প্রাণী ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাত এগিয়ে আসুক

0

পোলট্রি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি চাই বেসরকারি খাত এগিয়ে আসুক। বেসরকারি খাতকেই উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চাই। তাদের সব রকম সহযোগিতা করতে চাই।

এর ফলে আমার দেশের মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) পাশে শেরেবাংলানগরের পুরান বাণিজ্য মেলা মাঠে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪’-এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বেসরকারি খাতকেই বেশি উৎসাহিত করতে চাই। তাদেরকেই বেশি সুবিধা দিতে চাই।

কারণ এগুলো সব সরকারিভাবে হয় না। এটা বেসরকারি খাতে হলে তাতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। আমাদের শিক্ষিত যুবসমাজ এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসুক, সেটাই আমরা চাই।’

তাঁর সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে যুবসমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু একটা পাস করে চাকরির পেছনে না ছুটে যুবসমাজ যদি নিজের উদ্যোগে একটা ব্যবসা-বাণিজ্য করে, তাহলে কিন্তু আমরা যথেষ্ট এগিয়ে যেতে পারব।

এসব ক্ষেত্রে আমাদের যুবসমাজকে এগিয়ে আসার জন্য আরো উৎসাহিত করতে হবে। যাতে কখনো আমাদের কারো ওপর নির্ভরশীল হতে না হয়। খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নিজস্ব পুষ্টির ব্যবস্থা আমরা নিজেরাই করতে পারি, সে বিশ্বাস আমার আছে।’

প্রধানমন্ত্রী উৎপাদন বৃদ্ধিতে গবেষণার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আমাদের গবেষণা আরো বাড়াতে হবে। আজ আমরা ৪০ ভাগের ওপরে পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারি।

আমরা কারো মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে চাই না। প্রতিটি পণ্য আমরা নিজেরাই উৎপাদন করব।’ তাঁর সরকার খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে উৎসাহিত করে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘অনেক দেশ হালাল মাংস আমাদের থেকে কিনতে চায়। সেই সুযোগ আমাদের নিতে হবে। আর সে জন্য আমাদের পশু-পাখিগুলোকে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে লালন-পালন ও নিয়ম মেনে জবাই করতে হবে এবং প্যাকেটজাত করার ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে হচ্ছে কি না সে বিষয় আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে যদি করতে পারি তাহলে দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে আমরা বিদেশেও রপ্তানি করতে পারব। এরই মধ্যে কিছু কিছু রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু আরো বেশি রপ্তানি করার সুযোগও আমাদের আছে, অনেক দেশের কাছ থেকে আমরা সেই অনুরোধও পাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালানোর পাশাপাশি পরিত্যক্ত চরাঞ্চলে মহিষ, ভেড়া হাঁস-মুরগি চাষে উৎসাহিত করছে।

তিনি বলেন, ‘এমনকি ভাসানচরে যে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি, সেখানেও প্রচুর ভেড়া ও মহিষ লালন-পালন হচ্ছে। হাঁস-মুরগি প্রতিপালন ও মাছের চাষ হচ্ছে। আমরা এভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের যেটুকু মাটি ও সম্পদ রয়েছে, তা ব্যবহার করেই আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব। জনগণ মৎস্য, পশু ও হাঁস-মুরগি পালনে আরো এগিয়ে আসবে এবং আমাদের খামারগুলো আরো উন্নত হবে বলে আশা করি।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান হোসেন দেশের ডেইরি খাতের প্রতিনিধি হিসেবে এবং বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রি সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান পোলট্রি খাতের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দেন।

শুরুতে প্রাণিসম্পদ খাতে বর্তমান সরকারের অগ্রগতি ও অর্জনের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এই আয়োজনের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে—‘প্রাণিসম্পদে ভরব দেশ, গড়ব স্মার্ট বাংলাদেশ।’ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.