ঢাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পায় যুক্তরাষ্ট্র

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সব দূতাবাসের নিরাপত্তায় ৮৫৫ জন পুলিশ ডিএমপির ৭৬৮, স্পেশাল ব্রাঞ্চের ৮৭ । বাংলাদেশে বিদেশি দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তায় ৮৫৫ জন কাজ করলেও কেবল মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তায় কাজ করছেন ১৫৬ জন পুলিশ সদস্য। এসকর্ট সার্ভিসের মাত্র আটজন পুলিশ সদস্য প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত মার্কিন দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করতেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ১৬৪ জন সদস্য। নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশ সদস্যদের সংখ্যার বিচারে মার্কিন দূতাবাসের ঠিক পরেই অবস্থান ভারতীয় হাইকমিশনের। সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন ৫৮ জন পুলিশ সদস্য। পুলিশ সদস্য মোতায়েনের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সৌদি আরব দূতাবাস। সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন ৫৬ জন পুলিশ সদস্য। একইভাবে রুশ দূতাবাসে ৩৩ জন এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনে দায়িত্ব পালন করছেন ২৭ জন পুলিশ সদস্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পাশাপাশি একাধিক সংস্থার মাধ্যমে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করছে সরকার। বিশেষ করে ২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান হামলার পর থেকে সরকারের এমন আয়োজন অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি থাকে। মাত্র আটজন পুলিশ এসকর্ট প্রত্যাহার করা হলেও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে এখনো আমাদের সর্বোচ্চ ডেপ্লয়মেন্ট রয়েছে। এখনো সেখানে ডিএমপির ১৫৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন। ভারতীয় দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করছেন ৫৮ জন। অতীতের মতোই দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকি। কারণ তারা আমাদের মেহমান। তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের।’

জানা গেছে, সম্প্রতি এসকর্টের দায়িত্ব থেকে ২৭ জনকে প্রত্যাহারের পর এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তবে ২৭ জনকে প্রত্যাহার করার পরও ডিএমপির পক্ষ থেকে এসকর্টের দায়িত্বে সাদা পোশাকে অন্তত সাতজন সদস্য গত সপ্তাহে নতুন করে যোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করার পর সাংবাদিকদের বলেন, কূটনীতিকদের সঙ্গে বাড়তি নিরাপত্তা প্রত্যাহার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ দক্ষতার সঙ্গে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকার বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য যে বিশেষায়িত ‘আনসার ব্যাটালিয়ন গার্ড’ প্রস্তুত করেছে, তা কূটনৈতিক মহলগুলোকে জানানো হয়েছে। তবে বর্তমানে ঢাকায় ৫০টি দূতাবাস ও ৯টি সংস্থার নিরাপত্তায় ডিএমপির ৭৬৮ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এর বাইরে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ৮৭ জন কূটনৈতিক এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারের জন্য দায়িত্ব পালন করেন এসবির দুজন করে গানম্যান। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এসবির আরও দুজন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া কূটনৈতিক জোনে সাদা পোশাকে কাজ করেন এসবির এসএস ডিপ্লোমেটিক অ্যান্ড প্রটেকশন বিভাগের ৪০ জন পুলিশ সদস্য। এর বাইরেও দায়িত্ব পালন করেন সিটি এসবির ৩৮ জন সদস্য।

ডিএমপি সূত্র বলছে, পুলিশ এসকর্টের দায়িত্বে থাকা আটজনকে প্রত্যাহারের পর মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তায় এখন কাজ করছেন ডিএমপির ১৫৬ জন। দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তাদের বাসভবন থেকে শুরু করে স্কুল ও ক্লাবেও পুলিশ মোতায়েন আছে। এর মধ্যে দূতাবাসে ১৩ জন করে তিন শিফটে ৩৯ জন, রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে পাঁচজন করে তিন শিফটে ১৫ জন, আমেরিকান ক্লাবে চারজন করে তিন শিফটে ১২ জন, আমেরিকান স্কুলে ছয়জন করে তিন শিফটে ১৮ জন, আমেরিকান গ্যারেজ এনেক্স ভবনে সাতজন করে তিন শিফটে ২১ জন দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া আমেরিকান ডেপুটি চিফ অব মিশনের বাসভবনে দুজন করে তিন শিফটে ছয়জন, আমেরিকান ডিফেন্স অ্যাটাশের বাসভবনে দুজন করে তিন শিফটে ছয়জন, আমেরিকান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বাসভবনে ১৩ জন করে তিন শিফটে ৩৯ জন দায়িত্ব পালন করছেন। আটজন পুলিশ এসকর্ট প্রত্যাহারের পরও ব্রিটিশ হাইকমিশনের নিরাপত্তায় আছেন ডিএমপির ২৭ জন সদস্য। ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তায় ডিএমপির ৫৮ জন ও সৌদি দূতাবাসের নিরাপত্তায় ৫৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন।

বাকি দূতাবাসগুলোতে যত নিরাপত্তা : ডিএমপি সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, সৌদি আরব ছাড়াও বাকি দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স দূতাবাসে ২২ জন, জার্মান দূতাবাসে ১৫ জন, দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসে ছয়জন, থাইল্যান্ড দূতাবাসে ১২ জন, আরব আমিরাত দূতাবাসে ১৮ জন, রুশ দূতাবাসে ৩৩ জন, চীনা দূতাবাসে ২৪ জন, অস্ট্রেলীয় দূতাবাসে ১৫ জন, ফিলিপাইন দূতাবাসে তিনজন, আলজেরিয়া দূতাবাসে ছয়জন, আফগানিস্তান দূতাবাসে তিনজন, পাকিস্তান দূতাবাসে ১২ জন, মরক্কো দূতাবাসে তিনজন, ব্রুনাই দূতাবাসে ছয়জন, মালদ্বীপ দূতাবাসে ছয়জন, মিয়ানমার দূতাবাসে ১২ জন, মালয়েশিয়া দূতাবাসে ৯ জন, লিবিয়া দূতাবাসে ছয়জন, ফিলিস্তিন দূতাবাসে ছয়জন, তুরস্ক দূতাবাসে ছয়জন, নেপাল দূতাবাসে তিনজন, ভ্যাটিকান সিটি দূতাবাসে তিনজন, সুইস দূতাবাসে তিনজন, ইন্দোনেশিয়া দূতাবাসে ১২ জন, শ্রীলঙ্কা দূতাবাসে ছয়জন, নরওয়ে দূতাবাসে ৯ জন এবং ভুটান দূতাবাসে ৯ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিটি দূতাবাসেই তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করছেন ডিএমপির সদস্যরা।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.