পাবনায় এমপি ফিরোজ কবিরের উদ্যোগে ‘ডিজিটাল গরুর হাট
করোনা সংক্রামণ রোধে এবং জনসচেতনা বৃদ্ধির লক্ষে নিজ উদ্যোগে পাবনার সুজানগরে অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটাল গরুর হাট করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির।
পাবনা প্রতিনিধি : করোনা সংক্রামণ রোধে এবং জনসচেতনা বৃদ্ধির লক্ষে নিজ উদ্যোগে পাবনার সুজানগরে অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটাল গরুর হাট করেছেন পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির। মরহুম আহমেদ তফিজ উদ্দিন আইটি সেন্টারের মাধ্যমে ও আহমেদ ফিরোজ কবির ওয়েব টিমের সহযোগিতায় ডিজিটাল এই গরুর হাট কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
অর্থ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়া) আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন, দুটি লক্ষ নিয়ে অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটাল হাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বাস্তবায়নে গ্রামীণ জনগণের মধ্যে ইন্টারনেট প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেয়া এবং মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও সংক্রমণ রোধে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন, করোনাক্লান্তিকালে আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের সুরক্ষার কারণেই ডিজিটাল গরুর হাট চালু করা হয়েছে। আশা করি এই উদ্যোগে আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ আসন্ন কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে কোরবানী পশু ক্রয়ে উপকৃত হবেন।
আহমেদ তফিজ উদ্দিন আইসিটি সেন্টারের পরিচালক আরিফুল ইসলাম মিথুন বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে সাধারণ মানুষ এমনিতেই অসহায় হয়ে পড়েছেন। এরই মধ্যে কোরবানী ঈদকে ঘিরে যে সকল খামারি ও মওসুমি গরু খামারীরা গরু পালন করেছেন, কিন্তু করোনার কারণে বাইরে থেকে কোন ব্যাপারী না আসায় তারা মহাবিপাকে পড়েছেন। এমপি সাহেবের নির্দেশনায় এ সকল অসহায় মানুষের কষ্ট ও হতাশা লাঘবে এই ডিজিটাল গরুর হাট করা হয়েছে। অন্তত গরু নিয়ে চিন্তিত মানুষগুলো যেন স্বস্তি পান এমনটি ভেবে।
ডিজিটাল হাটের উদ্যোক্তা সাদি মোহাম্মদ রশ্মি, টেকনিক্যাল টিমের সদস্য আশেক মাহমুদ সোহান, উৎস হোসেন, মনিরুজ্জামান মন্টু জানান, করোনার কারণে হাটবাজারগুলোতে মানুষের উপচেপড়া ভীড় রোধ করতেই অনলাইনের মাধ্যমে ডিজিটাল এই হাট চালু করা হয়েছে। ক্রেতা বিক্রেতারা খুব সহজেই আমাদের এই ডিজিটার হাট ভিজিট করে তাদের ইচ্ছে মতো কোরবানীর গরু বা পশু ক্রয় করতে পারবেন। তারা বলেন, অনেক খামারী ও মওসুমি গরুপালনকারীরা তাদের কোরবানী ঘিরে গরু নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন। এমন নানা স্থান থেকে আমাদের কাছে তথ্য এসেছে। আমরা সে সকল স্থানে গিয়ে গরুর ছবি, রং, ওজন, দাতসহ বিস্তর বর্ণনা নিয়ে এসে আমাদের ডিজিটাল হাটে আপলোড করেছি। অন্তত এই সকল খামারীদের দুশ্চিন্তা কিছুটা যাতে লাঘব হয়।
স্থানীয় খামারী ও কলেজ শিক্ষক ইমদাদুল বলেন, প্রতিবারই আমার খামারে ৩০ টি করে গরু পালন করা হয় কোরবানী ঈদ ঘিরে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার খামারে কোন ব্যাপারী আসেননি। আমি খুব চিন্তার মধ্যেই ছিলাম। হঠাৎ জানতে পারি স্থানীয় সাংসদ ফিরোজ কবিরের উদ্যোগে অনলাইনে ডিজিটাল হাট করা হয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে আমি আমার খামারের বেশ কিছু কোরবানীর গরুর ছবি ও ভিডিও দেই। ইতোমধ্যে আমি ব্যাপক সাড়া পেয়েছি।
সাতবাড়িয়া পদ্মাপাড়ের আশু শিকদার বলেন, প্রতিবছর দুটি করে গরু পালি। কোরবানী ঈদ আসলেই আদরের সাথে গরু গুলো বিক্রি হয়ে যায় বাড়ি থেকেই। কিন্তু এবারে খুব বেশি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুটি গরু দাম ৭ লক্ষ টাকা। দুটিই ১৮/২০ মন করে মাংশ হবে। অথচ এখন পর্যন্ত কোন ব্যাপারী বা গরু ত্রেতার দেখা মেলেনি। তিনি বলেন, শুনেছি এমপি সাহেব ডিজিটাল গরুর হাট দিয়েছেন। সেখানে গিয়ে গরুর বিস্তারিত দিয়ে আসবো। দেখি গরু দুটি বিক্রি করা যায় কিনা।
আয়োজকরা বলছেন, ক্রেতা বিক্রেতা সরাসরি যোগাযোগ হবে। অনলাইনে সকল তথ্য থাকবে। তবে কোন ক্রেতা যদি জরুরী সেবা চান, তার কাছে তার পছন্দের গরু পৌছানোর জন্য। তাহলে শর্তসাপেক্ষে সেটাও বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
সুজানগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জামাল উদ্দিন বলেন, এ উপজেলায় গরুর খামার আছে ১৬৭৩ টি ও ছাগলের খামার আছে ৭৮ টি। কোরবানী যোগ্য গরু আছে ১০ হাজার ১১৫ টি, মহিষ আছে ৩৯০ টি, ছাগল আছে ১১ হাজার ৫৮০ টি ও ভেড়া আছে ১৬০২ টি। এবারে হাট বসবে ৪ টি। এছাড়া মানিকহাটে অস্থায়ীভাবে একটি হাট বসানো হয়েছে ।