সহজে যাওয়া যাবে দার্জিলিং ও ভুটান, ঢাকা-বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে চালু হতে যাচ্ছে ঢাকা-বুড়িমারী রুটে নতুন ট্রেন সার্ভিস। ভারতের দার্জিলিং ও ভুটান যেতে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর ব্যবহার করতে হয়। তাই ঢাকা থেকে ট্রেনে ভ্রমণের জন্য বুড়িমারী পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়। তবে নতুন এই ট্রেনটির রুট এখনো নির্ধারণ হয়নি। ট্রেনে ঢাকা থেকে শান্তাহার পর্যন্ত যাওয়ার পর সেখানে দুইটি রুট রয়েছে বুড়িমারী যাওয়ার জন্য। একটি শান্তাহার-বগুড়া-কাউনিয়া-বুড়িমারী এবং অপরটি শান্তাহার-পার্বতীপুর-রংপুর-কাউনিয়া-বুড়িমারী।
ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের কাছে নতুন এই ট্রেনের পাঁচটি নাম চাওয়া হয়েছে। তবে প্রান্তিক স্টেশন বুড়িমারীর নাম অনুযায়ী এটির নাম ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ রাখা হতে পারে। আগামী মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ট্রেন যাত্রা শুরু করবে বলে রেল মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
রেল মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং ঘুরতে যেতে বেশির ভাগ পর্যটক লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর ব্যবহার করেন। বুড়িমারী স্থলবন্দর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শেষ সীমান্ত পয়েন্ট। ওপারে ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর ব্যবহার করে দার্জিলিং যেতে হয়। আবার ভুটান যেতে পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের বুড়িমারী স্থলবন্দর ব্যবহার করতে হয়। এ কারণে প্রতিদিন ঢাকা থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত যেতে সড়কপথে পরিবহন বাসই একমাত্র ভরসা। তবে ঢাকার কমলাপুর থেকে ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ নামে একটি আন্তঃনগর ট্রেন লালমনিরহাট পর্যন্ত যায়। লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার সড়কপথে যেতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লাগে।
পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের বিষয়টি মাথায় রেখে রেল মন্ত্রণালয় এবার বুড়িমারী পর্যন্ত নতুন একটি ট্রেন সার্ভিস চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে। ইতিমধ্যে ট্রেনটির নামকরণের মতামত চেয়ে রেলের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক গৌতম কুমার কুণ্ডু রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, রেলের এডিজি (অপারেশন), মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) ও লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপকের কাছে চিঠি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে গৌতম কুমার কুণ্ডুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখনো ট্রেনের নাম ও রুট নির্ধারণ হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের সব ট্রেন নাটোরের আব্দুলপুর জংশনে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। একটি রুট যায় রাজশাহী-চাপাইনবাবগঞ্জ-রহনপুর পর্যন্ত। আরেকটি নাটোর হয়ে শান্তাহার জংশনে। এই জংশন থেকে দুইটি রুটে বিভক্ত হয়েছে। একটি রুট বগুড়া হয়ে কাউনিয়া জংশন দিয়ে লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম পর্যন্ত। অপরটি পার্বতীপুর হয়ে রংপুর দিয়ে কাউনিয়া জংশন পর্যন্ত গিয়েছে। শান্তাহার থেকে প্রতিটি ট্রেনকে দুই রুটেই কাউনিয়া জংশন পর্যন্ত প্রায় সমান দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, লালমনিরহাট থেকে লালমনি এক্সপ্রেস কাউনিয়া জংশন দিয়ে বগুড়া-শান্তাহার হয়ে ঢাকায় যায়। আবার কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন কাউনিয়া জংশন দিয়ে অপর রুট রংপুর-পার্বতীপুর-শান্তাহার হয়ে ঢাকায় যায়। রংপুর থেকে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকায় যেতে সহজ রুটের চেয়ে ৩০ কিলোমিটার দূরত্বের ঘোরা রুট দিয়ে ঢাকায় যায়। এই ট্রেনটি রংপুর থেকে পার্বতীপুর জংশনে না গিয়ে কাউনিয়া জংশন দিয়ে বগুড়া-শান্তাহার হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে। ফলে রংপুর এক্সপ্রেসের প্রতিদিন যাতায়াতে ৬০ কিলোমিটার বেশি পথ অতিক্রম করতে হয়, যা প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ২০০ লিটার ডিজেল পুড়তে হয়।