সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : প্রধানমন্ত্রী
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সঠিক, নির্ভরযোগ্য এবং সময়োপযোগী পরিসংখ্যান টেকসই উন্নয়ন-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। আমাদের সরকার সব সময় সঠিক পরিসংখ্যান সংগ্রহ ও প্রকাশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, টেকসই উন্নয়ন-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সঠিক, নির্ভরযোগ্য এবং সময়োপযোগী পরিসংখ্যান ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং আমাদের পরিবর্তিত বিশ্বকে বুঝতে সাহায্য করে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পরিবীক্ষণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে উপাত্ত প্রাপ্যতার বিষয়টি চিহ্নিত করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আজ ‘জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস’ উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে আরো বলেন, উল্লিখিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে বিবিএস টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এর ২৩১টি সূচকের মধ্যে ১০৫টি সূচকের উপাত্ত প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত প্রদানকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থার সাথে হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত সরবরাহের জন্য বিবিএস সমন্বয় সাধন করছে। তিনি পরিকল্পনাকারী, নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক যারা দেশের টেকসই-উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তাদের বিদ্যমান পরিসংখ্যানের সর্বোত্তম ব্যবহারের আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মুজিব শতবর্ষে প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস’ পালন করছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ বছর জাতীয় পরিসংখ্যান দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান, টেকসই উন্নয়নের উপাদান’ যা পরিসংখ্যানের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও ব্যবহারের গুরুত্বকে সামনে নিয়ে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নয়ন ও অগ্রগতি-পর্যবেক্ষণে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব উপলব্ধি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিসংখ্যান-কার্যক্রমে নিয়োজিত কয়েকটি পৃথক প্রতিষ্ঠানকে একীভূত ও সুসমন্বিত করে ১৯৭৪ সালে বিবিএস প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে বিবিএস-এর সার্বিক কর্মকাণ্ড সমন্বয়, তত্ত্বাবধান ও সাচিবিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য ১৯৭৫ সালে পরিসংখ্যান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় পরিসংখ্যানিক ব্যবস্থার গুরুত্ব উপলব্ধি করে আওয়ামী লীগ সরকার ৮ জুন ২০২০ তারিখে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে ২৭ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
শেখ হাসিনা বলেন, পরিসংখ্যান উন্নয়ন ও অগ্রগতির পরিমাপক। অর্থনীতিসহ সমাজের অন্যান্য সব কর্মকাণ্ডের গতি-প্রকৃতি নির্ণয় ও উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম। পরিসংখ্যান যত নির্ভুল হবে, নীতিনির্ধারকদের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ তত সহজতর হবে। ‘আমাদের সরকার সকল ক্ষেত্রে তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয়, সময়োপযোগী ও মানসম্পন্ন পরিসংখ্যান সংগ্রহ ও প্রকাশ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তথ্য-উপাত্ত প্রক্রিয়া ও পরিজ্ঞাতকরণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে চাহিদা মাফিক উপাত্ত-সরবরাহ এবং পরিসংখ্যানবিষয়ক কার্যক্রম সময়োপযোগী ও ত্বরান্বিতকরণে আমরা সর্বদা সচেষ্ট’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি মনে করেন, জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস পালন দেশবাসীকে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করার একটি অনন্য সুযোগ। করোনাভাইরাসের মহামারী থেকে জীবন বাঁচাতে এবং এ থেকে উত্তরণের প্রয়াস পরিসংখ্যানের গুরুত্বকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই লগ্নে বৈশ্বিক করোনামহামারী পরিস্থিতিতেও সময়োপযোগী সঠিক পরিসংখ্যানের সাহায্যে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস ২০২১’ উপলক্ষে গ্রহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। আজ সংবাদ সম্মেলন
বাসস জানায়, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য জাতিসঙ্ঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী বিকেল ৪টায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।