানি সরবরাহ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় পানির সরবরাহ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩০ জানুয়ারি তিনি ভার্চুয়ালি এর উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে সংস্থাটির কুড়িল-পূর্বাচল লিঙ্ক রোডের উভয় পাশে ১০০ ফুট খাল খনন ও উন্নয়ন প্রকল্প এবং তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। এ ছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদফতরের নয়টি প্রকল্প একই দিন প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব প্রকল্প উদ্বোধন করবেন সেগুলো হলো- রাজউকের কুড়িল-পূর্বাচল লিঙ্ক রোডের উভয় পাশে ১০০ ফুট খাল খনন ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১২.৫০ কিমি খাল, ১২ কিমি কুড়িল-পূর্বাচল লিঙ্ক রোড, পাঁচটি অ্যাটগ্রেড ইন্টারসেকশন, ছয়টি ব্রিজ, নয়টি আর্চ ব্রিজ, দুটি আন্ডারপাস, ছয়টি ফুটওভার ব্রিজ, ২ কিমি জিআরপি পাইপলাইন, দুটি স্লুইস গেট ও পাম্প হাউস। একই সঙ্গে পূর্বাচল পানি সরবরাহ প্রকল্প (প্রথম ফেজ) ও পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্রগতি উচ্চবিদ্যালয় ভবন, পলখান উচ্চবিদ্যালয় এবং পূর্বাচল আদর্শ কলেজ ভবন নির্মাণের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এ ছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদফতরের নয়টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। সেগুলো হলো- ঢাকার আজিমপুরে বিচারকদের জন্য ৯০টি ফ্ল্যাটবিশিষ্ট বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ, ঢাকার তেজগাঁওয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (ছয়টি ১৩ তলা ভবনে ২৮৮টি ফ্ল্যাট), মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ২৮৮টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ, নোয়াখালী সদরে অফিসার্স কোয়ার্টার ভবন নির্মাণ, ঢাকার রমনা পার্কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং রমনা লেকসহ সার্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার লাইব্রেরি ভবন, এনেক্স ভবন ও অডিটোরিয়াম নবায়নসহ আনুষঙ্গিক কাজ; মিরপুর ৯ নম্বর সেকশনে মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য ১ হাজার ৪০টি আবাসিক ফ্ল্যাট (স্বপ্ননগর-১) নির্মাণ, মিরপুর ১৫ নম্বর সেকশনে ১৪ তলাবিশিষ্ট ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট আয়তনের ১০০ ফ্ল্যাট নির্মাণ; সিলেটের সুনামগঞ্জে সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

পূর্বাচল পানি সরবরাহ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহরে পানি সরবরাহ করবে না ঢাকা ওয়াসা। ফলে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানির সংস্থান করতে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫টি গভীর নলকূপ বসিয়ে পানির ব্যবস্থা করা হবে। এসব নলকূপের গভীরতা হবে ৩০০ মিটার করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে চারটি ধাপে। প্রকল্পের প্রথম ধাপে দুটি নলকূপের মাধ্যমে চারটি সেক্টরের পানি সরবরাহ করা হবে। সেক্টরগুলো হচ্ছে ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর। এতে প্রায় ৩ হাজার প্লটমালিক পানির আওতায় আসবেন। প্রকল্পের প্রথম ধাপ অর্থাৎ ফেজ-১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে পাঁচটি গভীর নলকূপের মাধ্যমে আরও ১০টি সেক্টর পানির আওতায় আসবে। তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে চারটি করে নলকূপ বসানোর মাধ্যমে বাকি অংশগুলোয় পানি সরবরাহ করা হবে। নলকূপের মাধ্যমে পানির সংস্থান করা হবে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত। পরে ঢাকা ওয়াসার করিডর ব্যবহার করে মেঘনা থেকে পানি আনার পরিকল্পনা আছে। পানি শোধন করার জন্য ১২ একর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরে।

প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০২১ থেকে ২০২৪। এ প্রকল্পের আওতায় ২০৩৫ সাল পর্যন্ত রাজউক রক্ষণাবেক্ষণ করবে। প্রকল্পে মোট ব্যয় ৫৯২ কোটি টাকা, যার মধ্যে রাজউক ব্যয় করবে প্রায় ৩০০ কোটি। বাকি টাকা প্রাইভেট পার্টনারশিপ বিনিয়োগ করবে। পানি সরবরাহে গ্রাহক পর্যায়ে পানির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। পূর্বাচলে আবাসিক এলাকায় ইউনিটপ্রতি পানির দাম ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বাণিজ্যিক স্থাপনা না থাকার কারণে আপাতত নির্ধারণ করা হয়নি। এ বিষয়ে পূর্বাচল পানি সরবরাহ প্রকল্প পরিচালক মো. বদিউল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের প্রথম ফেজের কাজ শেষ। প্রথম ফেজে রাস্তাবরাবর ৪০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর ১, ২, ৩ ও ৪ সেক্টরে গ্রাহকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পানির সংযোগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া পূর্বাচলে আবাসন বাড়লে পানি সরবরাহের জন্য ভূমি উপরিস্থিত পানি ব্যবহার করা হবে। তবে কবেনাগাদ হবে সেটা বলা কঠিন। কিছুদিন সময় লাগবে।

এ বিষয়ে রাজউকের চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে চারটি ফেজের মাধ্যমে ১৫টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হবে। এর মধ্যে ফেজ-১-এর কাজ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। ইতোমধ্যে তিনটি টিউবওয়েলের কাজ শেষ হয়েছে, যার মধ্যে একটি টিউবওয়েল দিয়ে ফেজ-১-এ পানি সরবরাহ করা হবে।

তিনি বলেন, ২০৩৫ সাল পর্যন্ত গভীর নলকূপ থেকে পানি সরবরাহ করা হবে। পরে সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে পূর্বাচলে পানি সরবরাহ করা হবে। তবে রাজউকের লাইনের পানি সরাসরি খেতে পারবেন নাগরিকরা। পুরো লাইনের পানির নিরাপদ থাকবে।

আনিছুর রহমান বলেন, ‘পূর্বাচলে আবাসিক স্থাপনার জন্য ১ হাজার লিটার ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বাণিজ্যিক স্থাপনার পানির দাম নির্ধারণ করা হয়নি। যেহেতু বাণিজ্যিক স্থাপনা তৈরি হয়নি, সেজন্য আমরা পানির দাম নির্ধারণ করিনি। শিগগিরই মন্ত্রণালয় বাণিজ্যিক স্থাপনার পানির দাম নির্ধারণ করবে।’

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.