আগস্টে বন্যার শঙ্কা আগাম প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আগামী আগস্ট মাসে দেশে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এবার বন্যার আশঙ্কা আছে। বৃষ্টির প্রভাব পড়বে। সবাইকে বন্যা মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এসব বিষয় তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিশেষ করে দেশের মানুষকে বন্যা থেকে রক্ষার জন্য আমাদের আগাম প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। এ ছাড়া দেশের সব ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ থানার অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রকল্প পরিচালকদের প্রশিক্ষণে জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে এক প্রকল্পের জন্য যেন একজন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয় সেই কথা বলেছেন। এ ছাড়া ঢাকা অঞ্চলের আশপাশে যেখানে জমি আছে সেগুলোতে চাষাবাদ ত্বরান্বিত করার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জমি বেশির ভাগ চলে যাচ্ছে আবাসন প্রকল্পের জন্য।

তবে যেসব জমি এখনো আছে সেগুলো যাতে ফাঁকা পড়ে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেসব এলাকায় তিনফসলি বা দুইফসলি জমিতে ফসল ভালো হয় সেসব এলাকায় প্রকল্প নেওয়া যাবে না। পাশাপাশি জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরো জানান, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১-এর বাস্তবায়ন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া সদ্যঃসমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ সময়ে যেসব প্রকল্পের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেই টাকা কিভাবে খরচ হয়েছে, সেটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সারা দেশের যেসব থানা জরাজীর্ণ আছে সেগুলো সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘যারা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারাই যদি নিরাপদ না থাকে তাহলে কিভাবে হবে?’ প্রধানমন্ত্রী চলতি অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে প্রকল্পের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, যেহেতু বৃষ্টির কারণে মাঠে প্রকল্পের কাজ করা যায় না সে জন্য কাগুজে প্রস্তুতি শেষ করতে হবে।

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কাজের মান নিশ্চিত করতে সবারই দায়িত্ব আছে। আগামী ৪ জুলাই সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের নিয়ে বৈঠক করা হবে, যাতে প্রকল্পের কাজ দ্রুত হয়। এ বিষয়গুলো লক্ষ রেখে কাজ করতে হবে। ২০৪১ সালের দিকে উন্নয়নশীল দেশে চলে আসব আমরা। এ জন্য আন্ত মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।’

একনেক সভায় ঢাকা অঞ্চলের কৃষি উন্নয়নসহ ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৪৫৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে পাঁচ হাজার ২১৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ১৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ১০৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে ঢাকা অঞ্চলের কৃষির উন্নয়ন প্রকল্প; বরগুনা ও মুন্সীগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প; রায়পুরা ১২০ মেগাওয়াট এসি পিক গ্রিড টাইড সোলার পাওয়ার প্লান্টের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প। এ ছাড়া বিসিক মুদ্রণ শিল্প নগরী (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র কিশোরগঞ্জ, জয়পুরহাট ও চট্টগ্রাম স্থাপন প্রকল্প। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। কুমিল্লা-সালদা ও কসবা (সৈয়দাবাদ) সড়কে (এন১১৪) জাতীয় মহাসড়ক মানে উন্নীত করা প্রকল্প; নগরাঞ্চলের ভবন সুরক্ষা প্রকল্প; পাশাপাশি বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে, জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়, দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের থানার প্রশাসনিক কাম ব্যারাক ভবন নির্মাণ প্রকল্পও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনাসচিব সত্যজিত কর্মকার, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. এমদাদউল্লাহ মিয়ান, কৃষি, পানি পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) আব্দুল বাকী এবং তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন উপস্থিত ছিলেন।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.