বেড়েছে পোশাক খাতের নিট রপ্তানি রেশিও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের নিট রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা দেশের বাণিজ্য ভারসাম্যে ইতিবাচক অবদান রেখেছে। নিট রপ্তানি (মোট রপ্তানি থেকে কাঁচামাল আমদানি বাদ দিয়ে হিসাব করা হয়) রেশিও ৭১ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। একই সময়ে নিট রপ্তানি হয়েছে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের। এর ফলে এক বছর আগের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৪৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলেন- ক্রমবর্ধমান ডলারের চাপের কারণে পোশাক রপ্তানিকারকরা এখন টাকায় লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলছেন এবং স্থানীয় বাজার থেকে কিছু কাঁচামাল সংগ্রহ করছেন। যেমন- ব্যবসায়ীরা স্থানীয়ভাবে ডেনিম কাপড় কিনলেও বিক্রেতারা এ কাপড় তৈরির জন্য দেশের বাইরে থেকে সুতা বা ডাইং কেমিক্যাল আমদানি করতে পারে। এসব কারণে কাঁচামাল আমদানি ব্যয় কিছুটা কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে তৈরি পোশাক খাতের মোট রপ্তানি ছিল ১১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৩ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে কাঁচামাল আমদানিতে, যা মোট আয়ের ২৮ দমমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ নিট রপ্তানি বা দেশীয় গার্মেন্ট খাতে যোগ হয়েছে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় প্রায় ৩৯ শতাংশ বেশি।
এ ব্যাপারে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ার কারণে কাঁচামাল আমদানির খরচ কমে যেতে পারে। তবে অনেক আরএমজি রপ্তানিকারক উচ্চ মূল্যে কাঁচামাল কিনে তাদের স্টক ধরে রেখেছেন। এ ধরনের ক্ষেত্রে, তাদের থেকে মূল্য সংযোজন কম হতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য সঠিক হলে, ক্রমবর্ধমান মূল্য সংযোজন অনুপাত আমাদের অর্থনীতির জন্য একটি ভালো লক্ষণ বলে জানান তিনি।
এদিকে এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কাঁচামাল আমদানিতে ব্যয় গত আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ ছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে আমদানি ২ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার কম ছিল। সংশ্লিষ্টরা জানান- কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে। রপ্তানি বাড়লে আমাদের মতো দেশকে অবশ্যই কাঁচামাল আমদানি বাড়াতে হবে। তবে গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে আমদানি কমলেও রপ্তানি সেভাবে কমেনি। ফলে নিট রপ্তানি বা মূল্য সংযোজন বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে বর্তমানে রপ্তানিকারকদের কাছে অর্ডার আসা কমে গেলেও বিভিন্ন সরকারি প্রতিবেদনে রপ্তানি বৃদ্ধির যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ত্রৈমাসিকের নিট রপ্তানি অনুপাত এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তবে অর্থবছরের শেষ ত্রৈমাসিকে মূল্য সংযোজনের পারসেন্টেজ এর আগে এত বেশি ছিল না।
খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আরো জানান- কাঁচামাল আমদানির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া তথ্যগুলো আরো খতিয়ে দেখা দরকার। গত দুই-তিন মাসে নিটওয়্যার পোশাকে রপ্তানি আদেশ খুবই কম ছিল উল্লেখ করে তারা বলেন, গত কয়েক মাসে বোনা পোশাকের রপ্তানি অর্ডার বেশ ভালো এসেছে। আমরা আশা করি, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে অর্ডার আবার বাড়তে শুরু করবে। সেই অনুযায়ী, আগামী বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে রপ্তানি পরিস্থিতি ভালো হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাত দেশের জিডিপিতে ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। মহামারির পরে এ খাত আবার ফিরে আসা শুরু করে। তবে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর ফলে সাপ্লাই চেইনে বিঘœ ঘটা, বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি, এবং ফেড মনেটারি পলিসি কঠোর করার মতো চ্যালেঞ্জগুলো এ খাতের অগ্রগতিকে বাজেভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে এবং রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে আন্তঃপোশাক বৈচিত্র্য, উৎপাদনশীলতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি, পণ্য উদ্ভাবন, নতুন বৈশ্বিক বাজার অন্বেষণ এবং এ খাতের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের উপর জোর দেয়া উচিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।কাগজ ডেস্ক : চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের নিট রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা দেশের বাণিজ্য ভারসাম্যে ইতিবাচক অবদান রেখেছে। নিট রপ্তানি (মোট রপ্তানি থেকে কাঁচামাল আমদানি বাদ দিয়ে হিসাব করা হয়) রেশিও ৭১ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। একই সময়ে নিট রপ্তানি হয়েছে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের। এর ফলে এক বছর আগের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৪৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলেন- ক্রমবর্ধমান ডলারের চাপের কারণে পোশাক রপ্তানিকারকরা এখন টাকায় লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলছেন এবং স্থানীয় বাজার থেকে কিছু কাঁচামাল সংগ্রহ করছেন। যেমন- ব্যবসায়ীরা স্থানীয়ভাবে ডেনিম কাপড় কিনলেও বিক্রেতারা এ কাপড় তৈরির জন্য দেশের বাইরে থেকে সুতা বা ডাইং কেমিক্যাল আমদানি করতে পারে। এসব কারণে কাঁচামাল আমদানি ব্যয় কিছুটা কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে তৈরি পোশাক খাতের মোট রপ্তানি ছিল ১১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৩ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে কাঁচামাল আমদানিতে, যা মোট আয়ের ২৮ দমমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ নিট রপ্তানি বা দেশীয় গার্মেন্ট খাতে যোগ হয়েছে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় প্রায় ৩৯ শতাংশ বেশি।
এ ব্যাপারে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ার কারণে কাঁচামাল আমদানির খরচ কমে যেতে পারে। তবে অনেক আরএমজি রপ্তানিকারক উচ্চ মূল্যে কাঁচামাল কিনে তাদের স্টক ধরে রেখেছেন। এ ধরনের ক্ষেত্রে, তাদের থেকে মূল্য সংযোজন কম হতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য সঠিক হলে, ক্রমবর্ধমান মূল্য সংযোজন অনুপাত আমাদের অর্থনীতির জন্য একটি ভালো লক্ষণ বলে জানান তিনি।
এদিকে এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কাঁচামাল আমদানিতে ব্যয় গত আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ ছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে আমদানি ২ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার কম ছিল। সংশ্লিষ্টরা জানান- কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে। রপ্তানি বাড়লে আমাদের মতো দেশকে অবশ্যই কাঁচামাল আমদানি বাড়াতে হবে। তবে গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে আমদানি কমলেও রপ্তানি সেভাবে কমেনি। ফলে নিট রপ্তানি বা মূল্য সংযোজন বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে বর্তমানে রপ্তানিকারকদের কাছে অর্ডার আসা কমে গেলেও বিভিন্ন সরকারি প্রতিবেদনে রপ্তানি বৃদ্ধির যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ত্রৈমাসিকের নিট রপ্তানি অনুপাত এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তবে অর্থবছরের শেষ ত্রৈমাসিকে মূল্য সংযোজনের পারসেন্টেজ এর আগে এত বেশি ছিল না।
খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আরো জানান- কাঁচামাল আমদানির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া তথ্যগুলো আরো খতিয়ে দেখা দরকার। গত দুই-তিন মাসে নিটওয়্যার পোশাকে রপ্তানি আদেশ খুবই কম ছিল উল্লেখ করে তারা বলেন, গত কয়েক মাসে বোনা পোশাকের রপ্তানি অর্ডার বেশ ভালো এসেছে। আমরা আশা করি, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে অর্ডার আবার বাড়তে শুরু করবে। সেই অনুযায়ী, আগামী বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে রপ্তানি পরিস্থিতি ভালো হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাত দেশের জিডিপিতে ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। মহামারির পরে এ খাত আবার ফিরে আসা শুরু করে। তবে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর ফলে সাপ্লাই চেইনে বিঘœ ঘটা, বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি, এবং ফেড মনেটারি পলিসি কঠোর করার মতো চ্যালেঞ্জগুলো এ খাতের অগ্রগতিকে বাজেভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে এবং রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে আন্তঃপোশাক বৈচিত্র্য, উৎপাদনশীলতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি, পণ্য উদ্ভাবন, নতুন বৈশ্বিক বাজার অন্বেষণ এবং এ খাতের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের উপর জোর দেয়া উচিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।