খেলাপি ঋণ কমাতে এক্সিট সুবিধা
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক :। ঋণখেলাপিদের ঋণ আদায় অথবা সমন্বয়ে এক্সিট নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে তা সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ঋণগ্রহীতার ব্যবসা, শিল্প বা প্রকল্প কখনো কখনো বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে বন্ধ হয়ে যায় অথবা লোকসানে পরিচালিত হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা হতে গ্রাহকের অন্তর্মুখী নগদ প্রবাহ বন্ধ কিংবা কিস্তি পরিশোধের জন্য নগদ প্রবাহ অপর্যাপ্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ঋণ আদায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। ফলশ্রুতিতে, উক্ত ঋণসমূূ হবিরূপমানে শ্রেণিকৃত হয়ে যায় যা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি পর্যায়ে পড়ে না। গ্রাহকের আর্থিক অবস্থার কারণে ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ হলে এরূপ ঋণ এক্সিটের আওতায় আদায়/সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ঋণ আদায়ের মাধ্যমে ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ অব্যাহত রাখা এবং ব্যাংকিং খাতে শ্রেণিকৃত ঋণ হ্রাসকল্পে নীতিমালা জারি করা হলো। এ নীতিমালা এক্সিট প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। এ নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকগুলো এক্সিট সংক্রান্ত নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করবে যা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ অনুমোদিত হতে হবে। ব্যাংক প্রণীত নীতিমালায় এ সার্কুলারে বর্ণিত শর্তাদির চেয়ে নমনীয় কোনো শর্ত যুক্ত করা যাবে না। ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ এরূপ বিরূপমানে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে অথবা নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে প্রকল্প-ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে অথবা ঋণগ্রহীতা প্রকল্প-ব্যবসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋণের এক্সিট সুবিধা দেওয়া যাবে। বিদ্যমান ঋণস্থিতির ন্যূনতম ১০ ভাগ ডাউন পেমেন্ট নগদে পরিশোধপূর্বক এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির আবেদন করবেন। ঋণগ্রহীতার আবেদন প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে ব্যাংক তা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ-নির্বাহী কমিটি এক্সিট সুবিধা অনুমোদিত হতে হবে। তবে, মূল ঋণ অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত এক্সিট সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর অর্পণ করা যাবে। এ সুবিধার আওতায় সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে ইতিপূর্বের সার্কুলারের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে, মওকুফযোগ্য সুদ পৃথক ব্লকড হিসাবে স্থানান্তর এবং সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ-সমন্বয়ের পর ব্লকড হিসাবে রক্ষিত সুদ চূড়ান্ত মওকুফ হিসেবে গণ্য হবে। এক্সিট সুবিধার আওতায় এক-একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধসূচি প্রণয়ন করতে হবে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাধারণভাবে দুই বছরের অধিক হবে না। তবে, পরিচালনা পর্ষদ যুক্তিসঙ্গত কারণ বিবেচনায় সর্বোচ্চ আরও এক বছর সময় বাড়াতে পারবে। এক্সিট সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান-কোম্পানির ঋণের দায় সম্পূর্ণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত এক্সিট পূর্ববর্তী ঋণের শ্রেণিমান বহাল থাকবে। খেলাপি ঋণগ্রহীতারা যথানিয়মে খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত হবেন এবং উক্ত ঋণ হিসাবের তথ্য পূর্ববর্তী শ্রেণিমানের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে রিপোর্ট করতে হবে। তবে, নিয়মিত ঋণে এক্সিট সুবিধা দেওয়া হলেও রিপোর্ট করতে হবে। এ সুবিধার আওতায় পুনঃতফসিল/পুনর্গঠন হিসেবে গণ্য হবে না। এক্সিট সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান-কোম্পানিকে উক্ত ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ-সমন্বয়ের পূর্ব পর্যন্ত কোনোরূপ নতুন ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে না। এক্সিট সুবিধার আওতায় অবলোপনকরা ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসরণীয় হবে। ঋণের বিপরীতে যথানিয়মে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে এবং ঋণ সমন্বয়ের পূর্বে ঋণের বিপরীতে গৃহীত জামানত অবমুক্ত করা যাবে না।