ডিজিটাল পদ্ধতিতে হবে বেচাকেনা
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : গ্রাহকরা অনলাইনে ডিজেল, পেট্রল, অকটেন ও লুব অয়েল কিনতে পারবেন * মানসম্মত ও সঠিক পরিমাপে তেল বিক্রি নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতেই সরকারের এ উদ্যোগ * অনলাইনেও সরকার নির্ধারিত দরে তেল বিক্রি হবে * নির্ধারিত মূল্যের বাইরে ডেলিভারির দূরত্ব অনুযায়ী সার্ভিস চার্জ দিতে হবে * ভারতেও এই পদ্ধতিতে ডিজেল বেচাকেনা হয়
নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্তভাবে জ্বালানি তেল সরবরাহের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জ্বালানি তেল বিক্রি ও সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে বিপণন বিদ্যমান পদ্ধতি থেকে আরো সহজ হবে।
সম্প্রতি ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে জ্বালানি পণ্য বিক্রি ও সরবরাহের লক্ষ্যে ডিলার বা সরবরাহকারী নিয়োগসংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৪’ গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
এই নীতিমালার লক্ষ্য হচ্ছে, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভোক্তার কাছে দ্রুত সময়ে মানসম্মত ও সঠিক পরিমাপে জ্বালানি তেল বিক্রি নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
আবাসিক ভবন থেকে শুরু করে শিল্প-কারখানা, বাণিজ্যিক ভবন, সরকারি স্থাপনা, বিপণি বিতানের জেনারেটর, ভারী নির্মাণ যন্ত্রপাতি নতুন নীতিমালায় বিভিন্ন খাতে জ্বালানি তেল সরবরাহকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার ঝামেলা এড়িয়ে খুব শিগগিরই অনলাইনে জ্বালানি তেল কেনার অর্ডার দিতে পারবেন বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোর বাসিন্দারা। অর্ডার দিলেই তাঁদের ঠিকানায় পৌঁছে যাবে জ্বালানি তেল। অনলাইনে ডিজেল, পেট্রল, অকটেন ও লুব অয়েল বিক্রি এবং হোম ডেলিভারির জন্য সরকার এই নতুন নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, শুধু ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ, বরিশাল, রংপুর, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর মহানগর এলাকা বা সিটি করপোরেশন এলাকায় অনলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ সীমাবদ্ধ থাকবে। এর বাইরে কোনো শহর, উপশহর, জেলা, উপজেলা ও মহাসড়কে এই পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল বিক্রি করা যাবে না। এসব এলাকায় সরকার নির্ধারিত দরেই জ্বালানি তেল বিক্রি হবে। তবে নির্ধারিত মূল্যের বাইরে সরবরাহে দূরত্ব অনুযায়ী সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।
জানতে চাইলে জ্বালানি সচিব মো. নুরুল আলম গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জ্বালানি তেল বিক্রি ও সরবরাহ করছে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে গ্রাহকরা খুব সহজেই অর্ডার দিয়ে জ্বালানি তেল পেতে পারেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাশের দেশ ভারতে এ ধরনের পদ্ধতিতে ডিজেল বিক্রি ও সরবরাহ করা হয়। দেশটির ‘ডোর টু ডোর ডেলিভারি অব ডিজেল’ শীর্ষক একটি নীতিমালাও রয়েছে। বাংলাদেশের অনলাইন জ্বালানি বিক্রির পদ্ধতিতে বিদ্যমান এসব নীতিমালার অনুসরণ আছে।
ট্যাংকলরি বা জেরিক্যানে করে এসব তেল সরবরাহ করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলো। ট্যাংকলরিতে সরবরাহ করা হলে সর্বোচ্চ লিটারপ্রতি এক টাকা, আর জেরিক্যানে সরবরাহ করা হলে লিটারপ্রতি সর্বোচ্চ দুই টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।
যারা জ্বালানি তেল বিক্রি করতে পারবে
বর্তমানে যেসব কম্পানি জ্বালানি তেল বিক্রি করছে তারা এবং অন্য যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিক্রি ও সরবরাহ করতে পারবে। তবে এ জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি নম্বরধারী হতে হবে। আইসিটি বিভাগ বা বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে জ্বালানি খাতের সেবা প্রদানের জন্য নিবন্ধিত হতে হবে। ট্রেড লাইসেন্সে অনলাইন মার্কেটিং বা ই-কমার্স উল্লেখ থাকতে হবে। গত তিন বছরে কমপক্ষে তিন কোটি টাকার বার্ষিক টার্নওভার থাকতে হবে।
তেল যেভাবে কেনা যাবে
অনলাইনে জ্বালানি তেল কিনতে হলে ক্রেতাকে বিপিসি অনুমোদিত কম্পানির অ্যাপস বা ওয়েবলিংকে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির নাম, এনআইডি নম্বর, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), মোবাইল নম্বর ও ডেলিভারি লোকেশনের বিবরণ দিতে হবে। ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিং ও ডিজিটাল গেটওয়ের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করতে হবে।