চালের বস্তায় ৭ তথ্য নিশ্চিত না করলে শাস্তি, জরিমানা
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বাজারে সিন্ডিকেটের কারণে সরকারের দেওয়া দামের চেয়েও বেশি দামে ধান কেনাবেচা হয়। এতে বাজারে চালের দাম বাড়ে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নতুন কর্মকৌশল হাতে নিয়েছে সরকার। আগামী ১৪ এপ্রিল বা পহেলা বৈশাখ থেকে বাজারজাত করা চালের বস্তায় নির্দিষ্ট সাত তথ্য নিশ্চিত করতে হবে রাইস মিলগুলোকে। নয়তো জরিমানাসহ শাস্তির আওতায় আনা হবে তাদের।
গতকাল বুধবার বগুড়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রাইস মিল থেকে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সরবরাহকৃত চালের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ও সরবরাহ মূল্য-সংক্রান্ত অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
বাজারজাত করা প্রতিটি চালের বস্তায় যেসব তথ্য নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো– বস্তায় ধানের জাতের নাম, প্রস্তুতকারকের নাম, ঠিকানা, জেলা, নিট ওজন, উৎপাদনের তারিখ ও মিল গেট মূল্য লেখা থাকতে হবে। জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে রাইস মিল মালিক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় বক্তারা বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৭ তথ্য নিশ্চিত করতে পারলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ ছাড়া মিল মালিকরা চাইলে বস্তার গায়ে খুচরা মূল্য লিখে দিতে পারবে। এতে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চাল মজুত করে দাম বাড়াতে পারবেন না।
সদর উপজেলার মিল মালিক আবু সাঈদ বলেন, ‘সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমবে। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মালিকরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়ান, তাদের নাম সামনে আসে না। শুধু মিল মালিকদের নাম সামনে আসে।’ এ ছাড়া পাটের বস্তায় চাল বিক্রি নিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘মাত্র ৩০ টাকায় প্লাস্টিকের বস্তা কিনতে পওয়া যায়। অন্যদিকে পাটের বস্তার দাম অন্তত পাঁচ গুণ বেশি। এ জন্য পাটের পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বিক্রি করা হলে ব্যবসায়ীদের খরচ কমে আসত।’
এ দাবি নাকচ করে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আইনের বাইরে গিয়ে কোনো কিছু করার সুযোগ নেই। প্লাস্টিকের বস্তা পরিবেশের জন্য হুমকি। রাইস মিল ব্যবসায়ীদের অবশ্যই পহেলা বৈশাখ থেকে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। জেলা প্রাশসনের তদারকি দল মাঠে থাকবে। অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, ‘চাল বিপণনে পাটের বস্তায় সাতটি বিষয় লিখতে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন আইন ২০২৩-এ বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে একই আইনের ধারা ৬ ও ৭ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পহেলা বৈশাখ থেকে বগুড়ার সব ব্যবসায়ী ও মিল মালিক আইন মেনে ব্যবসা করবেন।’
বগুড়া-৭ আসনের এমপি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মোস্তফা আলম নান্নু বলেন, ‘বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। চাল নিয়ে যাতে কারসাজি না হয়, সে জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি চলমান থাকবে।