রমজানে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সাত সিদ্ধান্ত
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আগামী মার্চ মাসে শুরু হবে পবিত্র রমজান মাস। এ সময় বছরের অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ে। এ জন্য রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সাতটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত সপ্তাহে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের আমদানি পরিস্থিতি পর্যালোচনাবিষয়ক সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
জানা গেছে, রমজানে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, মসুর ডাল ও খেজুর আমদানিতে বাণিজ্যিক ব্যাংককে সর্বনিম্ন মার্জিন গ্রহণ ও এলসি খোলায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; খেজুর আমদানিতে শুল্কায়নের ক্ষেত্রে ইনভয়েস মূল্যকে ভিত্তি ধরে শুল্কায়ন করতে এনবিআরকে অনুরোধ; এসব পণ্য দ্রুত খালাসে এনবিআর ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠানো; পণ্য পরিবহনে যেন বাধা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য জননিরাপত্তা বিভাগ, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, পুলিশ ও নৌ-পরিবহন কর্তৃক্ষের ব্যবস্থ গ্রহণ; রমজানের শুরুতে একসঙ্গে অধিক পণ্য ক্রয় না করতে জনসচেনতনা বৃদ্ধিতে ব্যবস্থা গ্রহণে তথ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ; অত্যবশ্যকীয়
বিপণনে গঠিত জেলা ও উপজেলা মনিটরিং কমিটিকে সক্রিয় ভূমিকা পালনে নির্দেশনা প্রদান; নিত্যপণ্য উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা সভায় রমজানে ভোজ্যতেলের বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখাতে পদক্ষেপ গ্রহণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেন। দেশবন্ধু গ্রুপের সিইও শফিউল আজম তালুকদার সভাকে জানান, চিনি আমদানির ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিভিন্ন হারে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক বিভিন্নভাবে এলসি মার্জিন নির্ধারণ করছে। ফলে স্থানীয় উৎপাদকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা না থাকায় উৎপাদন ব্যয়ে সামগ্রিক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের অনুরোধ করেন তিনি। এ ছাড়া ব্রাজিল থেকে চিনি আমদানির ক্ষেত্রে জাহাজীকরণে বড় ধরনের সিরিয়াল থাকায় শিপমেন্ট পিছিয়ে যাচ্ছে এবং মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কারণে আমদানির পথ পরিবর্তন করতে হচ্ছে। ফলে লিড টাইম বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে মূল্যবৃদ্ধিসহ সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কার কথা জানান।
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জানান, বিগত সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মান ২৫-৩০ শতাংশ পর্যন্ত হারিয়েছে। স্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আমদানিকারকের অনুকূলে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানিতে যে ঋণসীমা দিয়েছিল, ডলারের বিপরীতে তার মান ৩০ শতাংশ হারালেও ব্যাংকগুলো ঋণের সীমা বৃদ্ধি করছে না। ফলে সমপরিমাণ পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো চরম তারল্য সংকটে রয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান জানান, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বিপণন ব্যবস্থা ও সরবরাহ ঠিক রাখার নিমিত্ত অধিদপ্তর সফটওয়্যার প্রণয়ন করলেও স্থানীয় ভোজ্যতেল ও চিনি উৎপাদকরা তথ্য না দেওয়ায় এটি ঠিকমতো কাজ করছে না। তাই তথ্য প্রদানে নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।