১৭ গ্রামের চেহারা পাল্টে যাচ্ছে

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বিস্তীর্ণ জলাশয় থাকায় কৃষকরা তাঁদের জমিতে ফসল ফলাতে পারতেন না। তাই এলাকায় বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের হার বাড়ছিল। সেই আঁধার কেটে এখন দেখা দিয়েছে আলোর ঝলকানি। সর্বত্র চলছে কর্মযজ্ঞ, পুরোদমে কাজ করছেন দেশি-বিদেশি শ্রমিকরা।
এই চিত্র নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (বিএসইজেড) প্রকল্প এলাকার আশপাশের ১৭টি গ্রামের।

স্থানীয় লোকজন জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে আড়াইহাজারের সাতগ্রাম ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রাম ছিল অনগ্রসর। পাঁচরূখী, ছনপাড়া, সিংহদী, পাঁচগাঁও, পাঁচবাড়িয়া প্রভৃতি এলাকা ছিল নিচু। বছরজুড়ে স্থানীয় কৃষকদের জমিতে পানি জমে থাকত, ফসল হতো না। বিএসইজেড প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে এই এলাকার চিত্র পাল্টাতে শুরু করে। সরকার এখানকার প্রায় এক হাজার ৮০০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে। এ বাবদ কৃষকদের পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার পর প্রকল্প এলাকার আশপাশে ১৭ গ্রামের চেহারাই পাল্টে গেছে। প্রকল্প এলাকায় ঠিকাদারির কাজ করছেন অনেকেই, বেকার যুবকরা পেয়েছেন শ্রমিকের কাজ। মানুষের বাড়িতে দুই বছর ধরে উঠছে পাকা ভবন।

বিএসইজেডের প্রকল্প পরিচালক সালেহ আহমদ জানান, প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৮৫ শতাংশ। বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তর করার জন্য ১৬০ একর জায়গা প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) মালিকানা রয়েছে ২৪ শতাংশ, বাকি অংশ জাপানি প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো ও জাইকার।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন জানান, এই প্রকল্পে ১৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে। যে ৪০টি কম্পানি এরই মধ্যে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে, তার মধ্যে ৩০টিই জাপানের। এই প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ভূমি অধিগ্রহণ করেছে। ভূমির অবকাঠামো উন্নয়নে আড়াইহাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে জাইকা। এখানে পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনায় ওষুধ, অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক সামগ্রী তৈরি করা হবে।

এরই মধ্যে তুরস্কভিত্তিক কম্পানি সিঙ্গার, জার্মানির রুডলফ এই প্রকল্পে বিনিয়োগ শুরু করেছে বলে জানান কর্মকর্তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিত জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। গত বুধবার সরেজমিনে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের চারদিকে চলছে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ।

পাঁচরূখী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল খালেক জানান, এ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর বদলে গেছে এখানকার মানুষের জীবনধারা। গ্রামীণ জনপদ এখন প্রায় শহরে পরিণত হয়েছে। শ্রমিকের কাজসহ নানা ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য করছে স্থানীয়রা। আশপাশের হাটবাজারে বেচাকেনা বেড়েছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘এই সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। এখন আমার এলাকার মানুষের আয় বেড়েছে। বেকারত্ব নেই বললেই চলে। এখানে দেশি-বিদেশি শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ’

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.