কমনওয়েলথের অনুপ্রেরণাদায়ী নারী শেখ হাসিনা
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : কমনওয়েলথ মহাসচিব পেট্রেসিয়া স্কটল্যান্ড কিউসি ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস সামনে রেখে করোনাকালে অসাধারণ নারী নেতৃত্ব ও গভীর অনুপ্রেরণাদায়ী হিসেবে তিনজন সরকারপ্রধানের নাম ঘোষণা করেন। কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সরকারপ্রধানদের মধ্যে সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ী তিন নারী নেতার একজন নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কমনওয়েলথ মহাসচিব পেট্রেসিয়া স্কটল্যান্ড কিউসি নিজের ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস সামনে রেখে করোনাকালে অসাধারণ নারী নেতৃত্ব ও গভীর অনুপ্রেরণাদায়ী হিসেবে তিনজন সরকারপ্রধানের নাম ঘোষণা করেন। এতে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা ছাড়াও অপর দুজন হলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন ও বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোটলে।
তাদের ব্যাপারে পেট্রেসিয়া বলেন, ‘আমি অনেক নারী ও মেয়ের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়েছি। এরপরও আমাদের কমনওয়েলথের তিনজন বিস্ময়কর নেতার নাম বলতে চাই। তারা হলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন, বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোটলে ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তারা করোনার সময়টায় নিজ নিজ ভূমিকায় অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছেন।’
কমনওয়েলথ প্রধান আরও বলেন, ‘অনেক নারীর পাশাপাশি এই তিন নেতা আমাকে এমন একটি বিশ্বের আশা দিয়েছেন যা, নারী-পুরুষদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি করবে এবং আমাদের সর্বজনীন মঙ্গলের জন্য কাজ করবে।’ ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত বছরের মার্চের শুরুতে। করোনা মহামারি সারা বিশ্বের অধিকাংশ দেশের জন্য নানা সংকট বয়ে আনলেও তেমন কোনো সমস্যা হয়নি বাংলাদেশের জন্য।
শনাক্তের ১২ তম মাসে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৮৪১ জনের। শনাক্ত সাড়ে পাঁচ লাখ ছুঁইছুঁই। দেশের মোট জনসংখ্যার অনুপাতে মৃত্যু ও শনাক্তের এই সংখ্যা অনেক কম। করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগগুলো ছিল বেশ কার্যকর। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কার্যকর পদক্ষেপ ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতিটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার টানা দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশের নিচে হলে করোনা নিয়ন্ত্রণে বলা যায়। আর বাংলাদেশে এক নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত ৫ শতাংশের নিচে এক মাসের বেশি সময় ধরে। অবশ্য নীতিমালায় এ-ও বলা আছে যে, দিনে পরীক্ষা হতে হবে ২০ হাজারের বেশি। কিন্তু দেশে কয়েক মাস ধরে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ২০ হাজারে ওঠে না বললেই চলে।
কম নমুনা পরীক্ষার পেছনে অবশ্য সরকারের কোনো দায় নেই। শুরুর দিকে কিটসহ অবকাঠামোগত সমস্যায় পরীক্ষা করতে বাধা পেলেও এখন আর সে পরিস্থিতি নেই। দেশের ২১৯টি ল্যাবে এখন পরীক্ষা করা যায়, সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে অ্যান্টিজেন টেস্টও। জনগণই পরীক্ষা করতে কম যাচ্ছে।
এবারের শীতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় ছিল সরকার। ইউরোপে শীতে দ্বিতীয় ঢেউ প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে বেশি প্রাণঘাতী হওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর দেয় সরকার। বিশেষ করে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। মাস্ক ছাড়া সেবা মিলবে না, এমন নীতি ঘোষণা করার পরও কাজ না হওয়ায় নামানো হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অসংখ্য মানুষকে করা হয় জরিমানা।
নানা উদ্যোগের কারণে দেখা গেছে, শীত বাড়ার পর সংক্রমণ না বেড়ে উলটো কমেছে। বাংলাদেশের করোনা নিয়ন্ত্রণের কৌশলের প্রশংসা এসেছে খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকেও। করোনার সময়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচলেও নানা উদ্যোগ নেয় সরকার। ব্যবসায়ীদের মোট ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনার ঘোষণা দেয়া হয়। এ ছাড়া, এই সময়ে আসা রেমিট্যান্সও দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।