প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে সুজানগরে আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
পাবনা প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন পালনে পাবনার সুজানগরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের আয়োজনে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে কেউ আহত হয়নি। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন উপলক্ষে সুজানগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব এবং সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন অনুসারীরা পৃথক আয়োজন করে। উপজেলা পরিষদে প্রথমে কেক কাটা শেষ করে শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থক নেতাকর্মীরা চলে যান।
পরে কেক কাটাসহ অন্যান্য কর্মসূচী পালন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির আব্দুল ওহাব ও তার সমর্থকরা। এ অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ কমিটির তথ্য ও গবেষণা সদস্য কামরুজ্জামান উজ্জল উপস্থিত ছিলেন । অনুষ্ঠান শেষ করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির নেতা কামরুজ্জামান উজ্জল আসন্ন শারদীয় দূর্গপূজা উপলক্ষে পাবনা -২ নির্বাচনী এলাকার মন্দিরগুলোতে আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য ব্যক্তিগত কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন।
নিজ কার্যালয়ে যাবার পথে লাঠিসোঁটা নিয়ে সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীনের অনুসারী সুজানগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা কয়েকজনের টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে উস্কানীমূলক শ্লোগান দেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কামরুজ্জামান উজ্জলের অনুসারীদের উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলার চেষ্টা করে। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
এ বিষয়ে কামরুজ্জামান উজ্জল কালের কন্ঠকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন অনুষ্ঠান পালন শেষে নিজ ব্যক্তিগত কার্যালয়ে পরিকল্পিতভাবে আমাদের উপর হামলার চেষ্টা করা হয়। এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিকভাবে আমার ক্লিন ইমেজ নষ্ট করার জন্য এই অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন এলাকায় ছিলেন না। তবে, তার অনুসারীরা হামলার চেষ্টা করেছে বলে মনে করছি।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান কালের কন্ঠকে বলেন, আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের লোকজন হট্টগোল করছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে কেউ থানায় অভিযাগ দেয়নি।
সুজানগর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল ওহাব কালের কন্ঠকে বলেন, কামরুজ্জামান উজ্জলের কর্মকাণ্ডে সুজানগরের কিছু মানুষ ঈর্ষান্বিত। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনেও তারা এই বিশৃঙ্খলা ঘটিয়েছে। একটা ইস্যু তৈরী করে কামরুজ্জামান উজ্জলকে সবার কাছে হেয় করার চেষ্টা করছে একটি পক্ষ।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ বলেন, ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না। আমার নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ সঠিক নয়।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, শুনেছি কামরুজ্জামান উজ্জল বেশ কিছু মানুষকে চাকুরি দেয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন। একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ভাড়া দেননি। এ কারনে পাওনাদাররা পাওনা পরিশোধের দাবীতে তাকে ঘিরে রাখে। বিষয়টি উজ্জল সাহেবের পার্সোনাল কারনে আমি এখানে কোন হস্তক্ষেপ করিনি। আর আমার কোনো অনুসারী কেউ এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়।