রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ সড়কে রোডক্র্যাশ কমাতে ও অকাল মৃত্যু ঠেকাতে মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে
নিজস্ব প্রতিনিধি : সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের জারি করা মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা রোডক্র্যাশ ও প্রতিরোধযোগ্য অকাল মৃত্যু ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে রোড সেইটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ। একই সাথে এই নির্দেশিকার যথাযথ বাস্তবায়ন ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা অর্ধেকে কমিয়ে আনতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
আজ বৃহস্পতিবার (০৯ মে, ২০২৪) সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
সংগঠনটি আরও জানায়, বর্তমান সরকার দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখছে। এরপরেও রোডক্র্যাশ বাড়ছে ও একইসঙ্গে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। দেশের সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো। পাশাপাশি মোটর সাইকেলের অনিয়ন্ত্রিত গতি প্রতিনিয়ত দেশের কর্মক্ষম তরুণসহ অনেকের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। এমতাবস্থায়, রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের অন্যান্য দেশসমূহ থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতারভিত্তিতে বাংলাদেশের সড়কে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারি নির্দেশনার দাবি করে আসছে।
অত্যন্ত আশার খবর হলো, গত ৫ মে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা প্রণয়নে গ্রামাঞ্চল ও শহরের ঘনত্বের মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েছে। রাস্তার ধরন ও প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন মোটরযানের গতি ভিন্ন ভিন্ন করা হয়েছে, যা সড়ক নিরাপত্তার জন্য মানসম্মত বিষয় বলে মনে করে সংগঠনটি। তবে এক্ষেত্রে লেন ভিন্ন করলে নির্দেশিকাটির বাস্তবায়ন সহজতর হবে। রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ আশা করে যে, সরকার এ ব্যাপারে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। একই সাথে সংগঠনটি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, এই নির্দেশিকাটি বাস্তবায়ন করা গেলে দুর্ঘটনা এবং সড়কে অকাল মৃত্যু কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য যে, এই নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করলে সড়কে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ ঝুঁকিপূর্ণ পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা জারি করায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে সংগঠনটি আরও জানায়, যেহেতু এক্সপ্রেসওয়ে ও মহাসড়কে যথাযথ এক্সেস কন্ট্রোল নেই সেহেতু যানবাহনের ধরন অনুযায়ী গাড়ির যে গতি সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক।
আবার নির্দেশিকার কিছু বিষয়ে বিশেষ করে মোটরসাইকেলের গতি সীমা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে- তা রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ’র দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ ব্যাপারে রোড সেইটি কোয়ালিশন বাংলাদেশের বক্তব্য হচ্ছে, গ্রামাঞ্চল ও শহরের জন্য মোটরসাইকেলের গতি সীমা নির্ধারণ করায় সড়কে চলাচলের জন্য শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা উপকৃত হবেন। আবার মোটরসাইকেলের গতি কম থাকার ফলে দুর্ঘটনা ঘটলেও হতাহত কম হবে। এছাড়াও গতি কম থাকার ফলে মোটরসাইকেলের কন্ট্রোলিং-এ বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে, যা অপ্রত্যাশিক দুর্ঘটনা এড়াতে সহায়তা করবে। বিশ্বের অনেক দেশ শহরাঞ্চলে সড়ক নিরাপত্তার জন্য মোটরসাইকেলের গতির সীমা কমিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশেও অনুরূপভাবে গতি সীমা বাস্তবায়ন করলে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমানো সম্ভব হবে।
বাংলাদেশে সড়কে নিহত ও আহতের ঘটনাসমূহ প্রতিরোধযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ প্রণয়ন করা হলেও বিগত ৬ বছরে কোনো গতি সীমা নির্দিষ্ট না থাকায় এই সমস্যার সমাধান অর্জন করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে এই নির্দেশিকা জারি করায় সরকারকে অভিনন্দন জানাই। পাশাপাশি এটি অবিলম্বে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আর্কষণ করছি।